না’গঞ্জ আদালতে শেখ হাসিনা, সাবেক ৩ সিইসিসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
Published: 8th, May 2025 GMT
২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে জালিয়াতিপূর্ণ, ষড়যন্ত্রমূলক এবং ভোটার বিহীন দাবি করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক ৩ প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আবেদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আবদুল বারী ভূঁইয়া নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হায়দার আলীর আদালতে মামলাটির আবেদন করেন।
মামলায় বাদি পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ূন কবীর। তাকে সহায়তা করেন আরও কয়েকজন আইনজীবী।
সেই সাথে আদালত এই মর্মে মামলা হয়েছে কিনা সংশ্লিষ্ট থানাকে তলব করে আগামী ৩ জুন শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সাবেক তথ্য উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও কামরুল ইসলাম, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রাকিব উদ্দিন আহমেদ, কেএম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নী জেনারেল আশিক উল হককে আসামী করা হয়েছে। মামলায় সাক্ষী দেখানো হয়েছে ৯জনকে।
মামলায় বাদি উল্লেখ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে জালিয়াতি করে বিনা ভোটের মাধ্যমে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করে। অনিয়ম ও কারচুপির ঐসব নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার ছিল না এবং বাংলাদেশকে অন্য রাষ্ট্রের কাছে নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করতে ঐসব নির্বাচনের আয়োজন করে একটি পক্ষকে একতরফা ভাবে জয়ী করার ব্যবস্থা করা হয়। যা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল।
বাদী অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূইয়া বলেন, অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর আজ্ঞাবহ হয়ে ষড়যন্ত্র করে ভোটারবিহীন ড্যামি নির্বাচন করেছেন আসামিরা। তাই আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছি। আদালত এই মর্মে মামলা হয়েছে কিনা এ বিষয়টি জানার সংশ্লিষ্ট থানাকে তলব করেছেন। সেই সাথে আগামী ৩ জুন শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ
এছাড়াও পড়ুন:
মামুন হত্যা মামলায় চার আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে, অস্ত্র মামলায় ইউসুফের দায় স্বীকার
রাজধানীর পুরান ঢাকায় আদালত এলাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাঈদ মামুন হত্যার ঘটনায় অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে আজ রোববার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে এ মামলায় তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামান এ আদেশ দেন।
অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. ফারুক হোসেন ফয়সাল (৩৮), রবিন আহম্মেদ ওরফে পিয়াস (২৫), মো. রুবেল (৩৪), শামীম আহম্মেদ (২২) ও মো. ইউসুফ জীবন (৪২)। তাঁদের মধ্যে ইউসুফ আজ দায় স্বীকার করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
এ হত্যাকাণ্ডের পর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারে আসামি ইউসুফ জীবনের বাসার ওয়ার্ডরোবের নিচ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের গুলির উদ্ধার করা হয়। ১২ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেন পুলিশ। পরে সেদিনই এই মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ফটকের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে ১০ নভেম্বর সকালে গুলি করে হত্যা করা হয় তারিক সাইফ মামুনকে। তিনি মামলার হাজিরা দিয়ে বের হচ্ছিলেন তখন। নিকটস্থ সিসিটিভি ক্যামেরার এক ফুটেজে দেখা যায়, মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তখন দুই ব্যক্তি খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করছেন।
এ ঘটনায় আজ গতকাল শনিবার ১৫ নভেম্বর সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার। তবে মামলায় তিনি কারও নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক আবু বকর জানান, আজ মামুন হত্যা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ হোসেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আগের অস্ত্র মামলার চার দিনের রিমান্ডে সব তথ্য বেরিয়েছে। পুলিশও মিডিয়াকে সব জানিয়েছে। হত্যার ঘটনা কেন হয়েছে? কে কী করেছে। সে ক্ষেত্রে আর রিমান্ডে যৌক্তিকতা নেই। বিচারক বলেন, ওটা তো অন্য মামলায়। আসামিপক্ষের আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের সঙ্গে আর কে কে আছেন, সেটা জানা দরকার। শুধু ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নয়, এখানে আরও বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, মিডিয়াতে এসেছে, রনি জড়িত। এ ছাড়া হত্যা মামলায় আসামি সব অজ্ঞাতনামা। বিচারক তখন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এ মামলায় এজাহারনামীয় আসামি কে কে, তা জানতে চান। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি। বাদী চেয়েছেন, তদন্তের মাধ্যমে আসামি বের হোক। সে জন্য অজ্ঞাতনামা দিয়েছেন। বাদী ন্যায়বিচার চান।
তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, এ আসামিদের প্রতি বাদীর (হত্যা মামলা) কোনো সন্দেহ নেই। তাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন পাঁচ দিন আগে। তিনি মামলা করেছেন গতকাল শনিবার। কাউকে তিনি সন্দেহ করেননি। তখন তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এঁরাই গুলি করছেন। মামলাটি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত হলে সব বেরিয়ে আসবে। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।