কীভাবে বুকের এই কষ্ট চেপে রাখব: পূজা চেরি
Published: 11th, May 2025 GMT
গত বছরেরর ২৪ মার্চ না ফেরার দেশে চলে গেছেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পূজা চেরির মা ঝর্ণা রায়। তাকে নিয়ে আজ বিশ্ব মা দিবসে মেয়ে পূজা চেরির স্মৃতিচারণ। সমকালের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো–
মা, তোমাকে ছাড়া এখনও আমার জন্মদিন আসে। সারাদিন ধরে শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খায় মনে– এই তো মাত্র দুই বছর আগের জন্মদিনটা। তোমার শরীর তখন খুব একটা ভালো ছিল না। অথচ সেদিন আমি মন খারাপ করে তোমার সঙ্গে একটু উচ্চ স্বরে কথা বলেছি। মনে পড়ে সেদিন বলেছিলাম, ‘সবার মা, তার মেয়ের জন্মদিনে কত কিছুই না করে, তুমি তো আমার জন্য পায়েসও বানাচ্ছো না!’
তুমি কষ্ট পেয়েছিলে কিনা জানি না, এরপর দেখলাম তুমি সেই দুর্বল শরীর নিয়ে আমার জন্য পায়েস রান্না করলে। যদিও ঠিকঠাক হয়নি– চাল আধা সেদ্ধ ছিল, দুধও জমেনি ভালো করে– তবুও সেই পায়েসই আজ সবচেয়ে প্রিয় মনে হয়। কারণ তুমি নিজের হাতে বানিয়েছিলে, ভালোবাসা মিশিয়ে।
মা, জানো– এখনও আমার সেই একই পায়েস খেতে ইচ্ছে করছে, তোমার হাতের পায়েস…একা একা বসে থাকতে থাকতে কান্নায় চোখ ভরে যায়। কতদিন তোমাকে দেখি না, মা। জানি না সৃষ্টিকর্তা আমাকে আর কতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন, কিন্তু যতদিন থাকি ততদিন কীভাবে এই বুকের কষ্ট চেপে রাখব? এটা তো আর সম্ভব না।
একটা কথা বলি, মা, তুমি চলে যাওয়ার পর মনে হয় তুমি আমায় আবারও নতুন করে জন্ম দিয়েছো। এক নতুন পূজা। যে একা একাই লড়বে। আমি জানি, তুমি আমাকে দেখছ। অনুভব করি, তুমি এখনও আমার আশপাশেই আছো। তাই তো কোনো দুঃখ, কোনো বিপদ এখনও আমাকে ছুঁতে পারেনি।
তুমি কথা রেখেছো মা। এখন আমার পালা। তুমি দেখো, তোমাকে দেওয়া কথা আমি রাখব। যদিও পৃথিবীর চোখে তুমি নেই, আমার চোখে তুমি আছো। এই যে আমি এত কথা লিখছি, আমার মনে হচ্ছে তুমি আমার মাথায় হাত রেখে বসে আছো, হাসছো। আর বলছ–‘পূজা, কেঁদো না মা, আমি তো আছি।’
একটা আবদার করব মা– এই জীবনে তুমি কখনও নিজের কথা ভাবোনি। সব সময় আমার চিন্তায় বিভোর ছিলে। তাই এবার ওপারে অন্তত নিজের খেয়াল রেখো, মা। ভালো থেকো, আমার লক্ষ্মী মামণি। অনেক ভালোবাসি মা।
ইতি
তোমার পূজা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম দ বস
এছাড়াও পড়ুন:
পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক
৭ বছরের বিরতির পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন নেতৃত্ব।
তবে পূজার ছুটি শেষ না হওয়ায় এখনও হয়নি অভিষেক ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ফলে দায়িত্বভার নিতে পারছেন না নবনির্বাচিতরা।
আরো পড়ুন:
গকসুর জিএস, এজিএসের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি, পুনর্নির্বাচন দাবি
চাকসু নির্বাচন: দুই নারী প্রার্থীকে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজার পর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের অভিষেক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। এতে নির্বাচনের পর যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা এখন রূপ নিয়েছে অপেক্ষার আবহে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ২৫ সেপ্টেম্বর দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ৭ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেন। ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, প্রার্থীদের প্রচারণা আর ভোটের দিন ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তোলে।
ভোট শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলেও আনুষ্ঠানিক অভিষেক না হওয়ায় এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি তারা।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা আক্তার বলেন, “গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলেও নির্বাচিত সদস্যরা এখনও শপথ গ্রহণ করেননি। এই বিলম্বের সুযোগে কিছু মহল নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে সফল করতে এবং অপপ্রচার রোধে নির্বাচিত সদস্যদের দ্রুত শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারেন।”
সদ্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান বলেন, “নির্বাচনের পরের দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল এবং দুর্গাপূজার ছুটির কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন পূজার ছুটির পর যতদ্রুত সম্ভব অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “ছুটি শেষে শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।”
২০১৩ সালে প্রথমবার গকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর চতুর্থ নির্বাচনে সম্পাদকীয় ও অনুষদ প্রতিনিধি মিলিয়ে মোট ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৫৮ জন প্রার্থী। ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৭৬১ জন।
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী