এখন প্রয়োজনের বাহন মোটরসাইকেল। যত্ন না নিলে মোটরসাইকেলের পারফরম্যান্স ধীরে ধীরে কমে আসে। শখ হোক বা প্রয়োজন হোক, নিজের মোটরসাইকেলের নিয়মিত যত্ন করা প্রয়োজন। যেকোনো মোটরসাইকেলের ভালো পারফরম্যান্স ও দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য নিয়মিত যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ অপরিহার্য। বাইক ভ্যালি ঢাকার ব্যবস্থাপক মো. আল-শাহিন বলেন, অন্য সব যানবাহন ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মতোই মোটরসাইকেলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
মোটরসাইকেলের যত্ন নিতে হবে নিয়মিত
প্রতিদিন পরিষ্কার করতে চেষ্টা করুন। মোটরসাইকেল চালানোর পর কাদা, ধুলা ও পানি মুছে ফেলুন। বিশেষ করে বর্ষাকালে মোটরসাইকেলের চেইন, চাকা ও নিচের অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে। নরম সাবান ও পানি ব্যবহার করে মোটরসাইকেল পরিষ্কার করুন। চেইন ও স্পোকের বিশেষ যত্ন নিন। ভেজা মোটরসাইকেল কখনোই ঢেকে রাখবেন না। বাইকে কোনো আঁচড় বা রং নষ্ট হলে তা দ্রুত মেরামত করুন। এতে মরিচা পড়া থেকে রক্ষা পাবে।
যন্ত্রকে বুঝতে হবে
শুধু চালালেই হবে না, মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন সম্পর্ক ধারণা রাখতে হবে। ইঞ্জিন অয়েল বাইকের ইঞ্জিনের প্রাণ। এটি ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখে, মসৃণভাবে চলতে সাহায্য করে। ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশকে লুব্রিকেট করে। বাইকের মডেল এবং ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পরপর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন। আপনার বাইকের জন্য উপযুক্ত ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন। ভুল গ্রেডের অয়েল ইঞ্জিনের ক্ষতি করতে পারে। নিয়মিত এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করুন। এয়ার ফিল্টার ইঞ্জিনে বিশুদ্ধ বাতাস সরবরাহ করে। রাস্তায় প্রচুর ধুলাবালু থাকায় এয়ার ফিল্টার দ্রুত নোংরা হয়ে যায়, তাই খেয়াল রাখতে হবে। এয়ার ফিল্টার নিয়মিত পরীক্ষা করুন। নির্দিষ্ট কিলোমিটার চালানোর পরপর ম্যানুয়ালে উল্লেখিত সময় অনুযায়ী এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করুন। নোংরা এয়ার ফিল্টার ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স কমিয়ে দেয়, ফুয়েল খরচ বাড়ায়।
সব দিকে নজর রাখুন
টায়ারের যত্ন নিন নিয়মিত। টায়ারের সঠিক বায়ুচাপ বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। কম চাপ বাইকের স্থিরতা কমিয়ে দেয় ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার টায়ারের এয়ার প্রেশার পরীক্ষা করুন। টায়ারে কোনো ফাটল বা ছিদ্র, ফোলা বা অস্বাভাবিক ক্ষয় আছে কি না, তা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। নিয়মিত ব্রেক সিস্টেমের যত্ন নিন। ব্রেক প্যাড ও ডিস্ক নিয়মিত পরীক্ষা করুন। ব্রেক প্যাড ক্ষয় হলে দ্রুত পরিবর্তন করুন। ডিস্ক ব্রেকযুক্ত বাইকের ক্ষেত্রে ব্রেক ফ্লুইডের স্তর পরীক্ষা করুন। প্রয়োজনে রিফিল করতে হবে। ব্রেক বেশি টাইট বা বেশি ঢিলা হওয়া কোনোটাই ভালো নয়। ব্রেক সঠিকভাবে অ্যাডজাস্ট করা আছে কি না, তা নিশ্চিত করুন। নিয়মিত চেইনের যত্ন নিন। বাইকের চেইন নিয়মিত পরিষ্কার করুন ও লুব্রিকেট করুন। বিশেষ করে বর্ষাকালে চেইন দ্রুত মরিচা ধরতে পারে। চেইন পরিষ্কার করতে কখনো পানি ব্যবহার করবেন না, এতে মরিচা ধরতে পারে। বেশি ঢিলা বা বেশি টাইট চেইন উভয়ই ক্ষতিকর।
সারা বছরের কথা মাথায় রাখুন
স্পার্ক প্লাগ নিয়মিত পরিষ্কার করুন। প্লাগের গ্যাপ (০.
নতুন মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে যা যা খেয়াল রাখতে হবে
নতুন মোটরসাইকেল কেনা মানেই এক নতুন উত্তেজনা। তবে এই সময়ে বাইকের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি বাইকের ভবিষ্যৎ কর্মক্ষমতা নির্ধারণ করে। মোটরসাইকেল বিক্রয় সাওয়ারী বিডি ডট কমের সেলস এক্সিকিউটিভ নাঈম হোসেন বলেন, নতুন বাইকের জন্য প্রথম ৫০০-১০০০ কিলোমিটার চালানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে উচ্চগতি বা হঠাৎ ব্রেকিং পরিহার করুন। ম্যানুয়ালে উল্লিখিত সময় বা কিলোমিটার অনুযায়ী নির্ধারিত সার্ভিসিং সেন্টার থেকে প্রথম সার্ভিসিং করিয়ে নিন। সাধারণত ৫০০-১০০০ কিলোমিটারের মধ্যে এটি করা হয়। প্রথম ৩০০ কিলোমিটার চালানোর পরে ইঞ্জিন ওয়েল বদলাতে হবে। সার্ভিসিংয়ের মাধ্যমে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন, ব্রেক চেক, চেইন অ্যাডজাস্টমেন্ট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ পরীক্ষা করতে হবে নিয়মিত বিরতিতে। ৩০০–৫০০–১০০০–১৫০০–২০০০ কিলোমিটার চালানোর পরপর পরীক্ষা করতে হবে। এটি বাইকের দীর্ঘায়ুর জন্য অপরিহার্য। প্রথম সার্ভিসিংয়ের পর ম্যানুয়াল অনুযায়ী সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন। নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের যন্ত্রপাতি ও সার্ভিস সেন্টার থেকে মোটরসাইকেল সার্ভিসিং ও মেরামতে গুরুত্ব দিন।
সঠিক যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ আপনার বাইকের জীবনকাল বাড়াতে সাহায্য করবে। মোটরসাইকেল নিরাপদ থাকলে আপনার রাইডিং অভিজ্ঞতা আনন্দদায়ক হবে। মোটরসাইকেলের যত্ন নিন, নিরাপদে থাকুন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর চ ল ন র পর র যত ন ন ন ট র পর র পর ক র জন য হ র কর প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
জার্মানিতে বসবাসরত শাবিপ্রবি’র সাবেক শিক্ষার্থীদের পুর্নিমিলনী অনুষ্ঠিত
পুরানো সেই দিনের কথা, ভুলবি কিরে হায়, ও সেই চোখের দেখা প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায় পুরনো দিনের কথা না ভোলা যায়, না ফিরে পাওয়া যায়। স্মৃতিকাতর মানুষ তবুও বারে বারে ফিরে যেতে চায় তাঁর সোনালী অতীতে, ফিরে পেতে চায় কাছের মানুষগুলোকে।
এ আকুলতা আরো তীব্র হয়ে ওঠে যখন মাতৃভূমি হাতের নাগাল থেকে ৮০০০ কিলোমিটার দূরে থাকে। তাই তো জার্মানিতে বসবাস করা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাবেক শিক্ষার্থীরা সুযোগ পেলেই একে অন্যের সাথে পুর্নিমিলিত হওয়ার আকুলতা প্রকাশ করেন।
এ চাওয়াকে সামনে রেখে গত ২রা আগস্ট জার্মানির মিউনিখ শহরে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো জার্মানিতে বসবাসরত শাবিপ্রবি’র সাবেক শিক্ষার্থীদের পুর্নিমিলনী। বেলা দুটোর দিকে দুপুরের খাবারের পরপরই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে জার্মানির বিভিন্ন প্রান্ত হতে ছুটে আসা শাবিপ্রবির অ্যালামনাইদের অনুষ্ঠানে স্বাগত জানানোর মাধ্যমে শুরু হয় মূল পুর্নিমিলনী।
