দোহারে জমিজমার বিরোধে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০
Published: 10th, May 2025 GMT
ঢাকার দোহারে জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার বিকেলে উপজেলার জয়পাড়া বড় মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জয়পাড়া বড় মাঠ এলাকার আলামিন খান এবং মহিউদ্দিন ও নুরা খানের মধ্যে একটি জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। আজ দোহার পৌর বিএনপির সভাপতি এস এম কুদ্দুস, বিএনপি নেতা আতিকুর রহমানসহ স্থানীয় কয়েকজন বিষয়টি মীমাংসার জন্য যায়। কিন্তু আলামিন খানের পক্ষের লোকজন বিচার মেনে নিলে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে বিএনপির নেতারা সেখান থেকে চলে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে আলামিন খান বলেন, ‘আমাদের ওপর দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে মহিউদ্দিন ও নুরুর লোকজন। আমাদের ঘরবাড়িও কুপিয়েছে।’
তবে মহিউদ্দিন খান বলেন, ‘আমি আলামিনদের বাড়িতে ২ শতাংশ জমি পাব। কিন্তু তারা তা দিতে চাইছে না। আজ বিচারও মানেনি। বিচারকেরা চলে গেলে তাঁরা আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমিসহ কয়েকজন আহত হয়েছি।’
দোহার পৌর বিএনপির সভাপতি এস এম কুদ্দুস জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিন পক্ষের মধ্যে একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। আজ তাঁরা বিষয়টি সমাধানের জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা আমাদের দেওয়া সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। এরপর তাঁরা চলে আসেন। পরে শুনেছেন, তাঁরা নিজেরা মারামারি করেছেন।
দোহার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন সরকার বলেন, এ ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়েছেন। উভয় পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন আহত আল ম ন আম দ র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
নদীভাঙন রোধে পাটুরিয়ায় ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট এবং আশপাশে এলাকা নদীভাঙন থেকে রক্ষা করার দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে তারা পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় এ সব কর্মসূচি পালন করেন।
আন্দোলনকারী আজিবার রহমান জানান, পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পাটুরিয়া ফেরি, লঞ্চঘাট, ঘাটসংলগ্ন ধুতরাবাড়ী ও তেগুরি গ্রামে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। গ্রাম দুটিতে কয়েকটি বসতবাড়ি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে চলে গেছে। এরই মধ্যে লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীভাঙনে ফেরিঘাটও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
আরো পড়ুন:
নেত্রকোনায় বিকাশকর্মী হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি
রংপুরে শ্বশুর-জামাই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন
তিনি আরো জানান, উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের ভাঙনের বিষয়টি অবহিত করা হয়। তবে ভাঙনরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এর প্রেক্ষিতে আজ রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে পাটুরিয়া ঘাটসংলগ্ন শহীদ রফিক চত্বরে উথলী-পাটুরিয়া সড়কে তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাট থেকে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বেলা ১২টার দিকে মিছিলটি পাটুরিয়া ঘাটের অদূরে শহীদ রফিক চত্বর এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে উথলী-পাটুরিয়া সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রী ও পরিবহন-শ্রমিকেরা ভোগান্তিতে পড়ে। খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীকে সড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করে। তবে আন্দোলনকারীরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে থাকে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বেলা ৩টার দিকে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধ করলে তারা সড়ক থেকে সরে যায়।
অবরোধ চলাকালে নদীভাঙন প্রতিকারের দাবিতে ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী বক্তব্য দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন খান (পান্নু), ব্যবসায়ী নূর ইসলাম, স্থানীয় আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তাপস খান, স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন, উত্তম পাল, আরিফ হোসেন ও রানা শিকদার।
বক্তারা বলেন, ‘‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ পাটুরিয়া ফেরিঘাট নদীভাঙনে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘাট এলাকা ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামে অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জীবনের শেষ আশ্রয়স্থল হারিয়ে অনেকে পথে বসেছে। অথচ ভাঙনরোধে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের জানালেও তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’’
নদীভাঙন প্রতিরোধে বক্তারা দাসকান্দি থেকে নয়াকান্দি এলাকা পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, ঘাট সংলগ্ন দুই কিলোমিটার এলাকা বিআইডব্লিউটিএর আওতাধীন। এরপরও সরেজমিন পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পাটুরিয়া ঘাট ও আশপাশে নদীভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে। তবে ইতোমধ্যে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ভাঙনরোধে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
ঢাকা/চন্দন/বকুল