পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিতে কোটা প্রথা চালু রাখার প্রতিবাদে মানববন্ধন করছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

এ কোটা প্রথা বহাল জুলাই গণঅভ্যত্থানের শহীদদের সঙ্গে বেইমানির শামিল উল্লেখ করে অনতিবিলম্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সব ধরনের অযৌক্তিক কোটা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তারা। একইসঙ্গে কোটা প্রথা বাতিল না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা লাগানোর হুঁশিয়ারি দেন তারা।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

চাকসুর গঠনতন্ত্র সংস্কারের দাবি ইনসানিয়াত বিপ্লবের

জবির আবাসিক হল ও ২ বিভাগের নাম পরিবর্তন

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘কোটার প্রহসন দূর করতে হবে’, ‘প্রশাসন কি আবারো রক্ত দেখতে চায়’, ‘এই কোটার জন্যই কি রক্ত ঝরালাম’, ‘রক্তাক্ত জুলাই এর সঙ্গে বেইমানি’, ‘কাদের স্বার্থ রক্ষায় এখনো কোটা’, ‘কোটা বিলুপ্তিতে আবারো রক্ত দেব’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, যে কোটার বিরুদ্ধে আমাদের এত লড়াই, সেই কোটা এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। যে কোটার জন্য আমাদের ১৪ শতাধিক ভাই-বোন শহীদ এবং ২২ হাজারের বেশি ভাই-বোন আহত হয়েছেন, সেই কোটা থাকতে পারে না। কোটা প্রথা বহাল রেখে গুচ্ছ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শহীদদের সঙ্গে গাদ্দারি করেছে, শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছে। এক কথায় তারা জুলাই বিপ্লবকে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে খুব দ্রুত ভর্তিতে কোটাপ্রথা বিলোপের আহ্বান করছি। অন্যথায় কোটাপ্রথার বিরুদ্ধে আবারো আমরা রাজপথে নামবো।

তারা আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার কোটা বন্ধের যৌক্তিক দাবি জানানোর পরও বর্তমান প্রশাসন কেনো দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে? প্রশাসন কি এতটাই অযোগ্য ও দুর্বল যে, এমন একটি অনৈতিক কোটা প্রথা বিলুপ্ত করার সাহসটুকুও তাদের নেই? নাকি কোটার মতো এই বাটপারি পদ্ধতির সুবিধাভোগী কোনো শক্তিশালী চক্রের কাছে তারা জিম্মি? তাদের এই রহস্যজনক ভূমিকা আজ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মনে তীব্র ক্ষোভ ও অনাস্থার জন্ম দিয়েছে। তারা কি আসলেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে, নাকি কোনো অদৃশ্য শক্তির স্বার্থ রক্ষা করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য? অনতিবিলম্বে অযৌক্তিক কোটা বাতিল না করলে আমরা কঠোর আন্দোলন করতে বাধ্য হব।

মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “আমাদের জুলাই অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল কোটা প্রথার বিরুদ্ধে। কিন্তু এতগুলো ভাইয়ের শাহাদত বরণের পরও এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কিভাবে কোটা প্রথা বহাল থাকে? শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা রেখে অন্য কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কোটা বাতিল করা না হলে আগামীদিনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন বন্ধ করে দেব।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

পোষ্য কোটা ইস্যুতে সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ওপর হামলা ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আজ সোমবার বেলা ১১টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে তাঁরা এ দাবি জানান। সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম বর্জন করে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালন করা হচ্ছে।

মানববন্ধনে শিক্ষক-কর্মকর্তারা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। তিনটি দাবি হলো—শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে; যাঁদের ছাত্রত্ব শেষ, তাঁদের সনদ বাতিল করতে হবে এবং যাঁরা রাকসু নির্বাচনে প্রার্থী, তাঁদের প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ছাত্র নামধারী কিছু সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যত দিন পর্যন্ত শাস্তি দৃশ্যমান না হবে, তত দিন আন্দোলন চলবে।

ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সালাহউদ্দিন আম্মার ও তাঁর সহযোগীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার নীলনকশা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। শনিবার শিক্ষকদের যেভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে, আমরা যদি এর সুষ্ঠু বিচার না করতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আমাদেরও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘গত নয় মাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রহসনের অনেক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যার একটিও আলোর মুখ দেখেনি। তাই আমরা আর ওই সিদ্ধান্তে ক্ষান্ত হচ্ছি না। শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখেই আমরা ক্ষান্ত হব।’

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক দিল-আরা হোসেন বলেন, ‘আমার সহকর্মী অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন একজন সহনশীল মানুষ। তাঁর ওপর হামলাটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। আমি তাঁর বিভাগের সভাপতি হিসেবে এসব ছাত্র নামের সন্ত্রাসীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

এদিকে কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে আজ সোমবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস-পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। অধিকাংশ দোকানপাটও বন্ধ।

এর আগে গতকাল পোষ্য কোটা নিয়ে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় কোটা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। পাশাপাশি শনিবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ৫ সদস্যের একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি এবং নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভাঙ্গায় সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে তৃতীয় দিনের মতো মানববন্ধন
  • রাবিতে চলমান শাটডাউনে প্রতিবাদে শিবিরের মানববন্ধন
  • এবার সাত কলেজে একযোগে মানববন্ধন করলেন শিক্ষকেরা
  • মির্জাগঞ্জে দুই চিকিৎসকের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ
  • পাবনায় বিএনপি নেতার চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
  • রাবিতে বহাল থাকছে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন
  • রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন’ কর্মসূচির ঘোষণা জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের
  • রংপুরে সাংবাদিককে হেনস্থার প্রতিবাদে মানববন্ধন, থানায় মামলা
  • ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন