লাল পতাকা দেখিয়ে দুই দফা ট্রেন আটকালেন এলাকাবাসী, স্টেশন চালুর দাবি
Published: 23rd, June 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরের সাতখামাইর স্টেশনের কার্যক্রম পুনরায় চালু এবং নিয়মিত ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে ট্রেন থামিয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ও সকাল ১০টা ২৬ মিনিটে দুই দফা ট্রেন থামিয়ে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
‘সুবিধাবঞ্চিত এলাকার সর্বস্তরের জনগণ’–এর ব্যানারে সাতখামাইর স্টেশন এলাকায় এই কর্মসূচিতে অংশ নেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ সমাজের সব স্তরের লোকজন। তাঁরা লাল রঙের পতাকা দেখিয়ে সকাল ১০টা ২৬ মিনিট থেকে ১০টা ৩৭ মিনিট পর্যন্ত ১১ মিনিট নেত্রকোনার মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেন আটকে রাখেন। এর আগে ঢাকাগামী জামালপুর কমিউটার ট্রেন সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে ৯টা ৪২ মিনিট পর্যন্ত ১২ মিনিট আটকে রাখা হয়। প্রত্যেকবার ট্রেন থামিয়ে সেখানে দাবির পক্ষে মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।
মানববন্ধন শেষে সমাবেশে স্টেশনটি পুনরায় চালু করা, পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ, আন্তনগর ট্রেন মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ও দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থাসহ স্টেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি তুলে ধরা হয়। একই দিন রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) বরাবর একটি স্মারকলিপিও পাঠিয়েছেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে জহিরুল আকন্দ নামের একজন বলেন, ট্রেনের বিরতির জন্য স্টেশনের অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। অবিলম্বে তাঁদের দাবি পূরণ করতে হবে। দাবি পূরণ না হলে রেলপথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে। নূরুল ইসলাম নামের একজন বলেন, তাঁরা গত শুক্রবার ও শনিবার বিকেলেও ট্রেন আটকে একই দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। ১০ থেকে ১২টি গ্রামের মানুষের এই দাবি পূরণে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে তাঁরা আরও বড় কর্মসূচি দেবেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল সড়কের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্টেশনের মধ্যে সাতখামাইর ছিল একটি। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের ব্যবসা ছিল রেলপথ ঘিরে। জমজমাট ছিল স্টেশন ও আশপাশের বাজার। কিন্তু ১৫ বছর আগে স্টেশনের কার্যক্রম প্রায় বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরপর সাত বছর আগে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের ৫৯টি বন্ধ রেলস্টেশনের সঙ্গে এটিও চালু করা হয়। কিন্তু এক বছরের মাথায় এর কার্যক্রম আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শ্রীপুর রেলস্টেশন মাস্টার শামীমা জাহান বলেন, ‘সাতখামাইর রেলস্টেশনে ট্রেন থামানো ও অন্যান্য দাবিতে এলাকার লোকজন মানববন্ধন করছেন বলে জেনেছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যার দ্রুত বিচার দাবিতে জবিতে মানববন্ধন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহকে শ্বাসরোধ করে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন মিল্লাতিয়ানস সোসাইটি অব জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৬ আগস্ট) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেয় সংগঠনটির নেতাকর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, সাজিদ সাজিদ’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যা: তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি
নেত্রকোনায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সাজিদকে হত্যা করে ঘটনাকে পানিতে ডুবে মৃত্যু হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতার বড় উদাহরণ। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
তারা আরো বলেন, ইবি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি প্রাঙ্গণ সিসিটিভির আওতায় আনা ও নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করতে হবে। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।
মিল্লাতিয়ানস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, “গত ১৭ জুলাই সাজিদকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে, যা আমাদের গভীরভাবে মর্মাহত করেছে। যদি ইবি প্রশাসন তালবাহানা করে, তবে সেটি তাদের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।”
সভাপতি তারেকুল ইসলাম বলেন, “আজ আমরা কোনো ব্যক্তির পক্ষ অবলম্বন করছি না, দাঁড়িয়েছি একজন শহীদ ভাইয়ের হত্যার বিচার দাবিতে। একজন সন্তানহারা মায়ের সন্তানের খুনের বিচার চাই। আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
গত ১৭ জুলাই বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের ও তামিরুল মিল্লাত মাদরাসার সাবেক শিক্ষার্থী সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ৩ আগস্ট প্রাপ্ত ভিসেরা রিপোর্টে সাজিদকে শ্বাসরোধ করা হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়। তার মৃত্যুর সময় ছিল ১৬ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ৩টা (আনুমানিক)।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী