ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানে হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানোর ঘটনা সমর্থন করছেন না বেশির ভাগ মার্কিন নাগরিক। সিএনএন/এসএসআরএসের সাম্প্রতিক এক জরিপে এই তথ্য ওঠে এসেছে। কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের পাল্টা হামলার আগে জরিপটি করা হয়েছে।

জরিপ অনুযায়ী, ৫৬ শতাংশ আমেরিকান এই হামলার বিরোধিতা করেছেন। তবে তার হামলাকে সমর্থন করেছেন ৪৪ শতাংশ নাগরিক। ‘জোরালোভাবে বিরোধিতা’ করা মানুষের সংখ্যাও ‘জোরালোভাবে সমর্থনকারীদের’ তুলনায় বেশি। ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করছেন, এই হামলা ইরানের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হুমকি আরও বাড়িয়ে তুলবে।

জরিপে দেখা গেছে, দলীয় বিভাজন ব্যাপকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে এই জরিপে। ডেমোক্র্যাটদের ৮৮ শতাংশ এবং স্বতন্ত্র ভোটারের ৬০ শতাংশ হামলার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে রিপাবলিকানদের ৮২ শতাংশ এর পক্ষে ভোট দেন। যদিও রিপাবলিকানদের মধ্যেও বিভাজন রয়েছে। ৪৫ বছরের নিচের সমর্থকরা হামলার বিষয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি সন্দিহান।

হামলার বিরোধিতায় সবচেয়ে জোরালো অবস্থান নিচ্ছে তরুণ আমেরিকানরা। ৩৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ৬৮ শতাংশই হামলার বিরোধিতা করছেন এবং ৪৫ শতাংশ একেবারেই ট্রাম্পের উপর আস্থা রাখছেন না বলে জানিয়েছেন।

জরিপ অনুযায়ী, আমেরিকানদের মাত্র ৩২ শতাংশ মনে করেন, ইরানে সামরিক হামলার আগে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা যথেষ্ট ছিল।

এছাড়া, ৫৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, ইরানে সামরিক শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ওপর তাদের সামান্য বা কোনো আস্থাই নেই। ৬৫ শতাংশ মনে করেন, ভবিষ্যতে ইরানে যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ট্রাম্পের কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়া উচিত।

জরিপে অংশ নেওয়া রিপাবলিকানদের মধ্যে ৫১ শতাংশ ট্রাম্পের ওপর ‘মোটামুটি আস্থা’ রাখেন, তবে ৩৯ শতাংশ মনে করেন, ভবিষ্যতে সামরিক পদক্ষেপ নিতে কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়া দরকার। তবে ৩৮ শতাংশ মনে করেন, সেটি প্রয়োজন নেই।

এদিকে, ইরানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্থল সেনা পাঠানোর বিষয়ে মাত্র ৯ শতাংশ জনগণ পক্ষে অবস্থান করছেন। আর বিপক্ষে ৬৮ শতাংশ নাগরিক।

এই জরিপটি পরিচালনা করা হয় গত রোববার ও সোমবার। ইরানের পাল্টা হামলার আগে এবং ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার আগেই অধিকাংশ সাক্ষাৎকার সম্পন্ন হয়।

জরিপে অংশ নেওয়া ৮০ শতাংশই জানিয়েছেন, তারা ইরানে মার্কিন হামলার খবর ‘কমবেশি’ জেনেছেন, যদিও মাত্র এক-তৃতীয়াংশ খুব ঘনিষ্ঠভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

সিএনএনের এই ফলাফল বলে দিচ্ছে- ট্রাম্প প্রশাসনের সামরিক সিদ্ধান্ত নিয়ে মার্কিন জনগণের মধ্যে গভীর বিভাজন ও সন্দেহ বিরাজ করছে। বিশেষ করে তরুণ ও স্বতন্ত্র ভোটারদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল আম র ক ন ক নদ র করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ছে কমপক্ষে ১৫০০ টাকা

আগামী জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ন্যূনতম বিশেষ সুবিধা ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের জন্য ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন সংশোধন করা হয়েছে। একই সঙ্গে এমপিওভু্ক্ত শিক্ষক–কর্মচারী, যৌথ বাহিনীর নির্দেশনাবলীর আওতায় বেতন–ভাতা ও পেনশনভোগী এবং জুডিশিয়াল সার্ভিসকে বিশেষ সুবিধার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করে পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 

সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এসব প্রজ্ঞাপন জারি করে। আগামী ১ জুলাই থেকে যা কার্যকর হবে।  

