১০ দাবিতে পেট্রোল পাম্প মালিকদের আল্টিমেটাম, ২৫ মে কর্মবিরতির ডাক
Published: 11th, May 2025 GMT
তেল বিক্রির কমিশন ন্যূনতম ৭ শতাংশ করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদ। দাবি আদায়ে ১২ দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে আগামী ২৫ মে আধা বেলা প্রতীকী কর্মবিরতির পালনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সওজ অধিদপ্তরের ইজারা ভূমির মাশুল আগের মতো বহাল রাখা; নবায়নকালীন সময়ে নির্ধারিত ইজারা মাশুলের পে-অর্ডারসহ আবেদন নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে জমা দিলে সেটিকে নবায়ন হিসেবে গণ্য করা; বিএসটিআইয়ের পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ডিসপেন্সিং ইউনিট স্ট্যাম্পিং ও পরিমাপ যাচাই কার্যক্রম পরিচালনা; আন্ডার গ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন; ডিপ রড পরীক্ষণ ফিস ও নিবন্ধন প্রথা বাতিল।
এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ঘর বা খোলা জায়গায় অবৈধভাবে মেশিন স্থাপন করে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ; ডিলারশিপ ছাড়া বিপণন কোম্পানির সরাসরি তেল বিক্রি বন্ধ; ট্যাংক-লরি চালক সংকট মোকাবিলায় চালকদের লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স ইস্যু প্রক্রিয়া সহজ করা; গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষার নামে রাস্তায় ট্যাংকলরি যত্রতত্র থামানো যাবে না। তেলের ডিপো গেটে কাগজপত্র পরীক্ষার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে এবং আন্তঃজেলা রুট পারমিট ইস্যু করার দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল জানান, ২০২৫ সালে একাধিকবার জ্বালানি খাতের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে সরকারকে অবহিত করা হয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিপিসি চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে বৈঠকে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে ব্যবসায়ীরা ঘোষিত কর্মসূচি স্থগিত করেন। তবে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা চরম হতাশায় পড়েছেন।
তিনি আরও জানান, এমন অবস্থায় তারা জ্বালানি তেলের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে শেষ সুযোগ হিসেবে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত সময় দিয়ে সরকারকে সব দাবি পূরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। দাবি মানা না হলে ২৫ মে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রতীকী কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে, যার আওতায় সারাদেশে সব পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক-লরি চলাচল বন্ধ থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক মিজানুর রহমান রতন, জুবায়ের আহাম্মেদ চৌধুরীসহ সব বিভাগীয় তেল ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে আওয়ামী দোসরের কাছ থেকে দেড় যুগ পর জমি উদ্ধার
রূপগঞ্জে দীর্ঘ দেড় যুগ পর জমির মালিকানা ফিরে পেলেন প্রকৃত মালিক। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের এমপি মন্ত্রীদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপজেলার বাগবেড় মৌজায় ১০৫ নং দাগের সাড়ে ২০ শতাংশ জমির মধ্যে ৬ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছিলেন মোজাম্মেল হক।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে বিচার সালিশের মাধ্যমে প্রকৃত মালিকরা জমিটি ফিরে পায়। শনিবার (১০ মে) সকালে ফিরে পাওয়া জমিতে বাউন্ডারি দেয়াল দিয়েছেন বর্তমান মালিক রাশেদুল ইসলাম।
জমিটির প্রকৃত মালিক মৃত আবুল হোসেন। মৃত্যুর পর তার পাঁচ ছেলে ওই জমির মালিক হয়েছে। তাদের মোট জমির পরিমাণ সাড়ে ২০ শতাংশ এর মধ্যে ৬ শতাংশ জমি বেদখল ছিল।
জানা গেছে, রূপগঞ্জের বাগবেড় মৌজায় ১০৫ নং দাগের সাড়ে ২০ শতাংশ জমির প্রকৃত মালিক মৃত আবুল হোসেন। তার মৃত্যুর পরে মো. আরিফ সহ পাঁচ ছেলে ওই জমির মালিক হন। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে তৎকালীন সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর অনুসারী পরিচয় দিয়ে মোজাম্মেল হক ওরফে মগা এই জমিটি জোরপূর্বক দখল করে নেয়।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার সরকারের পতন হলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি নিয়ে বিচার সালিশ করে দখলকৃত জমিটি ফিরে পায় প্রকৃত মালিকের অংশীদাররা। পরে জমির প্রকৃত মালিক মৃত আবুল হোসেনের পাঁচ ছেলে এই জমি রাশেদুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে দেয়।
এ বিষয়ে মৃত আবুল হোসেন মিয়ার ছেলে মো. আরিফ বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর মোজাম্মেল হক ওরফে মগা জোরপূর্বক আমাদের ৬ শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সেই জায়গা পুনরায় মেপে জমি ফিরে পেয়েছি। পরে সেই জায়গা আমরা রাশেদুল ইসলামের কাছে বিক্রি করি।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে অবৈধভাবে তারা আমাদের জমি দখল করে দোকানপাট ভাড়া দিয়েছে। এতে আমাদের প্রায় এক থেকে ২ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এটি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি।
এর আগে, গত শনিবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, উভয়পক্ষের আইনজীবি, উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও এলাকার ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে বিচার শালিস বসে। তখন মোজাম্মেল হকের আইনজীবি জমির মালিকানা নিয়ে সঠিক কাগজপত্র দাখিল করতে পারেননি।
তাছাড়া ক্রয়কৃত জমির পরিমাণ মোজাম্মেল হকের বাউন্ডারীর ভিতরে বেশি থাকায় রাশেদুল ইসলামকে বৈধতা হিসেবে বাকি জমি বুঝিয়ে দেন। পরে শনিবার থেকেই রাশেদুল ইসলাম তার জমিতে বাউন্ডারী দেওয়াল নির্মাণ শুরু করেন এবং প্রাপ্ত ফিরে পান।
বিচার শালিসে উপস্থিত ছিলেন- রাশেদুল ইসলামের আইনজীবি রিপন শর্মা, মোজাম্মেল হকের আইনজীবি মহসিন প্রধান, রূপগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা আবু মোহাম্মদ মাসুম, রূপগঞ্জ জিয়া মঞ্চের সভাপতি জজ মিয়া, শহিদুল্লাহ মিয়া, ফজুল হক মিয়া, নুর মোহাম্মদ, জমির মালিক রাশেদুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক (মগা) সহ আরো অনেকে।
বিচার শালিসে উভয়পক্ষের কাগজপত্র দেখে সর্ব সম্মতিক্রমে রাশেদুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হকের জায়গা পরিমাপ করে পৃথকভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়। পরে একটি বাউন্ডারী দেওয়াল ভেঙে ওই সম্মত্তির বিরোধ সমাধান করা হয়।
বিচার শালিসে থাকা জজ মিয়া বলেন, বাগবেড় এলাকার একটি জমি নিয়ে রাশেদুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হকের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। পরে বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয়পক্ষের লোকজন আইনজীবিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিচার শালিস বসে। উভয়পক্ষের কাগজপত্র দেখে সঠিক সমাধান দেয়া হয়েছে। এ থেকে ওই জমি নিয়ে কোনো পক্ষের মধ্যে বিরোধ থাকবে না।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিরোধপূর্ণ জমির সমাধানের জন্য উভয়পক্ষকে আইনজীবি নিয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়। পরে জমির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে উভয়পক্ষের আইনজীবির মাধ্যমে সমাধান করা হয়।