আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিসি ক্যামেরাসহ নির্বাচনের আনুষঙ্গিক খরচ মেটাতে কানাডাসহ উন্নয়ন অংশীদার রাষ্ট্রগুলোর কাছে আর্থিক অনুদানের আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজের খরচের দায়িত্ব সরকারের। সেই হিসাবে সরকারকে সহযোগিতার জন্যই কানাডার কাছে এই আবেদন জামায়াতের।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকায় কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং দলটির আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করেন। সেখানে কানাডাকে এ আহ্বান জানায় জামায়াত।

বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো.

তাহের সাংবাদিকদের জানান, ‘সিসি ক্যামেরাসহ নির্বাচনের আনুষঙ্গিক খরচ মেটাতে মোটা অঙ্কের বাজেট দরকার। এ ব্যাপারে আমরা কানাডাসহ উন্নয়ন অংশীদার বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর কাছে আর্থিক অনুদানের আহ্বান জানিয়েছি। (কানাডার) হাইকমিশনার আর্থিক অনুদানের বিষয়টি জাতিসংঘের মাধ্যমে সমন্বয় করার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’

আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘কানাডিয়ান হাইকমিশনার ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের বিষয়ে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। তাদের জানিয়েছি, জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক দলগুলো যৌথভাবে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংস্কারের বিষয়গুলো নিয়ে একাধিকবার সংলাপে বসেছি।’

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠকে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, সেগুলো কানাডার হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে বলে জানান মো. তাহের। যেমন একই ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দুইবারের বেশি না রাখা, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট, নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে তাতে প্রবাসীদের অন্তর্ভুক্তকরণ, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন ইত্যাদি।

ইতিমধ্যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো বেশ কয়েকটি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে এখনো ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি বলে হাইকমিশনারকে জানিয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমির। তিনি বলেন, ‘আমরা হাইকমিশনারকে জানিয়েছি, যদি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়গুলোতে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে পরামর্শ দিয়েছি। সরকারকে বলেছি, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা দরকার। আর কেউ যাতে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে আমাদের কনসার্ন অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়েছি।’

মো. তাহের বলেন, কানাডা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারিগরিসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার হবে বলে বৈঠকে আশা করা হয়।

বৈঠকে কানাডার হাইকমিশনারের সঙ্গে সিনিয়র পলিটিক্যাল অফিসার সিওভান কের আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে জামায়াত আমিরের সঙ্গে ছিলেন দলের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও এহসানুল মাহবুব জুবায়েরসহ কয়েকজন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঐকমত য র জন য সরক র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য হয়েছে: জহির উদ্দিন স্বপন

বিএনপির চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া উপজেলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে একটি জাতীয় ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় সংকটের বিকল্প কোনো সমাধান নেই। কিন্তু একটি চিহ্নিত মহল এই ঐকমত্যের বিপরীতে দাঁড়িয়ে নির্বাচন তথা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বানচালের অপচেষ্টা করছে।

ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় মঙ্গলবার দুপুরে বিজয় মিছিল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জহির উদ্দিন এ কথাগুলো বলেন।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে জহির উদ্দিন বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অনুকরণে বিএনপির কেউ যদি গডফাদার সংস্কৃতির প্রবর্তন করতে চায় তাদের চিহ্নিত করে দল এবং আইনের মুখোমুখি করার জন্য আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নকে আমরা মোকাবিলা করবই।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহ, সদস্যসচিব মো. মিজানুর রহমান খান, যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন অঙ্গরাজ্যের নিউ ইংল্যান্ড সিটি বিএনপির সভাপতি সৈয়দ বদরে আলম প্রমুখ।

বিজয় মিছিল উপলক্ষে সকাল থেকে গৌরনদী শহীদ মিনার চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুপুরে শুরু হয় বিজয় মিছিল। মিছিলে গৌরনদী-আগৈলঝাড়া দুই উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। এতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে।

এক নেতার মৃত্যু, অসুস্থ ১০

বিএনপির কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মিরাজ ফকির (৪৬) নামের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে আরও অন্তত ১০ জন নেতা-কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের গৌরনদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সভায় যোগ দিতে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়ন থেকে অন্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ছোট যানবাহনে রওনা হন স্থানীয় বিএনপি নেতা মিরাজ ফকির। পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দ্রুত গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. মুনীম জানান, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মিরাজের মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

মিরাজ আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি তিনি রাজিহার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন।

মিরাজ ফকিরের মৃত্যুতে জহির উদ্দিন শোক প্রকাশ করে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

একই দিন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রচণ্ড গরম ও রোদে অন্তত ১০ জন নারী ও পুরুষ নেতা-কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসক মুনীম জানান, অসুস্থ সবার চিকিৎসা দেওয়া হয় বহির্বিভাগে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আগামী সপ্তাহে আবার আলোচনায় বসছে ঐকমত্য কমিশন
  • জুলাই ঘোষণাপত্রে ব্যক্ত আকাঙ্ক্ষাকে জাতীয় সনদে রূপ দিতে হবে: জেএসডি
  • জুলাই ঘোষণাপত্রে আবারও বিজয় বেহাত হওয়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন
  • এক বছরে গণ-অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা কতটা পূরণ হলো
  • জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে আগামী নির্বাচন: জামায়াত
  • নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন
  • ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য হয়েছে: জহির উদ্দিন স্বপন