জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণই এ সরকারের অন্যতম লক্ষ্য: আসিফ মাহমুদ
Published: 12th, May 2025 GMT
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণই এ সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। সন্ত্রাসী দল আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা তারই অন্যতম অংশ।’
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ অপর এক স্ট্যাটাসে বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করা কঠিন।’
তিনি বলেন, ‘এর চেয়ে কঠিন সত্য আর নেই। লড়াই যেন থামছেই না। রাজপথের লড়াইটা সামষ্টিক; জুলাইয়ের যোদ্ধাদের মিলনস্থলে পরিণত হওয়ায় একধরনের ভালো লাগার জায়গাও তৈরি হয়। মাঝে মাঝে মনে হয়, সব ছেড়ে রাজপথে নেমে যাই। সেটাই আমার জায়গা—যা করতে আমি অভ্যস্ত এবং যেখানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। তবুও ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসলেও থেকে যেতে হয় গণ-অভ্যুত্থানের পাহারাদার হয়ে। জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আওয়াজ পৌঁছে দেওয়ার জন্য। আমাদের এই লড়াইটা হয়তো দেখা যায় না, শোনা যায় না।’
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সরকারে থাকা যেন এখন দু’ধারী তলোয়ারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা। সরকার কোনো ভুল করলে, সেটা আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে না পড়লেও জনতার কাঠগড়ায় আমাদেরই দাঁড় করানো হয়। আবার ছাত্র-জনতা মাঠে নামলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ভরকেন্দ্রগুলো আমাদের সন্দেহের চোখে দেখে, টার্গেট করে। স্টাবলিশমেন্ট মনে করে-এই কাজ আমরা করছি। তাছাড়া, ক্ষমতার বিভিন্ন ভরকেন্দ্রের সঙ্গে ‘জুলাই’ প্রশ্নে আপোস না করায় আমরা তাদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছি-এটাও একপ্রকার বোনাস!’
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘রাষ্ট্র একটি বিশাল এবং জটিল পরিসর। এখানে কিছু বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত কঠিন। তবে স্বস্তির বিষয় হলো-এই উপদেষ্টা পরিষদ, অনেক বাধা আসলেও, দিনশেষে ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, জনরায়ের বাস্তবায়নে সচেষ্ট হচ্ছে। যতদিন এটা পারবে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকবে, গণ-অভ্যুত্থানের কণ্ঠস্বরকে যথাযথ গুরুত্ব দেবে-ততদিনই আমি আছি। যদি শহীদদের পক্ষ ছেড়ে দিই, তবে আমার এখানে আর কাজ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া জুলাই জনতার আরেকটি বিজয়। স্টাবলিশমেন্টে যারা এখনও আওয়ামী-সিমপ্যাথাইজার-তারা সতর্ক হোন। সামান্য অসতর্কতা আপনাদের পতনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। জুলাইকে মেনে না নিয়ে এই দেশে শান্তিতে থাকার কোনো সুযোগ নেই।’
অপর এক পোস্টে তিনি বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ পালানোর ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের নেতৃত্বে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে উক্ত কমিশনকে। এই ঘটনায় জড়িত সকলকে শাস্তির আওতায় আনবে সরকার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট আম দ র সরক র জনত র
এছাড়াও পড়ুন:
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আড়ালে দেশে সাজানো নাটকীয়তা চলছে: মির্জা আব্বাস
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের আড়ালে দেশে সাজানো নাটকীয়তা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এছাড়া ডিএমপির নিষিদ্ধ এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিক্ষোভ করার ঘটনায় সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দীন পিন্টুর স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, নাসির উদ্দিন পিন্টুকে আজ যেভাবে স্মরণ করা হচ্ছে, এই নাসির উদ্দিনদের মতো হাজারো নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে আজকের এই বিএনপি।
এসময় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগে লাগাতার আন্দোলনকে নাটক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, কোনো অপকর্মের আগে শেখ হাসিনাও মানুষের দৃষ্টি সরাতে এমন কৌশল অবলম্বন করতেন। বিএনপি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিরোধিতা না করলেও একটি অজনপ্রিয় দল শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপিকে হেয় করছে।
তিনি বলেন, যারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে চায় তারা দেশ ও জনগণের শত্রু। কারণ আওয়ামী লীগকে বিএনপি কখনো আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় না। ১৭ বছর যাদের কাছে নির্যাতিত হয়েছে বিএনপি তাদের পুনর্বাসন করবে; এটি যারা বলে তারা বিএনপিকে হিংসা করে।
মির্জা আব্বাস বলেন, ভিআইপি ট্রিটমেন্ট নিয়ে দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, অথচ সরকার কিছু জানে না; তারা কী জানে?
তাছাড়া, প্রশাসনে বিএনপি নিধন করে আওয়ামী-জামাতপন্থিদের স্থলাভিষিক্ত করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, অনেক উপদেষ্টা যারা দেশের নাগরিক না, তারাই দেশ পরিচালনা করছে। মনে হচ্ছে ঔপনিবেশিক শাসন চলছে দেশে। করিডর নিয়ে জামায়াত-এনসিপি কেউ কথা বলছে না।
সেন্টমার্টিন, সাজেক নিয়ে এনসিপি কেন কথা বলছে না— দলটির কাছে এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা আব্বাস বলেন, বিশ্বের ডিকশনারিতে মানবিক করিডর বলে কিছু নেই। প্রয়োজনে একেকটা নাম দিয়ে এসব বানানো হচ্ছে। আমরা কেন সেন্টমার্টিন যেতে পারবো না, আমি এনসিপির ভাইদের বলতে চাই আপনারা এই বিষয় নিয়ে কথা বলেন না কেন। দেশ ভালো অবস্থানে নেই। আবার আমরা শুনতে পাচ্ছি মানবিক করিডর দেওয়া হবে, কেন কার স্বার্থের জন্য করিডোর, জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনও করিডর দেওয়ার অধিকার এই সরকারের নেই।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, দেশে সন্দেহভাজন বিদেশিদের আগমন বেড়েছে। বিভিন্ন মিশন চালু হচ্ছে। সব অপকর্ম ইচ্ছাকৃতভাবে করছে সরকার, সরকার কারও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করছে, এটি দেশপ্রেমিক সরকার নয়।
এসময় মানবিক করিডোর নিয়ে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নীরবতা তুলে ধরে বিস্ময় প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই। বিএনপি ছাড়া করিডর নিয়ে কেউ কথা বলছে না। জামায়াত, চরমোনাই কেউ কথা বলছে না। বিএনপিকে শেষ করতে পারলেই আওয়ামী লীগের মত দেশ লুটেপুটে খাওয়া যাবে।
নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে সংগঠনের আহ্বায়ক সাইদ হাসান মিন্টুর সভাপতিত্বে উপস্থিতি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ওলামা দলের মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক প্রমুখ।