কীটনাশক পানের পর স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা
Published: 18th, May 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জ সদরে স্ত্রীকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে সুজন মোল্লা নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে পাশের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় থেকে আটক করা হয় তাঁকে।
পুলিশের ভাষ্য, নিজে কীটনাশক পানের পর সুজন স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেন। বিষয়টি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারও করেছেন। তিনি পুলিশি পাহারায় মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সুজনের (৪৩) বাড়ি সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের বকুলতলা গ্রামে। তাঁর স্ত্রী সেলিনা বেগম (৩৫) একই গ্রামের মোস্তফা হাওলাদারের মেয়ে। এ দম্পতি নিঃসন্তান। সুজন অটোরিকশার চালক।
প্রতিবেশীরা জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সুজন মোল্লার সঙ্গে স্ত্রী সেলিনার ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সুজন কীটনাশক পান করে স্ত্রীকে মারধর করেন। পরে তিনি দা নিয়ে সেলিনার দিকে তেড়ে যান। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেন সেলিনা। সেখানেই তাঁকে কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে চলে যান সুজন। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ততক্ষণে সেলিনা মারা যান। পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, রাত দেড়টার দিকে পাশের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় এলাকা থেকে সুজন মোল্লাকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, পারিবারিক কলহের কারণে নিজে কীটনাশক পান করেন। পরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
ওসির ভাষ্য, অসুস্থ হওয়ায় সুজনকে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সেলিনার স্বজনরা লাশ দাফনের পর লিখিত অভিযোগ দেবেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ন কগঞ জ ক প য় হত য
এছাড়াও পড়ুন:
নদীভাঙন রোধে পাটুরিয়ায় ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরি ও লঞ্চঘাট এবং আশপাশে এলাকা নদীভাঙন থেকে রক্ষা করার দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে।
রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে তারা পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় এ সব কর্মসূচি পালন করেন।
আন্দোলনকারী আজিবার রহমান জানান, পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পাটুরিয়া ফেরি, লঞ্চঘাট, ঘাটসংলগ্ন ধুতরাবাড়ী ও তেগুরি গ্রামে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। গ্রাম দুটিতে কয়েকটি বসতবাড়ি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে চলে গেছে। এরই মধ্যে লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীভাঙনে ফেরিঘাটও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
আরো পড়ুন:
নেত্রকোনায় বিকাশকর্মী হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি
রংপুরে শ্বশুর-জামাই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মানববন্ধন
তিনি আরো জানান, উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের ভাঙনের বিষয়টি অবহিত করা হয়। তবে ভাঙনরোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এর প্রেক্ষিতে আজ রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে পাটুরিয়া ঘাটসংলগ্ন শহীদ রফিক চত্বরে উথলী-পাটুরিয়া সড়কে তিন ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাট থেকে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বেলা ১২টার দিকে মিছিলটি পাটুরিয়া ঘাটের অদূরে শহীদ রফিক চত্বর এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে উথলী-পাটুরিয়া সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে যাত্রী ও পরিবহন-শ্রমিকেরা ভোগান্তিতে পড়ে। খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীকে সড়ক থেকে সরে যেতে অনুরোধ করে। তবে আন্দোলনকারীরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে থাকে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর বেলা ৩টার দিকে সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধ করলে তারা সড়ক থেকে সরে যায়।
অবরোধ চলাকালে নদীভাঙন প্রতিকারের দাবিতে ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী বক্তব্য দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন খান (পান্নু), ব্যবসায়ী নূর ইসলাম, স্থানীয় আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তাপস খান, স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন, উত্তম পাল, আরিফ হোসেন ও রানা শিকদার।
বক্তারা বলেন, ‘‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ পাটুরিয়া ফেরিঘাট নদীভাঙনে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতিমধ্যে ঘাট এলাকা ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামে অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জীবনের শেষ আশ্রয়স্থল হারিয়ে অনেকে পথে বসেছে। অথচ ভাঙনরোধে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের জানালেও তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’’
নদীভাঙন প্রতিরোধে বক্তারা দাসকান্দি থেকে নয়াকান্দি এলাকা পর্যন্ত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, ঘাট সংলগ্ন দুই কিলোমিটার এলাকা বিআইডব্লিউটিএর আওতাধীন। এরপরও সরেজমিন পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পাটুরিয়া ঘাট ও আশপাশে নদীভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেয়ার পর ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে। তবে ইতোমধ্যে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ভাঙনরোধে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
ঢাকা/চন্দন/বকুল