বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হলো না, পোড়া দেহ পড়েছিল পুকুরে
Published: 11th, May 2025 GMT
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন শাহরিয়ার অন্নব রিউশা (১৭)। পরিবার ও স্বজনদের কাছে, মেধাবী, বিনয়ী ও ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত রাউশা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডের এ প্লাস পান। সবশেষ তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। এর আগে অংশ নেন আরো তিনিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়।
রবিবার (১১ মে) সকাল ৬টার দিকে রাউশার আগুনে পোড়া মরদেহ উদ্ধার হয়েছে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে। পরিবার ও স্বজনদের দাবি, চারটি বিশ্বিবিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেন রাউশা। ভর্তির কোথাও সুযোগ পাননি তিনি। যে কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তাদের ধারণা, এ কারণে নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিতে পারেন রাউশা। তবে, এ ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই।
রাউশার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সিংদাহ গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের সোহেল রানার ছেলে।
আরো পড়ুন:
টাঙ্গাইলে সাপের কামড়ে শিক্ষার্থীসহ নিহত ২
বাঁকখালী নদীতে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
রাউশার স্বজন ও পরিবার জানান, রাউশা খুবই মেধাবী ছিল। কুষ্টিয়া এডুকেয়ার স্কুল এন্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০২৩ সালে এসএসসি পাশ করেন তিনি। এরপর তিনি ঢাকার রামপুরা এলাকায় খালার বাড়িতে যান। ঢাকা কলেজ থেকে ২০২৫ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। দুই পরীক্ষায় তিনি গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিলেন। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য তিনি প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে পরীক্ষা দেন। এরপর ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। গত ২৭ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন রাউশা।
তারা জানান, গত শুক্রবার (৯ মে) ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন রিউশা। শনিবার (১০ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাউশার মা মুক্তা খাতুন তার বাবার বাড়িতে ছেলের কাপড় আনতে যান। রাত সোয়া ৯টার দিকে বাড়ি ফিরে তিনি রিউশাকে দেখতে পাননি। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। আজ সকাল ৬টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরের একটি পুকুরে পোড়া ও বিবস্ত্র অবস্থায় রাউশার মরদেহ পান স্বজনরা।
রিউশার আইনজীবী খালা রত্না খাতুন বলেন, “রিউশা খুব মেধাবী, বিনয়ী ও ভদ্র ছেলে ছিল। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েও ভর্তি হতে পারেনি। এরপর সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। আমরা ওকে সাহস দিতাম। তবুও শেষ রক্ষা হলো না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পেয়েই হয়তো শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে।”
রিউশার মা মুক্তা খাতুন ছেলের শোকে বিলাপ করছিলেন। তিনি বলছিলেন, “আমার বাবা কোনে থাকবিনি রে। ক্যাম্বা থাকবিনি। আমার বাবার থুয়ে ক্যাম্বা শোবনগো।”
তিনি বলেন, “রাতে বাবার বাড়িতে রিউশার জামাকাপড় আনতে যাই। রাত সোয়া ৯টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখি ছেলে নেই। সারা রাত সব জায়গায় খুঁজেও ওকে পাইনি। সকালে দেখি, পুকুরে বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে আছে। সারা শরীর পুড়া। রাজশাহীতেও চান্স না পেয়ে খুবই ভেঙে পড়েছিল ও। কিভাবে কি হল তা জানি না।”
রাউশার চাচা ইকবাল বিশ্বাস বলেন, “বাগানে থাকা পরিত্যাক্ত টিনশেড ঘর ও পুকুরপাড়ে আগুনের ছাই এবং প্যান্টের পোড়া অংশবিশেষ পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।”
কুমারখালী থানার ওসি মো.
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ য় ভর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসির পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
রবিবার (১০ আগস্ট) সকাল ১০টায় একযোগে দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে পুনঃনিরীক্ষণের এই ফল প্রকাশ করা হয়। শিক্ষার্থীরা সেখানে রোল নম্বর দিয়ে ফল দেখতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ফল www.dhakaeducationboard.gov.bd ওয়েবসাইটে, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ফল www.comillaboard.gov.bd ওয়েবসাইটে, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ফল www.bise-ctg.gov.bd ওয়েবসাইটে, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ফল www.rajshahiboard.gov.bd ওয়েবসাইটে, যশোর শিক্ষা বোর্ডের ফল www.jessoreboard.gov.bd ওয়েবসাইটে, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের ফল www.barisalboard.gov.bd ওয়েবসাইটে, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ফল www.sylhetboard.gov.bd ওয়েবসাইটে, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের ফল www.dinajpureducationboard.gov.bd ওয়েবসাইটে, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ফল www.mymensingheducationboard.gov.bd ওয়েবসাইটে, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ফল www.bmeb.gov.bd ওয়েবসাইটে এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফল www.bteb.gov.bd ওয়েবসাইট থেকে দেখা যাবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার জানান, এবার ৯২ হাজার ৮৬৩ জন শিক্ষার্থী মোট ২ লাখ ২৩ হাজার ৬৬৪টি খাতার পুনঃমূল্যায়নের আবেদন করেছেন, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
আবেদনকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২১ হাজার, আর চ্যালেঞ্জ হওয়া খাতার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৪০ হাজার। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে গণিত বিষয়ে—৪২ হাজার ৯৩৬টি খাতা। এরপর ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১৯ হাজার ৬৮৮টি করে, পদার্থবিজ্ঞানে ১৬ হাজার ২৩৩টি এবং বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রে ১৩ হাজার ৫৫৮টি খাতার পুনঃনিরীক্ষণ হয়েছে। সবচেয়ে কম আবেদন এসেছে চারু ও কারুকলা বিষয়ে—মাত্র ৬টি।
শিক্ষা বোর্ডগুলোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশের ৯টি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ছয় লাখ ৬৬০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্র তিন লাখ ২৪ হাজার ৭১৬ জন এবং ছাত্রী দুই লাখ ৭৫ হাজার ৯৪৪ জন।
ঢাকা/হাসান/ইভা