গত বছরেরর ২৪ মার্চ না ফেরার দেশে চলে গেছেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পূজা চেরির মা ঝর্ণা রায়। তাকে নিয়ে আজ বিশ্ব মা দিবসে মেয়ে পূজা চেরির স্মৃতিচারণ। সমকালের পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো–

মা, তোমাকে ছাড়া এখনও আমার জন্মদিন আসে। সারাদিন ধরে শুধু একটা কথাই ঘুরপাক খায় মনে– এই তো মাত্র দুই বছর আগের জন্মদিনটা। তোমার শরীর তখন খুব একটা ভালো ছিল না। অথচ সেদিন আমি মন খারাপ করে তোমার সঙ্গে একটু উচ্চ স্বরে কথা বলেছি। মনে পড়ে সেদিন বলেছিলাম, ‘সবার মা, তার মেয়ের জন্মদিনে কত কিছুই না করে, তুমি তো আমার জন্য পায়েসও বানাচ্ছো না!’

তুমি কষ্ট পেয়েছিলে কিনা জানি না, এরপর দেখলাম তুমি সেই দুর্বল শরীর নিয়ে আমার জন্য পায়েস রান্না করলে। যদিও ঠিকঠাক হয়নি– চাল আধা সেদ্ধ ছিল, দুধও জমেনি ভালো করে– তবুও সেই পায়েসই আজ সবচেয়ে প্রিয় মনে হয়। কারণ তুমি নিজের হাতে বানিয়েছিলে, ভালোবাসা মিশিয়ে।

মা, জানো– এখনও আমার সেই একই পায়েস খেতে ইচ্ছে করছে, তোমার হাতের পায়েস…একা একা বসে থাকতে থাকতে কান্নায় চোখ ভরে যায়। কতদিন তোমাকে দেখি না, মা। জানি না সৃষ্টিকর্তা আমাকে আর কতদিন বাঁচিয়ে রাখবেন, কিন্তু যতদিন থাকি ততদিন কীভাবে এই বুকের কষ্ট চেপে রাখব? এটা তো আর সম্ভব না। 

একটা কথা বলি, মা, তুমি চলে যাওয়ার পর মনে হয় তুমি আমায় আবারও নতুন করে জন্ম দিয়েছো। এক নতুন পূজা। যে একা একাই লড়বে। আমি জানি, তুমি আমাকে দেখছ। অনুভব করি, তুমি এখনও আমার আশপাশেই আছো। তাই তো কোনো দুঃখ, কোনো বিপদ এখনও আমাকে ছুঁতে পারেনি।

তুমি কথা রেখেছো মা। এখন আমার পালা। তুমি দেখো, তোমাকে দেওয়া কথা আমি রাখব। যদিও পৃথিবীর চোখে তুমি নেই, আমার চোখে তুমি আছো। এই যে আমি এত কথা লিখছি, আমার মনে হচ্ছে তুমি আমার মাথায় হাত রেখে বসে আছো, হাসছো। আর বলছ–‘পূজা, কেঁদো না মা, আমি তো আছি।’

একটা আবদার করব মা– এই জীবনে তুমি কখনও নিজের কথা ভাবোনি। সব সময় আমার চিন্তায় বিভোর ছিলে। তাই এবার ওপারে অন্তত নিজের খেয়াল রেখো, মা। ভালো থেকো, আমার লক্ষ্মী মামণি। অনেক ভালোবাসি মা।
ইতি
তোমার পূজা

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম দ বস

এছাড়াও পড়ুন:

ভয়াবহ আগুন কলকাতার বড়বাজারে, ঘটনাস্থলে দমকলের ২০ ইঞ্জিন

কলকাতার পুলিশ হেডকোয়ার্টার লালবাজারের কাছে বড়বাজারের এজরা স্ট্রিটের একটি গুদামে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। শনিবার ভোর রাতে আগুন লাগলেও সেই আগুন সকাল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। বরং দ্রুত আগুন ছড়াচ্ছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের অন্তত ২০টি ইঞ্জিন। ল্যাডারের সাহায্য নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী ইঞ্জিনের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা হতে পারে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার ভোর ৫টা নাগাদ গুদামে আগুন লেগে যায়। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং প্রচুর বৈদ্যুতিক তার ছিল গুদামে। মজুত করা ছিল অনেক দাহ্য পদার্থ। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ভালো করে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে আকাশ। চারদিক ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়। কীভাবে এই আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বৈদ্যুতিক সামগ্রী থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। কেউ কেউ শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনার কথা বলছেন। 

আরো পড়ুন:

ভারত যাচ্ছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

চীন সীমান্তের পাশে নতুন বিমানঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত

যদিও ফায়ার সার্ভিসের তরফে সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও কিছু নিশ্চিত কিছু জানাতে পারেনি, তারা আগুন নেভাতেই এখনো পর্যন্ত ব্যস্ত। পুলিশ ও দমকল সূত্রে খবর, ভোরে ওই গুদাম থেকে কালো ধোঁয়া বার হতে দেখে স্থানীয়রাই দমকলকে জানান। ঘনবসতি এলাকা হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। গুদাম থেকে পাশের আবাসনেও ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। একাধিক বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর। ভিতরে কেউ আটকে পড়েছেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

অন্যদিকে দমকলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাদের অভিযোগ, দমকলে খবর দেওয়া হলেও তারা দেরিতে এসেছে। ফলে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভয়াবহ আগুন কলকাতার বড়বাজারে, ঘটনাস্থলে দমকলের ২০ ইঞ্জিন