এশিয়া কাপের দল ঘোষণা সব সময়েই ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বাড়তি আগ্রহের জায়গা। তবে এবারের ঘোষণায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) দিয়েছে এক রীতিমতো অপ্রত্যাশিত ধাক্কা। দলে রাখা হয়নি তারকা ব্যাটসম্যান বাবর আজম ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ানকে। বোলিং আক্রমণে ভরসা রাখা হয়েছে অভিজ্ঞ তিন পেসার— শাহিন শাহ আফ্রিদি, হাসান আলি এবং হারিস রউফের ওপর। 

৯ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে পর্দা উঠবে এশিয়া কাপ ২০২৫-এর। সেই টুর্নামেন্ট ঘিরে যখন চারপাশে উত্তেজনার আবহ, তখনই এমন সিদ্ধান্তে সবাই অবাক। প্রতীক্ষিত ভারত-পাকিস্তান মহারণ মাঠে গড়াবে ১৪ সেপ্টেম্বর, যা নিঃসন্দেহে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচ হতে যাচ্ছে।

নির্বাচকরা মূলত সাম্প্রতিক সময়ে খেলা খেলোয়াড়দের ওপরই আস্থা রেখেছেন। ব্যাটিংয়ের হাল ধরবেন দলনেতা সালমান আলি আগা। ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে ফখর জামান ও সাইম আইয়ুবকে।

আরো পড়ুন:

ব্যাটে-বলে অনুজ্জ্বল সাকিব, তবুও অ্যান্টিগার জয়

এশিয়া কাপে বাদ পড়তে পারেন বাবর আজম ও রিজওয়ান

স্পিন আক্রমণে দায়িত্ব থাকবে আবরার আহমেদ ও সুফিয়ান মুকিমের কাঁধে। পেস আক্রমণে আছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র। উইকেটকিপার হিসেবে সুযোগ পাচ্ছেন তরুণ মোহাম্মদ হারিস। আর অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফ ব্যাটে-বলে দলকে দিবেন বাড়তি ভারসাম্য।

পাকিস্তানের এশিয়া কাপ দল:
সালমান আলি আগা (অধিনায়ক), আবরার আহমেদ, ফাহিম আশরাফ, ফখর জামান, হারিস রউফ, হাসান আলি, হাসান নবাব, হোসাইন তালাত, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ হারিস (উইকেটকিপার), মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, সাহেবজাদা ফারহান, সাইম আইয়ুব, সালমান মির্জা, শাহিন শাহ আফ্রিদি ও সুফিয়ান মুকিম।

এশিয়া কাপ-২০২৩ এ কেমন ছিল পাকিস্তানের পারফরম্যান্স?
দুই বছর আগের আসর, অর্থাৎ এশিয়া কাপ ২০২৩ শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের জন্য দারুণ প্রত্যাশা নিয়ে। টুর্নামেন্টের আগেই তারা উঠে এসেছিল বিশ্বের নাম্বার ওয়ান ওয়ানডে দল হিসেবে।

শুরুও হয়েছিল দুর্দান্ত। নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই ২৩৮ রানের বড় জয় পায় বাবর-রিজওয়ানরা। কিন্তু ‘সুপার ফোর’-এ গিয়ে ভেঙে পড়ে তাদের স্বপ্ন। ভারতের বিপক্ষে হাইভোল্টেজ ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যায়। তাতে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে সুপার ফোরে যায়।

সুপার ফোরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ উইকেটের দাপুটে জয় পায়। এরপর ভারতের বিপক্ষে হাইভোল্টেজ ম্যাচ হয়ে ওঠে একপেশে। যেখানে পাকিস্তানকে গুনতে হয় ২২৮ রানের বড় হার। এরপর ইনজুরিতে ছিটকে পড়েন হারিস রউফ ও নাসিম শাহ। ফলে বোলিং আক্রমণ আরও দুর্বল হয়ে পড়ে।

