ঐতিহাসিক নাকবা দিবসের ৭৭তম বর্ষপূতি আজ বৃহস্পতিবার। এদিন গাজায় ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ১১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু।

আজ বৃহস্পতিবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় ১১৫ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গত ১৯ মাস ধরে চলা নিরবচ্ছিন্ন বোমা হামলার ফলে এই মৃত্যুর সংখ্যা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

এই হামলার সময় ফিলিস্তিনিরা নাকবার ৭৭তম বার্ষিকী পালন করছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের সময় জায়নবাদী সামরিক গোষ্ঠীগুলোর হাতে ৭ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি জোরপূর্বক উচ্ছেদ হয়েছিল, যা নাকবা বা ‘মহাবিপর্যয়’ নামে পরিচিত।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে রাতভর এবং বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলা হামলায় কমপক্ষে ৫৯ জন নিহত হয়েছেন। নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে অনেকেই শিশু। এছাড়া উত্তর গাজার গাজা সিটি এবং জাবালিয়াতেও ইসরায়েলি হামলা চালানো হয়েছে।

আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজ্জুম দেইর এল-বালাহ থেকে জানিয়েছেন, গাজায় এটি ‘আরেকটি রক্তাক্ত দিন’। তিনি বলেন, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান খান ইউনিস শহরে কোনো সতর্কতা ছাড়াই নয়টি বাড়ি সরাসরি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এতে বেশ কয়েকটি পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

নাকবা দিবস (আরবি : يوم النكبة, ইওম আন-নাকবা, অর্থ ‘বিপর্যয়ের দিন’) প্রতি বছর ১৫ মে পালিত হয়। এদিন ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় ফিলিস্তিনি আরবদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, জাতিগত নির্মূল এবং তাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও পরিচয়ের ধ্বংসের স্মরণে পালন করা হয়। এই ঘটনাকে ফিলিস্তিনিরা ‘নাকবা’ বা ‘বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করে।

কি হয়েছিল সেদিন?

১৯৪৮ সালের এই ১৪ মে জন্ম হয় ইহুদি সংখ্যাগরিষ্ঠ অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের। এর পরদিন ১৫ মে থেকে ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য হত্যা-ধর্ষণ-লুট-অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। প্রাণভয়ে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাড়িঘর, সহায়-সম্পত্তি ছেড়ে পালাতে থাকে। সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি জর্ডান, লেবানন ও সিরিয়ায় গিয়ে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় নেন।

১৯৪৭-১৯৪৯ সাল পর্যন্ত দুই বছর সময়ের মধ্যে ফিলিস্তিনের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে ইহুদিরা ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনের ৭৮ ভাগ জায়গা দখল করে নেন। ফিলিস্তিনের ৫৩০টি গ্রাম ধ্বংস করে দেওয়া হয়। ধারাবাহিক হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে ১৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে ৭০টি ছিল গণহত্যা। 

এরপর থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতি আর বন্ধ হয়নি কখনোই। ১৯৪৮-এ শুরু হওয়া এই মহাবিপর্যয় এখনো অব্যহত আছে। সর্বশেষ পশ্চিম তীরকে যুক্ত করার এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করার ইসরায়েলি প্রত্যয় মহাবিপর্যয়কে আরও ঘনীভূত করেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

অভিনেত্রী কামিনী মারা গেছেন

বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী কামিনী কৌশল মারা গেছেন।  শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিনেত্রী। তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন এই অভিনেত্রী। টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর প্রকাশ করেছে।  

১৯৪৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের পাঞ্জাবের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেন কামিনী। লাহোর থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। সেই সময়ে ইংরেজিতে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে সিনেমা জগতে ক্যারিয়ার গড়বেন, তা চায়নি কামিনীর মা। পরে মায়ের মতের বিরুদ্ধে গিয়েই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেন এই অভিনেত্রী। 

আরো পড়ুন:

পর্দার বাবাকে বাস্তবে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন এই নায়িকা

মোদির মা রূপে পর্দায় আসছেন রাভিনা!

পাঁচ ও ছয়ের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কামিনী। ১৯৪৬ সালে চেতন আনন্দের ‘নীচা নগর’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে তার। মুক্তির পর এ সিনেমা কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পাম ডি’অর জিতেছিল। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো—‘নদীয়া কে পার’ (১৯৪৮), ‘জিদ্দি’ (১৯৪৮), ‘শবনম’ (১৯৪৯), ‘বিরাজ বহু’ (১৯৫৪), ‘জেলর’ (১৯৫৮), ‘শহীদ’ (১৯৬৫)  প্রভৃতি। 

কামিনী অভিনীত শেষ সিনেমা ‘লাল সিং চাড্ডা’। ২০২২ সালে মুক্তি পায় এটি। এর আগে ২০১৯ সালে ‘কবীর সিং’ সিনেমায় শহিদ কাপুরের দাদির চরিত্রে দেখা যায় এই অভিনেত্রীকে।

দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক তারকা অভিনেতার সঙ্গে পর্দা ভাগ করে নিয়েছেন কামিনী। গুঞ্জন রটেছিল, দিলীপ কুমারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন এই অভিনেত্রী। যদিও এ নিয়ে তাদের কেউই মুখ খোলেননি।

ব্যক্তিগত জীবনে কামিনী তার বোনের স্বামী ব্রাহ্ম এস. সুদকে বিয়ে করেন। কারণ ব্যাখ্যা করে এ অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, তার মৃত বোনকে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি তার দুই মেয়ের দেখাশোনা করবেন।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অভিনেত্রী কামিনী মারা গেছেন