ইসরায়েলে উল্লেখযাগ্য ক্ষতি করেছে ইরান
Published: 19th, June 2025 GMT
কয়েক দিন ধরে ইরানের হামলার প্রভাব খুব সীমিত ছিল। এবার ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে কয়েকটি স্থানে আঘাত হেনে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যাও কমে গেছে, যা থেকে ধারণা করা যায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখে ইসরায়েল সরকার যুদ্ধের কারণে দেওয়া কিছু বিধিনিষেধও শিথিল করেছে। তবে বৃহস্পতিবার সকালের হামলা প্রমাণ করেছে, ইরানের এখনও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে হামলা চালানোর ক্ষমতা আছে।
বিবিসির জেরুজালেম সংবাদদাতা হুগো বুশেগার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের টার্গেটের মধ্যে পড়েছে দক্ষিণের বিরশেবা শহরের সোরোকা মেডিক্যাল সেন্টার, তেল আবিবের কাছের হোলোন শহর, আর রামাতগন শহর।
ইরান বলেছে, বিরশেবায় তাদের আসল লক্ষ্য ছিল হাসপাতালের পাশে থাকা সামরিক স্থাপনা। তবে ইসরায়েলের উপ–পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যারেন হাসকেল অভিযোগ করেছেন, ইরান ইচ্ছে করে সোরোকা হাসপাতালকে টার্গেট করেছে। অন্য যেসব শহরে ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে, সেখানে কী টার্গেট ছিল তা পরিষ্কার নয়।
প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা, জ্বালানিকেন্দ্র, বিমানবন্দর, সরকারি ভবন এমনকি আবাসিক এলাকাতেও বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। ইরান বলছে, এসব কিছু তাদের বিরুদ্ধে আগ্রাসন, সুতরাং তারা আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।
এদিকে বিবিসির আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে ইরানের সাম্প্রতিক হামলায় ৬৫ জন আহত হয়েছে। ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, তাদের চিকিৎসা চলছে।
এমডিএ’র তথ্য মতে, ৪২ জন সামান্য আঘাত পেয়েছেন। বোমা হামলার আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় ১৮ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছে ৮০ বছরের একজন পুরুষ। এছাড়া ৭০ বছরের দুই নারী রয়েছেন যাদের অবস্থা ‘গুরুতর’।
বৃহস্পতিবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দক্ষিণ ইসরায়েলের বেয়ারশেবার সোরোকা হাসপাতালের একটি ভবন থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমডিএ জানিয়েছে, হাসপাতালের চিকিৎসকরা এখনও সেখানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ইসরায়েলের বিরশেভা শহরের সোরোকা হাসপাতালের পাশে একটি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করেই ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ- এর মতে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) একটি ‘কমান্ড ও গোয়েন্দা সদরদপ্তর (আইডিএফ-সিফোরআই)’ এবং গাভ-ইয়াম টেকনোলজি পার্কে অবস্থিত একটি সেনা গোয়েন্দা ক্যাম্পের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। হাসপাতাল মূলত বিস্ফোরণের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। আসল লক্ষ্য ছিল সামরিক অবকাঠামো, আর সেটাই সরাসরি ও নির্ভুলভাবে আঘাত করা হয়েছে।
গাভ-ইয়াম নেগেভ টেকনোলজি পার্কের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এটি বেন গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং আইডিএফ-সিফোরআই ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসের পাশে অবস্থিত।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম আগে জানিয়েছিল, এখানে আইডিএফ-এর একটি ক্যাম্পাস নির্মাণাধীন রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল ত হয় ছ ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর অন্তঃসত্ত্বা মায়ের আত্মহত্যার অভিযোগ
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় একটি ঘর থেকে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুর গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একই বাড়ির অন্য একটি কক্ষ থেকে পাওয়া গেছে শিশুটির অন্তঃসত্ত্বা মায়ের ঝুলন্ত মরদেহ। মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ এটিকে হত্যাকাণ্ড ও আত্মহত্যা বলে ধারণা করলেও, ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ এখনও নিশ্চিত হয়নি।
গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন হুজাইফা (৫) এবং তার মা সুমাইয়া আক্তার (২২)। সুমাইয়া অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন এবং আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর তার সিজারিয়ান ডেলিভারির তারিখ নির্ধারিত ছিল।
নিহত সুমাইয়ার শ্বশুর মোতালেব মুন্সি গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার সময় তিনি বাড়ির কাছেই ঘাস কাটতে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ বাড়িতে চিৎকার শুনে ছুটে এসে তিনি এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখেন। পরে পুলিশকে জানানো হয়।
তিনি দাবি করেন, তার ছেলে রমজান মুন্সি এবং পুত্রবধূ সুমাইয়ার মধ্যে সম্পর্ক ভালোই ছিল এবং তাদের মধ্যে কোনো পারিবারিক কলহ ছিল বলে তার জানা নেই।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। তারা জানান, দাম্পত্য জীবনে রমজান ও সুমাইয়ার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। রমজান মুন্সি কয়েক বছর সিঙ্গাপুরে প্রবাসে থাকার পর দুই বছর আগে দেশে ফিরে আসেন এবং বর্তমানে আবার বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
ঘটনার খবর পেয়ে ভাঙ্গা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইকবাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে কোনো পারিবারিক কলহের জেরে সুমাইয়া তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করে এবং এরপর নিজে আত্মহত্যা করেন।”
তিনি জানান, শিশুটিকে গলাকাটা অবস্থায় একটি কম্বলে মোড়ানো রাখা হয়েছিল। তার মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদীপ রায় জানান, মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। স্বামী রমজান বর্তমানে ফরিদপুরে রয়েছেন, তবে তার সঙ্গে এখনও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ওসি বলেন, “তদন্ত শেষ হলে এই ঘটনার পেছনের আসল কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে।”
ঢাকা/তামিম/এস