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট ঘোষণার পরদিন ৩ জুন সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বিশেষ সুবিধার প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ বিভাগ। 
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-৯ পর্যন্ত ১০ শতাংশ এবং গ্রেড-১০ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত ১৫ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। 

এতে আরও বলা হয়, জাতীয় বেতনকাঠামোর আওতাভুক্ত সরকারি (বেসামরিক), স্ব-শাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও পুলিশ বাহিনীতে নিয়োজিত কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের (পুনঃস্থাপনকৃত) জন্য এ বিশেষ সুবিধা কার্যকর হবে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বাড়ানো হলে ১১তম গ্রেডের বেতন বাড়ে ৮৭৫ টাকা। ১২তম গ্রেডের বাড়ে ৬৯৫ টাকা। এভাবে ১৩তম গ্রেডের ৬৫০ টাকা, ১৪তম গ্রেডের ৫৩০ টাকা, ১৫তম গ্রেডের ৪৫৫ টাকা, ১৬তম গ্রেডের ৩৯৫ টাকা, ১৭তম গ্রেডের ৩৫০ টাকা, ১৮তম গ্রেডের ৩২০ টাকা, ১৯ তম গ্রেডের ২৭৫ টাকা ও ২০ তম গ্রেডের ২৩৭ টাকা বেতন বাড়ে। এসব কর্মচারীদের বেতন অনেক কম হওয়ায় সরকারের প্রজ্ঞাপনে সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা বেতন বাড়ানোর ঘোষণা ছিল।

তবে রোববার ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদনের সময় তা বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। সে সিদ্ধান্তের আলোকেই আজ সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০০ টাকা বিশেষ সুবিধা বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা হয়।

এদিকে রোববার পৃথক আরেকটি প্রজ্ঞাপন করে করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদেরও বিশেষ সুবিধার আওতায় আনা হয়। এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি মাদ্রাসা ও বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাতীয় বেতনস্কেলের তুলনীয় গ্রেড-১ ও তদূর্ধ্ব থেকে গ্রেড-৯ পর্যন্ত গ্রেডভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের আগামী ১ জুলাই থেকে মূল বেতনের ১০ শতাংশ এবং গ্রেড-১০ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত গ্রেডভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের ১৫ শতাংশ বেতন বাড়বে। তবে বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকা হবে।

আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যৌথ বাহিনী নির্দেশাবলীর (জেএসআই) আওতায় বেতন–ভাতা গ্রহণকারী এবং পেনশনভোগীরা এ সুবিধা পাবেন। এ সুবিধা হবে জেএসআই–১/২০১৬ অনুযায়ী ওয়ারেন্ট অফিসার বা সমতূল্য পদবী হতে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের সব সদস্য ও ‘ধর্মীয় পরামর্শদানকারী কর্মকর্তারা মূল বেতনের ১০ শতাংশ এবং সার্জেন্ট ও সমতুল্য পদবীর ও তদনিম্ন পর্যায়ের কর্মচারীরা মূল বেতনের ১৫ শতাংশ। তবে বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন ১৫০০ টাকা হবে। পেনশন পুনঃস্থাপনকৃত কর্মচারীরা সরকার হতে পেনশন গ্রহণকারী যাদের মাসিক পেনশন ১৭ হাজার ৩৮৯ টাকা ও তদূর্ধ্ব তাদের ১০ শতাংশ এবং যাদের মাসিক পেনশন ১৭ হাজার ৩৮৮ টাকা বা এর কম তাদের ১৫ শতাংশ বাড়বে। তবে বিশেষ এ সুবিধা সর্বনিম্ন ৭৫০ টাকা হবে।

এছাড়া জুজিশিয়াল সার্ভিসকে ও সুবিধার আওতায় এনে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৬ এর আওতায় বেতন–ভাতা গ্রহণকারী এবং পেনশনভোগকারীরা মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা পাবেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানে ট্রাম্পের হামলায় সমর্থন নেই বেশিরভাগ আমেরিকানের: সিএনএন জরিপ
  • ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিলেন মার্কিন কংগ্রেস সদস্য
  • ইরান-ইসরায়েল দুই দেশের মিডিয়ায় যুদ্ধবিরতির খবর
  • ইরানে সরকার পরিবর্তন সহজ নয়, পরিণতিও অনিশ্চিত
  • বেতন বাড়ছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদেরও
  • বেতন বাড়ছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদেরও
  • সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ছে কমপক্ষে ১৫০০ টাকা
  • ৪৪তম বিসিএসে কোটার সপক্ষে সনদ জমার নির্দেশ পিএসসির
  • অনুর্ধ্ব-১৬ ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত