আগামী জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ন্যূনতম বিশেষ সুবিধা ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন সংশোধন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এমপিওভু্ক্ত শিক্ষক–কর্মচারী, যৌথ বাহিনীর নির্দেশনাবলীর আওতায় বেতন–ভাতা ও পেনশনভোগী এবং জুডিশিয়াল সার্ভিসকে বিশেষ সুবিধার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করে পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 

সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এসব প্রজ্ঞাপন জারি করে। আগামী ১ জুলাই থেকে যা কার্যকর হবে।  

অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট ঘোষণার পরদিন ৩ জুন সরকারি চাকরিজীবীদে জন্য বিশেষ সুবিধার প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ বিভাগ। 
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-৯ পর্যন্ত ১০ শতাংশ এবং গ্রেড-১০ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। 

এতে আরও বলা হয়, জাতীয় বেতনকাঠামোর আওতাভুক্ত সরকারি (বেসামরিক), স্ব-শাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও পুলিশ বাহিনীতে নিয়োজিত কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের (পুনঃস্থাপনকৃত) জন্য এ বিশেষ সুবিধা কার্যকর হবে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বাড়ানো হলে ১১তম গ্রেডের বেতন বাড়ে ৮৭৫ টাকা। ১২তম গ্রেডের বাড়ে ৬৯৫ টাকা। এভাবে ১৩তম গ্রেডের ৬৫০ টাকা, ১৪তম গ্রেডের ৫৩০ টাকা, ১৫তম গ্রেডের ৪৫৫ টাকা, ১৬তম গ্রেডের ৩৯৫ টাকা, ১৭তম গ্রেডের ৩৫০ টাকা, ১৮তম গ্রেডের ৩২০ টাকা, ১৯ তম গ্রেডের ২৭৫ টাকা ও ২০ তম গ্রেডের ২৩৭ টাকা বেতন বাড়ে। এসব কর্মচারীদের বেতন অনেক কম হওয়ায় সরকারের প্রজ্ঞাপনে সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা বেতন বাড়ানোর ঘোষণা ছিল।

তবে রোববার ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদনের সময় তা বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। সে সিদ্ধান্তের আলোকেই আজ সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০০ টাকা বিশেষ সুবিধা বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা হয়।

এদিকে রোববার পৃথক আরেকটি প্রজ্ঞাপন করে করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদেরও বিশেষ সুবিধার আওতায় আনা হয়। এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি মাদ্রাসা ও বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাতীয় বেতনস্কেলের তুলনীয় গ্রেড-১ ও তদূর্ধ্ব থেকে গ্রেড-৯ পর্যন্ত গ্রেডভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের আগামী ১ জুলাই থেকে মূল বেতনের ১০ শতাংশ এবং গ্রেড-১০ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত গ্রেডভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের ১৫ শতাংশ বেতন বাড়বে। তবে বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকা হবে।

আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যৌথ বাহিনী নির্দেশাবলীর (জেএসআই) আওতায় বেতন–ভাতা গ্রহণকারী এবং পেনশনভোগীরা এ সুবিধা পাবেন। এ সুবিধা হবে জেএসআই–১/২০১৬ অনুযায়ী ওয়ারেন্ট অফিসার বা সমতূল্য পদবী হতে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের সব সদস্য ও ‘ধর্মীয় পরামর্শদানকারী কর্মকর্তারা মূল বেতনের ১০ শতাংশ এবং সার্জেন্ট ও সমতুল্য পদবীর ও তদনিম্ন পর্যায়ের কর্মচারীরা মূল বেতনের ১৫ শতাংশ। তবে বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকা হবে। পেনশন পুনঃস্থাপনকৃত কর্মচারীরা সরকার হতে পেনশন গ্রহণকারী যাদের মাসিক পেনশন ১৭ হাজার ৩৮৯ টাকা ও তদূর্ধ্ব তাদের ১০ শতাংশ এবং যাদের মাসিক পেনশন ১৭ হাজার ৩৮৮ টাকা বা এর কম তাদের ১৫ শতাংশ বাড়বে। তবে বিশেষ এ সুবিধা সর্বনিম্ন ৭৫০ টাকা হবে।

এছাড়া জুজিশিয়াল সার্ভিসকে ও সুবিধার আওতায় এনে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৬ এর আওতায় বেতন–ভাতা গ্রহণকারী এবং পেনশনভোগকারীরা মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা পাবেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র চ কর প নশনভ গ র আওত য় প নশন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশাল ব্ল্যাকহোলে বিস্ময়কর আলোকচ্ছটার খোঁজ

প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের আলোর সমান শক্তিশালী এক ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার বা কৃষ্ণগহ্বর আলোকচ্ছটার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ধারণা করা হচ্ছে, এটি সবচেয়ে বড় আলোকচ্ছটা। নতুন পর্যবেক্ষণ করা ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারকে এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বৃহৎ ও সবচেয়ে দূরবর্তী বলা হচ্ছে। এর অবস্থান পৃথিবী থেকে এক হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। আলোকচ্ছটার শক্তি প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের সমান।

একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল বৃহৎ কোনো নক্ষত্রকে গিলে ফেলছে বলে এই আলোকচ্ছটা তৈরি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ম্যাথিউ গ্রাহাম বলেন, ‘এই ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারটি এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে দূরবর্তী। আমাদের সূর্যের ভরের চেয়ে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের একটি বিশাল নক্ষত্র অতিভারী ব্ল্যাকহোলের খুব কাছাকাছি চলে আসছে বলে এমন ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নক্ষত্রকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে বলে বিশাল পরিমাণ শক্তি নির্গত হচ্ছে।’ বিজ্ঞানী গ্রাহামের মতে, সেখানে বিশাল বিস্ফোরণের তীব্রতা ও স্থায়িত্বের কারণে এত বিশাল ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নিয়মিতভাবে নিকটবর্তী পদার্থকে গ্রাস করে থাকলেও এমন বিশাল মাত্রার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। এমন বিশাল ফ্লেয়ার আগে যা দেখা গেছে, তার তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। ফ্লেয়ারটি সর্বোচ্চ শিখরে থাকার সময় এখন পর্যন্ত দেখা যেকোনো ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। দুটি মহাজাগতিক বস্তুর বিশাল আকারের কারণে এমনটা হচ্ছে। সূর্য থেকে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের নক্ষত্রকে অতিভারী ব্ল্যাকহোল গ্রাস করেছে। ব্ল্যাকহোলের ভর সূর্যের ভরের ৫০০ মিলিয়ন গুণ বেশি বলা যায়। সাত বছরের বেশি আগে শুরু হওয়া এই বিস্ফোরণ সম্ভবত এখনো চলমান।

প্রাথমিকভাবে ২০১৮ সালে তিনটি স্থলভিত্তিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জরিপের সময় ফ্লেয়ারের খোঁজ মেলে। তখন এটিকে ব্যতিক্রমী উজ্জ্বল বস্তু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০২৩ সালে হাওয়াইয়ের ডব্লিউ এম কেক অবজারভেটরি পর্যবেক্ষণ শুরু করে। বিজ্ঞানী গ্রাহাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার ব্ল্যাকহোলের আচরণ সম্পর্কে নতুন তথ্য দিচ্ছে। প্রচলিত ধারণা অনুসারে মহাবিশ্বের বেশির ভাগ গ্যালাক্সির মাঝখানে একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল রয়েছে। এখন আমরা আরও গতিশীল পরিবেশ দেখছি। সুপারম্যাসিভ ধরনের ব্ল্যাকহোলকে অ্যাকটিভ গ্যালাকটিক নিউক্লিয়াস বলা হচ্ছে। এটিকে জে২২৪৫+৩৭৪৩ নামে নামকরণ করা হয়েছে।’

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশাল ব্ল্যাকহোলে বিস্ময়কর আলোকচ্ছটার খোঁজ