ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা-পরবর্তী কিছু ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর বড় ভাই শরীফুল ইসলাম। শাহরিয়ার যে আবাসিক হলে (স্যার এ এফ রহমান হল) থাকতেন, সেই হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল, এ কথা উল্লেখ করে তিনি পুলিশকে এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে ছাত্রদলের অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শরীফুল ইসলাম এ কথা বলেন। ‘শাহরিয়ার আলম সাম্যর হত্যা মামলার তদন্তে গাফিলতির প্রতিবাদে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূল ঘাতকসহ সব আসামিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার, সুষ্ঠু বিচার এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে’ ছাত্রদল আজ শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ডাকে। কিন্তু পরে তারা পৌনে দুই ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করে।

আজ শাহরিয়ার আলমের সহপাঠী এবং বিভাগের শিক্ষকেরা শাহবাগ থানায় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বসেছিলেন। সেখানে শরীফুল ইসলামও ছিলেন। সেই প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে তিনি বলেন, ঘটনার সময় সাধারণ জনগণ দুজনকে আটক করে পুলিশের হাতে দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে বলা হয়, ঘটনার চার ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল থেকে সাত-আট কিলোমিটার দূরে কোনো এক হাসপাতাল থেকে সেই দুই অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রশ্ন হলো, পুলিশ পরে তাঁদের কেন ওই হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার দেখাল? এখানে প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার দুজনকে পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়। কোনো চাপের কারণে পুলিশ ওই দুজনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল কি না, জানতে চান শরীফুল।

শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘গভীর রাতে দুজনকে গ্রেপ্তারের পুরস্কারস্বরূপ সরকার তাদের (পুলিশ) এক লাখ টাকা উপহার হিসেবে দিয়েছে। আমি পুলিশকে বলতে চাই, যদি আপনাদের উপহারের দরকার হয়, আজকের এই সমাবেশে আমি ঘোষণা দিলাম, যদি দুষ্কৃতকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হয়, আমি পাঁচ লাখ টাকা উপহার দেব, ইনশা আল্লাহ।’

হত্যাকাণ্ডের পর শাহরিয়ারের চরিত্রহননের চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এখন কিছু কিছু ফেসবুকে দেখছি, আমার ছোট ভাইয়ের চরিত্রহননের জন্য ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। আমি তাদের সাবধান করে দিতে চাই, “মনে রাখবা, আজকে তোমরা যদি এ রকম সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চাও, ভবিষ্যতে তোমাদের মধ্যেও অনুরূপ ঘটনা ঘটতে পারে। কাজেই দল-মতনির্বিশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসটাকে নিরাপদ করার জন্য তোমাদের সচেষ্ট হতে হবে।”’

শাহরিয়ার হত্যার বিচারের দাবিতে কর্মসূচি পালন করায় ছাত্রদলের প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানান শরীফুল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল শ হব গ দ জনক

এছাড়াও পড়ুন:

শিয়া-সুন্নি বিভেদ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জবি উপাচার্যের

মুসলিম সম্প্রদায়কে শিয়া-সুন্নি বিভেদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।

সোমবার (৩০ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে ‘ইরান বনাম ইসরায়েল-মার্কিন যুদ্ধ পরবর্তী আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রভাব’ শীর্ষক একাডেমিক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, “অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর তুলনায় মুসলমানদের মধ্যে আন্তঃসম্প্রদায়িক বিরোধ বেশি লক্ষ্য করা যায়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো যদি একত্রিতভাবে কাজ করে, তাহলে অনেক সংকটের সমাধান সম্ভব।”

আরো পড়ুন:

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ইরানের

এভিন কারাগারে ইসরায়েলি হামলায় ৭১ জন নিহত হয়েছে: ইরান

এতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। তিনি ইরানের ঐতিহাসিক বিপ্লব, বর্তমান মার্কিন-ইরান উত্তেজনা এবং মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক সংকট নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি ইরান ইস্যুতে বিভিন্ন শক্তির ভূমিকা ও সম্ভাব্য পরিণতি নিয়েও তিনি মূল্যায়ন করেন।

তিনি বলেন, “ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য ইরানকে ‘বিপদ’ হিসেবে উপস্থাপন করছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন সংকট তৈরি করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের কৌশলগত স্বার্থ মধ্যপ্রাচ্যে একত্রিত হয়েছে। তেল সম্পদ ও আঞ্চলিক আধিপত্য ধরে রাখতে ইরানকে ঘিরে সংকট তৈরি করা হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “মার্কিন-ইসরাইলি চাপের বিপরীতে ইরান রাশিয়া ও চীনের কাছ থেকে কূটনৈতিক ও সামরিক সমর্থন পাচ্ছে। এটি মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন শক্তি সমীকরণ তৈরি করছে, যা পশ্চিমা আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করছে।”

সতর্ক করে তিনি বলেন, “এই সংঘাত যদি যুদ্ধে রূপ নেয়, তাহলে গোটা অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে, তেলের বাজারে ধস নামতে পারে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।”

প্যানেল আলোচনায় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, “ইরানের ইসলামিক বিপ্লব-পরবর্তী সময় থেকেই ইসরাইলি আক্রমণের সূচনা। মুসলিম বিশ্বের অভ্যন্তরীণ বিভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ইসরাইলি আগ্রাসন মোকাবিলা করতে হবে। ‘ইসরাইলি ফোবিয়া’র ভিত্তিতে মুসলমানদের আর দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।”

জিএসএসআরসি পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আনওয়ারুস সালামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘শাপলা’ প্রতীক নিয়ে সিইসির সঙ্গে বৈঠক নাগরিক ঐক্যের
  • বন্দরে টিসিবি পন্য নিয়ে কারসাজি, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা 
  • নাক ভেঙেছে আদাহর
  • রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রেস সচিব 
  • জাবির গণিত বিভাগের ভবন নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরুর দাবি শিক্ষার্থীদের
  • ইবিতে ফের ছাত্রী হেনস্তাসহ নানা অভিযোগ এক শিক্ষকের বিরূদ্ধে
  • বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: সেই সব না-বলা কথা
  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারছি আমরা?
  • ডেঙ্গু থেকে সেরে উঠলে কী খাবেন
  • শিয়া-সুন্নি বিভেদ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জবি উপাচার্যের