এরপর শ্রীলঙ্কার কাছে বৃষ্টি আইনে ২ উইকেটে হেরে আসর থেকে বিদায় নেয় পাকিস্তান।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ র জওয় ন উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

৪১ বছর ধরে হেঁটে হেঁটে পত্রিকা বিলি করেন গাইবান্ধার রহিম

গাইবান্ধার পত্রিকা বিক্রেতা আবদুর রহিম। বাড়ি পলাশবাড়ী পৌরসভার নুনিয়াগাড়ি এলাকায়। বয়স ৭১ বছর। এই বয়সেও তিনি ঘুমভাঙা চোখে একনজর পত্রিকার শিরোনাম দেখে নেন। পত্রিকা গুছিয়ে বগলে চেপে ছুটে চলেন পাঠকের কাছে। ‘ভাই, আজকে গরম খবর আছে’ বলেই পাঠকের হাতে এগিয়ে দেন পত্রিকা।

এক পাঠক থেকে আরেক পাঠকের কাছে যান আবদুর রহিম। পত্রিকা বিলি করেন সকাল ৬টা থেকে টানা ৭ ঘণ্টা। বিকেল ৫টা থেকে ৪ ঘণ্টা বিলি করা পত্রিকার টাকা সংগ্রহ করেন। ১১ ঘণ্টার বেশির ভাগ সময় হেঁটে পত্রিকা বিলি ও টাকা সংগ্রহ করেন। দূরের পাঠকের কাছে যান বাইসাইকেলে। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার হেঁটে বিলি করেন পত্রিকা। এভাবেই দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে গাইবান্ধায় পত্রিকা বিলির কাজ করছেন তিনি।

আবদুর রহিম বলেন, ‘সকাল ৬টা থেকে পত্রিকা বিলির কাজ শুরু করি। বেলা ১টার দিকে শেষ হয়। উপজেলা সদরে হেঁটে বিলি করি। তবে সদর থেকে ৬-৭ কিলোমিটার দূরে জুনদহ, কালীতলা, ঢোলভাঙ্গা, হোসেনপুর এলাকায় সাইকেলে যাই। এসব জায়গায় সাইকেল রেখে হেঁটে পত্রিকা বিলি করি। দুপুরে বাড়িতে বিশ্রাম নিই। এরপর পত্রিকা বিক্রির টাকা তোলা শুরু করি। টাকা তুলতে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময় লাগে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার হাঁটাহাঁটি হয়ে যায়। এ রকম ব্যস্ততায় কীভাবে ৪১ বছর কেটে গেল, টেরই পেলাম না! তবে পত্রিকা বিলি করে আনন্দ পাই। অনেক পাঠক আমাকে ভালোবাসেন, খোঁজখবর নেন।’

দীর্ঘ সময় পত্রিকা বিলি করতে সমস্যা হয় কি না, তা জানতে চাইলে আবদুর রহিম বলেন, ‘আমার কোনো অসুখবিসুখ নেই। যত দিন শরীর ভালো থাকবে, তত দিন এই কাজ চালিয়ে যাব।’

ব্যবসার শুরু

রহিমের পৈতৃক বাড়ি রংপুর শহরের আরাজি গুলাল বুদাই এলাকায়। সেখানে তাঁর বাবার ৩ শতাংশ জমিতে বসতভিটা ছিল। এ ছাড়া কোনো সম্পদ ছিল না। বাবা আবেদ আলী অনেক আগেই মারা গেছেন। তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। লেখাপড়া করেছেন তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। ছোটবেলা থেকেই কৃষিকাজ করতেন। ১৯৭৫ সালে বিয়ে করেন একই এলাকায়। তাঁর ছয় মেয়ে ও এক ছেলে। দারিদ্র্যের কারণে সংসার চালানো একসময় কঠিন হয়ে পড়ে।

