জাতীয় ফল মেলার শেষ দিনে গত শনিবার মেলা শেষ হওয়ার পরপরই দেখা যায় বিশৃঙ্খল এক পরিস্থিতি। রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সামনে খোলা মাঠে অনুষ্ঠিত এই মেলায় দর্শনার্থীরা হঠাৎ করে লুটপাট শুরু করে দেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশ কয়েকটি স্টল। বিশেষ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিশাল স্টলে থাকা বহু প্রজাতির ফল মুহূর্তেই লুট হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার পর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শেষ হলেও মেলা প্রাঙ্গণে অনেক দর্শনার্থী তখনও অবস্থান করছিলেন। এ সময় মঞ্চ ও প্রদর্শনী স্টলের সামনে সাজিয়ে রাখা দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির ফল দেখতে দেখতে হঠাৎ কিছু মানুষ এগিয়ে গিয়ে ফল নিয়ে যেতে শুরু করেন। এতে অন্যান্য দর্শনার্থীরাও হুমড়ি খেয়ে পড়ে লুটপাটে অংশ নেন।

লুটপাটের একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্টলের ফল সংগ্রহের জন্য ভিড় করছেন শতাধিক মানুষ। এছাড়ার মেলার সামনে শাপলা ফুল আকৃতির ডিসপ্লেতে সাজানো নানা রকম ফল লুট হচ্ছে।

কেউ ডাব, কেউ আনারস, কেউ আম, কেউ ড্রাগন ফল ব্যাগে ভরছেন। এ সময় মেলায় কর্মরত কর্মকর্তারা বাধা দিলেও কেউ তোয়াক্কা করেননি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্টলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বহু প্রজাতির ফলের সংগ্রহ ছিল আমাদের স্টলে। গবেষণা ও প্রদর্শনীর জন্য এসব ফল সাজানো হয়েছিল। অথচ একদল মানুষ আচমকা এসে সব নিয়ে গেল। আমরা বাধা দিলেও কেউ শুনেননি।

অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এক কর্মী বলেন, মেলার শেষ সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি কমে গিয়েছিল। দর্শনার্থীর সংখ্যা তখনও অনেক বেশি ছিল। সেখান থেকেই সুযোগ নিয়ে কিছু লোক লুটপাট শুরু করে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি স্টল ও ডিসপ্লেতে থাকা ফলগুলো এতিমখানায় দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব ফল দর্শনার্থীরা নিয়ে গেছেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ বলছেন, ‘এটি চরম অনুশোচনাজনক ও লজ্জাজনক ঘটনা’, আবার কেউ বলছেন, ‘মেলায় যাওয়া মানেই উপহার নিয়ে ফেরা—এমন মনোভাব মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, ১৯ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী ফল মেলার আয়োজন করে কৃষি মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, মেলা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশি ফলকে তুলে ধরা, সচেতনতা বাড়ানো এবং ফল চাষে আগ্রহী করা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফল ল টপ ট

এছাড়াও পড়ুন:

শেষ জীবনে সন্তানেরাও ছেড়ে চলে যান আলোচিত এই নায়িকার

রাজ কাপুর আর যশ চোপড়ার ছবিতে ছিলেন তিনি; অভিনয় করেছেন রাজেশ খান্না, দেব আনন্দদের মতো তারকাদের সঙ্গে। অথচ ব্যক্তিজীবনে তিনি হয়ে পড়েছিলেন অবহেলিত—সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর একাই কাটিয়েছেন জীবনের শেষ ১২ বছর।
অভিনেত্রী অচলা সচদেবের চলচ্চিত্রজীবন যেন সিনেমার মতোই। দেব আনন্দ, রাজ কাপুর, যশ চোপড়া, রাজেশ খান্না—বলিউডের সেরা–সেরাদের সঙ্গে একের পর এক হিট ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’-তে কাজলের দাদির চরিত্রে তাঁকেই দেখা গিয়েছিল। আবার ১৯৬৫ সালের ‘ওয়াক্ত’ ছবির অমর গান ‘আয়ে মেরি জোহরা জবীন’-এর নায়িকাও ছিলেন অচলা। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে অন্য অনেক অভিনেত্রীর মতোই তাঁকেও মা-দাদির চরিত্রে সীমাবদ্ধ হতে হয়েছিল, তবু ২০০০-এর দশকের শুরু পর্যন্ত কাজ চালিয়ে গেছেন—করণ জোহরের ‘কাভি খুশি কাভি গম’ ছিল তাঁর শেষ দিকের আলোচিত কাজগুলোর একটি।

পঞ্চাশের দশকে শুরু হওয়া অচলার ছিল দীর্ঘ ক্যারিয়ার; কিন্তু শেষ জীবনটা ভীষণ কষ্টে কাটাতে হয় তাঁকে। পুনের নিজস্ব দুই কামরার ফ্ল্যাটে একাই থেকেছেন এক দশকেরও বেশি সময়, পাশে ছিলেন কেবল এক সেবিকা। দুই সন্তানের কেউই তাঁর খোঁজ নিতেন না। মৃত্যুর আগে নিজের বাড়িটি দান করে দেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। বলিউডের জন্য জীবনের বহু বছর দেওয়া অনেক শিল্পীর মতো তিনিও ছিলেন অবহেলার শিকার।

অচলা সচদেব। আইএমডিবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