সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার (১৭ মে) খোলা থাকবে দেশের সব সরকারি অফিস। এছাড়া পরবর্তী শনিবারও (২৪ মে) এসব অফিস চালু রাখা হবে।
এর আগে গত ৬ মে সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নির্বাহী আদেশে ১১ ও ১২ জুন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ঈদের আগে দুই শনিবার অফিস চালু রাখারও সিদ্ধান্ত হয়।
নির্বাহী আদেশে দুদিন ছুটির ফলে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সবমিলিয়ে টানা ১০ দিনের ছুটি মিলছে সরকারি চাকরিজীবীদের। ছুটি শুরু হবে আগামী ৫ জুন, শেষ হবে ১৪ জুন।
আরো পড়ুন:
শনিবার এমআরএ ভবন উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা
তথ্য উপদেষ্টার ওপর বোতল নিক্ষেপ: একজন ডিবি হেফাজতে
উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ৭ মে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ১১ ও ১২ জুন নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে আগামী ১৭ ও ২৪ মে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অফিস খোলা থাকবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং দ্য ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশনস-এর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অংশের ৩৭ নম্বর ক্রমিকের অনুবলে সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১১ ও ১২ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি এবং দাপ্তরিক কাজের স্বার্থে ১৭ মে (শনিবার) ও ২৪ মে (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অফিস খোলা রাখার ঘোষণা করা হলো।
ছুটিকালীন সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে এবং সাপ্তাহিক ছুটির ওই দুই দিন (১৭ ও ২৪ মে) সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস খোলা থাকবে।
এতে আরো বলা হয়, জরুরি পরিষেবা যেমন বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।
হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম বহনকারী যানবাহন ও কর্মীরা এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
এতে আরো বলা হয়, জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসগুলো এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবে।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র সব সরক র ব সরক র উপদ ষ ট কর ম র
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের হামছাদী গ্রামে গাছের খুঁটিকে পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এই পূজা করছেন।পূজা উপলক্ষে সেখানে আয়োজন করা হয় মেলা। স্থানীয়রা মেলাটিকে ‘পাগলা গাছের মেলা’ নামেই চেনেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া মেলায় যোগ দিতে আশপাশের এলাকার মানুষ ভিড় করছেন হামছাদী গ্রামে। শনিবার (১৭ মে) শেষ হবে মেলার আনুষ্ঠানিকতা।
প্রতি বছর ৩১ বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়। মূলত ৩১ বৈশাখ দুপুর থেকে হামছাদী গ্রামের বটতলায় মেলার পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। মেলার আনুষ্ঠানিকতা পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়।
আরো পড়ুন:
মঙ্গলবার দিনব্যাপী কবি সুকান্ত মেলা, প্রস্তুতি সম্পন্ন
টাঙ্গাইলে জামাই মেলায় দর্শনার্থীদের ঢল
এলাকাবাসী জানান, ৫০০ বছর আগে হামছাদী গ্রামের ফনি সেন ও সুরেন্দ্র সেন নামের দুই ভাই ঘর তৈরির জন্য বার্মা থেকে ২০টি খুঁটি কিনে আনেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের ১ তারিখ রাতে তারা দুই ভাই স্বপ্নে দেখেন, তাদের কেনা খুঁটি থেকে দুইটি খুঁটি নিজেদের দেবতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। খুঁটি দুইটি পাগল রূপ ধারণ করে তাদের উদ্দেশ্যে বলছিল, আমাকে ঘরের খুঁটির কাজে লাগাবে না। আমি তোমাদের দেবতা। আমাদের উপাসনা কর। এতে তোমাদের মঙ্গল হবে। পাপ থেকে মুক্তি পাবে। রোগ নিরাময় হবে।
এ ঘটনার পরের দিন দুই ভাই বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে একটি পুকুর পাড়ে খুঁটি দুইটি দেখতে পান। এরপর থেকে তারা দুই ভাই খুঁটিগুলোকে দেবতা মনে করে পূজা করতে থাকেন। তখন থেকে ওই এলাকার হিন্দুরা গাছের খুঁটি দুইটিকে প্রতিবছর পহেলা জ্যৈষ্ঠে পূজা করতে শুরু করেন। পরে একটি খুঁটি হারিয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানান, খুঁটিটি পূজামণ্ডপের পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে সারা বছর ডুবিয়ে রাখা হয়। পাগল ভক্তরা প্রতিবছর পুকুর থেকে খুঁটিটি উঠিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করান। তারা ফল, ঘি, খাসি ও পাঠা পাগলা খুঁটির নামে উৎসর্গ করেন। পূজা শেষে খুঁটিটি আবারো ওই পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়।
পূজা উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় নারায়ণগঞ্জের পাশাপাশি ঢাকা, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিন্দুরা যোগ দিতে আসেন। অন্য ধর্মের লোকরাও আসেন।
শুক্রবার (১৬ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেলায় নাগর দোলা, বাঁশের বাঁশি, কাঠের চেয়ার, হাতপাখা, চৌকি, মোড়া, চুড়ি, প্লাস্টিকের খেলনা, মিষ্টির দোকানসহ বিভিন্ন সামগ্রী সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
হামছাদী গ্রামের ইমরান হোসেন বলেন, “পূজা উপলক্ষে মেলার আয়োজন হয়। এই মেলায় যোগ দিতে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই আসেন আত্মীয়-স্বজনরা। প্রতিবছর এ মেলার জন্য স্বজনরা অপেক্ষায় থাকেন।”
পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য তপন কুমার চক্রবর্তী বলেন, “এ মেলা আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য বহন করে। মেলার আনুষ্ঠানিকতা পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়।”
তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে মেলা উদযাপনের লক্ষ্যে এলাকায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেলায় গীতা পাঠ ও কীর্তন পরিবেশিত হয়। এই পাগলা গাছের মেলা দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে মিলন মেলায় পরিণত হয়।”
ঢাকা/মাসুদ