ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ইয়াসিন খালাসী নামের এক তরুণকে প্রতিপক্ষ কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় ইয়াসিনের সহযোগী রায়হান শেখ নামের অপর এক তরুণকে কুপিয়ে জখম করা হয়। শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইয়াসিন (২১) থানমাত্তা গ্রামের জাহাঙ্গীর খালাসীর ছেলে। পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি। আহত রায়হান শেখ একই গ্রামের বাখু শেখের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের ভাষ্য, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইয়াসিনকে তাঁর বাড়ি থেকে ডেকে নেয় রায়হান। তারা দু’জন থানমাত্তা গ্রামের সেতুর কাছে পৌঁছালে সেখানে ওতপেতে থাকা মুখোশধারী পাঁচ-ছয়জন অজ্ঞাত যুবক তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা ইয়াসিনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ সময় ইয়াসিনকে রক্ষায় রায়হান এগিয়ে গেলে তাঁকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রাত পৌনে ১টার দিকে পথিমধ্যে ইয়াসিনের মৃত্যু ঘটে। অপর আহত রায়হানের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
ইয়াছিনের বাবা জাহাঙ্গীর খালাসী অভিযোগ করেন, থানমাত্তা গ্রামের বটতলা নামক স্থানের একটি পুরাতন বটগাছের ডাল কাটা নিয়ে তাঁর প্রতিপক্ষ বাদশা শরীফ ও ফখুর শেখের ছেলেদের সঙ্গে মারামারি হয়। বিষয়টি গ্রাম্য সালিশে মীমাংসাও হয়। কিন্তু প্রতিপক্ষের বাদশার ছেলে আতিয়ার শরীফ, ইসমাঈল ব্যাপারী, শাকিলসহ তাদের সহযোগী একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তাঁর ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামের বাদশা শরীফ, আলমগীর শরীফ ও স্বপন শরীফের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার পর থেকে তারা আত্মগোপনে রয়েছেন জানা গেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) আসিফ ইকবাল জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। শিগগিরই দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য
এছাড়াও পড়ুন:
বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৮ জনকে নেওয়া হচ্ছে শ্যামনগর থানায়
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) রেখে যাওয়া ৭৮ জনকে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রিভারাইন বর্ডার গার্ডের (আরবিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সৈয়দ আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, ৭৮ জনের মধ্যে ৪ জন ভারতীয় নাগরিক রয়েছেন, বাকিরা বাংলাদেশি। তাদের বেশিরভাগের বাড়ি বরিশাল, নড়াইল ও খুলনা জেলায়। রোববার দুপুর ২টার দিকে কোস্টগার্ড সদস্যরা তাদেরকে নিয়ে লোকালয় অভিমুখে রওনা দিয়েছেন।
এর আগে গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্প থেকে তাদের কোস্টগার্ডের কাকা-দোবেকী ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মশিউর রহমান বলেন, তাকে মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্প থেকে জানানো হয় উদ্ধার ৭৮ জন একপ্রকার কয়েক দিন না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে স্যালাইন, পানি ও খাবার প্রয়োজন। বিষয়টি জানার পর স্থানীয় প্রশাসন, আরজিবি ও বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহযোগিতায় খাবার ও অন্যান্য পথ্য নিয়ে গতকাল সকালে তিনি মান্দারবাড়িয়া ক্যাম্পে পৌঁছান। তিনি সেখানে গিয়ে দেখেন, অধিকাংশই অসুস্থ। তবে তাদের ওপর কোনো নির্যাতন করা হয়েছে কিনা সেটা এখনও জানা যায়নি।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন বলেন, বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৮ জনকে নিয়ে কোস্টগার্ড সদস্যরা রওনা দিয়েছেন। তারা এসব ব্যক্তিদের শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করবেন। পরবর্তীতে নাম-পরিচয় শনাক্তের পর পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, সেই ৭৮ জনের জন্য উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে ভবনে পর্যাপ্ত জায়গার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ রাত ১০টার দিকে তারা এখানে পৌঁছাতে পারেন। তাদেরকে কেন বনের মধ্যে ফেলে যাওয়া হয়েছে, সেসব তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
এর আগে, গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একাধিক নৌযানে সীমান্তবর্তী রায়মঙ্গল নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও ভারতীয় কোস্টগার্ড সদস্যরা ৭৮ জনকে বাংলাদেশের সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়ার জঙ্গলে ফেলে যায়। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বলে অভিযোগ আনা হয়।