রহিমের খালাতো ভাই রংপুর শহরে পত্রিকা বিলি করতেন। তাঁর পরামর্শে ১৯৮৪ সাল থেকে রংপুরে স্থানীয় পত্রিকা দিয়ে আবদুর রহিমের এই ব্যবসার যাত্রা শুরু। এরপর তিনি বাসে ফেরি করে বিক্রি করতে থাকেন পত্রিকা। প্রতিদিন রংপুর থেকে বাসে উঠে পলাশবাড়ী পর্যন্ত আসেন। এভাবে তিন বছর কেটে যায়। এরপর পলাশবাড়ীর স্থানীয় এক সাংবাদিকের বাড়িতে থেকে পত্রিকা বিক্রি শুরু করেন। ছয় মাস থাকেন সেখানে। এরপর জমানো ও ঋণের টাকায় নুনিয়াগাড়ি এলাকায় সোয়া ৮ শতাংশ জমি কিনে টিনশেড ঘর বানান। বাড়ি থেকে ব্যবসা করতে থাকেন। পলাশবাড়ী চারমাথা এলাকায় বসে ঢাকা, রংপুর ও বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা সংগ্রহ করে পলাশবাড়ী উপজেলা সদরে বিক্রি করতে থাকেন।

হকার থেকে এজেন্ট

কয়েক বছর পর আবদুর রহিম নিজের নামে বেশ কিছু পত্রিকার এজেন্সি নেন। পত্রিকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় একা সামলাতে পারছিলেন না। তাই চারজন লোক নিয়োগ করেন। তাঁরা এখনো রহিমের কাছে কমিশনে পত্রিকা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ব্যবসা শুরুর সময় প্রতিদিন ২০০ থেকে ২৫০ কপি পত্রিকা বিলি করতেন। মাসিক আয় ছিল ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। কয়েক বছর পর পাঠকের চাহিদা বেড়ে যায়। সে সময় মাসিক আয় হতো ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। বর্তমানে ছাপা পত্রিকার পাঠক কমে গেছে। এখন প্রতিদিন ১৫০ থেকে ১৬০ কপি পত্রিকা বিলি করছেন। বর্তমানে তাঁর মাসিক আয় গড়ে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা।

আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পত্রিকার ব্যবসা করে রংপুর থেকে এসে পলাশবাড়ীতে বাড়ি করতে পেরেছি, মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। সততার সঙ্গে চলছি। এতেই আমি সন্তুষ্ট।’

পলাশবাড়ী মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবু সুফিয়ান সরকার বলেন, ‘আবদুর রহিমকে বহু বছর ধরেই পত্রিকা বিক্রি করতে দেখছি। তাঁকে দেখে মনে হয় না ৭১ বছর বয়স হয়েছে। তাঁর মধ্যে ক্লান্তি দেখা যায় না। দিন-রাত পরিশ্রম করেন। কখনো তাঁকে মিথ্যা বলতে শুনিনি। এলাকার মানুষ তাঁকে ভালোবাসেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাস ধুয়েমুছে চালকের সহকারী ওয়াশরুমে গিয়েছিলেন, ফিরে দেখেন আগুন জ্বলছে
  • ‘বাসটির সঙ্গে একটি ট্রাকের ধাক্কা লাগে, এরপর আর কিছু মনে নেই’
  • রেলের ৭ লাখ টাকার যন্ত্র ২৭ হাজারে বানালেন তিনি
  • রাতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে সাভার-ধামরাইয়ে দুই বাসে আগুন
  • জনস্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণাই তাঁর নেশা 
  • ইডেনে স্পিন বিষ, ১৫ উইকেটের দিনে উড়ছে ভারত
  • বিচারকের ছেলে হত্যা মামলার আসামি লিমন পাঁচ দিনের রিমান্ডে
  • বিচারকের ছেলে হত্যা: লিমন ৫ দিনের রিমান্ডে
  • ‘তোকে গুলি করে মারব না, ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারব’
  • ৪১ বছর ধরে হেঁটে হেঁটে পত্রিকা বিলি করেন গাইবান্ধার রহিম