এ পর্বে মঞ্চে বক্তৃতা রাখেন সংগঠনের বর্তমান কার্যকরী সভাপতি মামুন রশীদ, এবারের পুর্নিমিলনী অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির সভাপতি মোঃ মাহাদী হাসান, এবং গতবারের পুর্নিমিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির সভাপতি গোলাম হাফিজ খান।
শুরুতেই শাবিপ্রবি ও এর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এক কিলো’র স্মৃতিচারণের মাধ্যমে শাবিপ্রবি’র সাবেক শিক্ষার্থীরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। শাবিপ্রবিতে কাটানো তাদের সোনালী সে অতীত ফিরে পেতে চাওয়ার ব্যাকুলতার পাশাপাশি উঠে আসে নানা চমকপ্রদ ঘটনাও যা হাসি-কান্নার রোল বইয়ে দেয় অংশগ্রহনকারীদের মাঝে।
এ পর্বের পর ডঃ নিধু লাল বণিক শাবিপ্রবি অ্যালামনাই সমিতির জন্য প্রস্তুত করা নতুন ওয়েবসাইট এবং সংবিধান উপস্থাপন করেন। এ উপলক্ষে তিনি এ দুটি প্রোজেক্টের মাধ্যমে শাবিপ্রবি অ্যালামনাইদের সুসংগঠিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সংক্ষিপ্ত চা বিরতির পর অনুষ্ঠান পুনরায় শুরু হয়। শুরুতেই অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের নতুন অ্যাডভাইজারি ও এক্সিকিউটিভ কমিটির ঘোষণা দেন ডঃ নিধু লাল বণিক।
১১ সদস্যের অ্যাডভাইজারি কমিটিতে নবীন প্রবীনের সম্মীলন ঘটে। আর এক্সিকিউটিভ কমিটির জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিপুল ভোটে পরবর্তী দু বছরের জন্য নাদেরা সুলতানা তানি প্রেসিডেন্ট এবং আদনান আহমেদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
নতুন কমিটির সদস্যদের স্বাগত জানিয়ে বরণ করে নেন পুরাতন কমিটির সদস্যগণ। এরপরপরই শুরু হয়ে যায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গেমস। এতে বড়দের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করে শাবিপ্রবি অ্যালামনাইদের শিশুসন্তানেরা।
সকলের উপস্থিতি এবং অংশগ্রহণে মুহুর্তেই অনুষ্ঠানস্থল আনন্দের এক মহামিলনে রূপান্তরিত হয়। এ অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে সমবেত অতিথিদের মধ্য থেকে দৈবচয়নের মাধ্যমে কিছু অতিথিদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয় নির্ধারিত কিছু করে দেখাতে।
অতিথিদের পারফরম্যান্স সকলকে নির্মল বিনোদন দেয় যার ভিত্তিতে পরবর্তীতে দর্শকের ভোটে দুজন অতিথিকে তাদের পারফরম্যান্সের জন্য পুরষ্কৃত করা হয়।
সবশেষে সবাইকে নিয়ে সম্মিলিত গান পরিবেশনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্ব শেষ হয়।
এরপর পরবর্তীপুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের ভেন্যু হিসেবে এসেনকে নির্বাচন করা হয় এবং সবাইকে ধন্যবাদ
জ্ঞাপন করে এই বছরের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
২০২৭ এ আবার মিলিত হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে সকল অংশগ্রহণকারী নিজ নিজ ঠিকানায় ফিরে যান।