বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা কমিটিতে পদ স্থগিত থাকা যুগ্ম সদস্য সচিব মো. মারযুক আব্দুল্লাহসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ডাকাতির প্রস্তুতির ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। পটুয়াখালীর দুমকি থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ৬ জুন মামলাটি করেন। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয়েছে। জুলাই আন্দোলনের ঘটনা উল্লেখ করে মামলা বাণিজ্যের অভিযোগে ২২ মে মারজুকের পদ স্থগিত হয়।  

দুমকি থানায় মামলা সূত্রে জানা যায়, বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কের পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় ৬ জুন তল্লাশি চালায় পুলিশ। এ সময় দুটি মোটরসাইকেল কিছু দূরত্ব বজায় রেখে চলছিল। চেকপোস্টের কাছাকাছি পৌঁছালে সামনের মোটরসাইকেল চেকপোস্টে রেখে আরোহী তিনজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় শিপন ও মামুন নামে দু’জনকে আটক করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল, একটি ওয়াকিটকি, একটি ইলেকট্রিক শক ডিভাইস, একটি মোটরসাইকেল ও দুটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। 

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক ওই দু’জন জানায়, ‘পালানো তরুণের নামক মারযুক আবদুল্লাহ। তারা পেশাদার ডাকাত চক্রের সদস্য। তারা বিভিন্ন স্থানে গিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেয়।’ 

এ বিষয়ে দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জাকির হোসেন শুক্রবার রাতে সমকালকে বলেন, আটক দু’জনকে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পলাতক মারযুক আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 

এ বিষযে জানতে চাইলে মারযুক আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাংবাদিকরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। দুমকি পুলিশের সঙ্গে আমার মীমাংসা হয়ে গেছে।’

উল্লেখ, জুলাই আন্দোলনের সময়ে হামলার শিকার দাবি করে ৯ মে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন মারযুক। ১৪ দলের সমম্বয়ক আমির হোসেন আমুসহ বরিশাল ও ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও জনপ্রনিধিসহ ২৪৭ জনকে আসামি করা হয়। ৯ মাস আগের ঘটনা দেখিযে প্রশ্নবিদ্ধ মামলা এবং এ নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠায় তার পদ স্থগিত করেছে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

’৭১-কে ’২৪-এর মুখোমুখি না দাঁড় করানোর আহ্বান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

’৭১ ও ’২৪— বাংলাদেশের ইতিহাসে দুটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কিন্তু এ দুটি ঘটনাকে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে বিভাজনের রাজনীতি চালানোর অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এ ধরনের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলেছে, ’৭১ ও ’২৪ কখনোই একে অপরের পরিপন্থী নয়। বরং ১৯৪৭ সালে ভূখণ্ড অর্জন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা এবং ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি— এই তিনটি অধ্যায় একই ধারাবাহিক মুক্তিসংগ্রামের অংশ।

সংগঠনটি বলেছে, ‘মুজিববাদী সংবিধানের ফলে সৃষ্টি ফ্যাসিবাদের কবর রচিত হয়েছে ২০২৪-এর অভ্যুত্থানে। তাই ’৭১ ও ’২৪— উভয়ই আমাদের গৌরবের অংশ। এই সংগ্রামগুলোর প্রত্যেকটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শ্রদ্ধাভরে স্বীকার করে ও সমভাবে সম্মান করে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করে, ’৭১ ও ’২৪-কে মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রয়াস আসলে ‘শাপলা ও শাহবাগের বাইনারি’ ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা, যার মাধ্যমে আবারও আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক করে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়। অথচ ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ছিল মুজিববাদী শাসনব্যবস্থা ও বাহাত্তরের ত্রুটিপূর্ণ সংবিধানের ভিত্তিতে গঠিত দুর্বল রাষ্ট্র কাঠামোর বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সংগঠনটি বলেছে, ‘এ ধরনের অপরাজনীতি ছাত্র-জনতা কখনই মেনে নেবে না। আমরা জাতীয় স্বার্থ ও জনকল্যাণের পক্ষে রাজনীতির আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায়, কেউ যদি আওয়ামী লীগকে প্রাসঙ্গিক করার লক্ষ্যে এমন অপচেষ্টা চালায়, তাহলে ছাত্র-জনতার সঙ্গে নিয়ে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’

আরও পড়ুনবাম সংগঠনগুলোর ঘৃণা মিছিল, ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