রথযাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিএমপিতে সমন্বয় সভা
Published: 24th, June 2025 GMT
আসন্ন রথযাত্রা ও উল্টো রথযাত্রা উপলক্ষে রাজধানীর নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমন্বয় সভা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সোমবার বেলা ১১টায় ডিএমপি সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
সভায় জানানো হয়, ২৭ জুন রথযাত্রা ও ৫ জুলাই উল্টো রথযাত্রা উপলক্ষে ঢাকা শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রথযাত্রায় থাকবে টহল দল, সিসিটিভি ক্যামেরা, ফুট পেট্রোল, রুফটপ পার্টি, হোন্ডা মোবাইল টিম, গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), সাদাপোশাকে গোয়েন্দা, সোয়াট, বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও ট্রাফিক পুলিশ।
ডিএমপি জানায়, সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে রথযাত্রা নির্ধারিত রুট ও সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। নামাজ ও আজানের সময় মাইক ব্যবহার না করা, ব্যাগ-পোঁটলা নিয়ে রথযাত্রায় অংশ না নেওয়া, নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং সন্দেহজনক ব্যক্তি বা বস্তু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানোর অনুরোধ জানানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঢাকায় রথযাত্রা একটি বড় ধর্মীয় শোভাযাত্রা। শুক্রবার বিকেলে জনসমাগম বেশি হয়, তাই সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই উৎসব সুন্দর ও নিরাপদভাবে সম্পন্ন হবে।
সভায় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। সভায় ডিএমপির বিভিন্ন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, যুগ্ম ও উপপুলিশ কমিশনার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন, গোয়েন্দা সংস্থাসহ রথযাত্রা উদ্যাপন কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনা একদিন বিচারের মুখোমুখি হবেন: প্রেস সচিব
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিন না একদিন দেশে ফিরে আসবেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচারের মুখোমুখি হবেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো নিয়ে কোনো উদ্যোগ নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কথা বলেছেন। আমাদের সব চেষ্টাগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচারের সম্মুখীন করা। আমরা চাই তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আছে সেটার ন্যায়বিচার তিনি যাতে পান। আমরা সেটা চাই। এটাই বর্তমান সরকারের অন্যতম সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
তিনি বলেন, “আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এসেছে এবং বিবিসি যে প্রতিবেদন করেছে সেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ওনার রোলটা কি ছিলো। কিভাবে মরণাস্ত্র ব্যবহার করতে আন্দোলনকারীদের খুন করার জন্য তিনি অর্ডার করছেন। এই বিষয়গুলো এখন সারা বিশ্ব জানে তিনি কি করেছেন।”
প্রেস সচিব বলেন, “আমরা মনে করি এসব বিষয় যত সামনে আসবে, তার ওপর তত বেশি চাপ তৈরি হবে। যাতে তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। আমরা আশা করি, একদিন না একদিন তিনি ফিরে আসবেন এবং এই বিচারের সম্মুখীন হবেন।”
৮ আগস্ট সরকারের এক বছর হচ্ছে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, প্রশাসন ভেঙে পড়া, মোটাদাগে বড় বড় জায়গায় সরকারের একটু ব্যর্থতা দৃশ্যমান, যেটা মানুষ বলছে, গণমাধ্যমেও আসছে-এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রেস সচিব বলেন, “এ বিষয়ে আমি একমত নই। আমরা কিছুদিন আগে গত সাড়ে পাঁচ বছরের অপরাধের পুরো পরিসংখ্যান দিয়েছি। ওই পরিসংখ্যান কিন্তু প্রমাণ করে না আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি একটা-দুইটা খুব সেনসেশনাল মার্ডার হলে অনেকে ভাবছেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বুঝি ভেঙে পড়ছে।”
তিনি বলেন, “আমরা পুলিশ হেড কোয়ার্টারকে বলে দিয়েছি পুরো স্বচ্ছ থাকতে। তারা প্রতি মাসের পরিসংখ্যান দিচ্ছে। জুলাই মাসের পরিসংখ্যানটা তাদের কাছ থেকে নেন। নিজেরাই তুলনা করেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিটা কি!”
প্রেস সচিব বলেন, “আমরা যখন বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলি তারা বলেন- তারা যে পরিসংখ্যানটা দেখেন তারা মনে করেন বাংলাদেশ একটা স্বল্প অপরাধ প্রবণ দেশ। আপনারা যেটা বলছেন সেটা অনেকটা টকশোতে যারা এই ধরনের কথা বলেন সেটাই প্রতিফলন হচ্ছে।”
শফিকুল আলম বলেন, “প্রশাসন ভেঙে পড়লে আমাদের এত অর্জন হতো? গত বছর শেখ হাসিনা যখন পালিয়ে যান তখন খাদ্যের মজুদ ছিল ১৮ লাখ টন। এখন আমাদের মজুত ২১ লাখ টন। আমরা গত এক বছরে চার বিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছি। এক বছরে আমরা মূল্যস্ফীতি নামিয়ে এনেছি। আমরা ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল করেছি। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। এই কাজগুলো কারা করেন? আমলারাই তো করেন। এসব অর্জন কি প্রশাসন ভেঙে পড়ার কারণে হয়? এই প্রশাসন দিয়ে তো এই অর্জন হয়েছে। পরিসংখ্যান নিয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়ে আপনি দেখান কোথায় কোথায় ভেঙে পড়েছে। গত বছর আমরা ছয় ছয়টি বন্যা মোকাবিলা করেছি, মাঠ প্রশাসন এ বন্যার মোকাবিলা করেছে।”
তিনি বলেন, “অনেকে বলেছেন এই দুর্বল সরকারের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়। আমাদের যে টিম, আজকে সবাই তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন।”
পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, “খুনের হিসাবের মধ্যেই সেটার প্রতিফলন রয়েছে। আর অন্তর্বর্তী সরকার হওয়ায় সশস্ত্র বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/এএএম/এসবি