দুই ইনিংস মিলিয়ে ভারত করে ৮৩৫ রান। ম্যাচে ছিল পাঁচটি ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। এর মধ্যে ঋষভ পন্থ দুই ইনিংসেই করেন সেঞ্চুরি। জাসপ্রিত বুমরাহ প্রথম ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স আর ৮০০-এর ওপরে রান করার পরও হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের কাছে ভারতের ৫ উইকেটের পরাজয় নিয়ে চলছে সমালোচনা। কেউ সামনে এনেছেন দুই ইনিংসের শেষের ঝড়কে, কেউ বা এনেছেন বাজে ফিল্ডিংকে। 

দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৯ রান করা ইংলিশ ব্যাটার বেন ডাকেট জীবন পেয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ৯৯ রান করা হ্যারি ব্রুককে প্রথম ইনিংসে জীবন দিয়েছেন ভারতের ফিল্ডাররা। তবে সবচেয়ে বাজে ফিল্ডিং করেছেন জয়সোয়াল। ভারতের ফিল্ডাররা যে সাতটি ক্যাচ ফেলেছেন, জয়সোয়াল একাই ফেলেছেন চারটি ক্যাচ। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে করুন নায়ারের হাত থেকে ফসকে যায় বল। পরিসংখ্যান

টেস্টে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান তাড়া
স্কোর    প্রতিপক্ষ        ভেন্যু        সাল
৩৭৮/৩    ভারত        বার্মিংহাম    ২০২২
৩৭৩/৫    ভারত        হেডিংলি        ২০২৫
৩৬২/৯    অস্ট্রেলিয়া    হেডিংলি        ২০১৯
৩৩২/৭    অস্ট্রেলিয়া    মেলবোর্ন    ১৯২৮
৩১৫/৪    অস্ট্রেলিয়া    হেডিংলি        ২০০১

ম্যাচ শেষে ক্যাচ মিসের প্রসঙ্গটি সামনে আনেন ভারত অধিনায়ক শুভমান গিল, ‘ক্যাচ মিস নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু যখন আপনি মাঠে থাকেন, তখন সবকিছু খুব দ্রুত ঘটে যায়। আমি মনে করি, এটি এমন একটি দিক, যেটি আমাদের আগামী ম্যাচগুলোতে ঠিক করতে হবে। এমন উইকেটে সুযোগ সহজে আসে না, আর আমরা বেশ কিছু ক্যাচ ফেলেছি।’

৮০০-এর ওপরে রান করেও পরাজিত দল
দল                  রান    প্রতিপক্ষ           ভেন্যু              সাল
ইংল্যান্ড        ৮৬১      অস্ট্রেলিয়া    হেডিংলি           ১৯৪৮
পাকিস্তান    ৮৪৭       ইংল্যান্ড        রাওয়ালপিন্ডি    ২০২২
নিউজিল্যান্ড   ৮৩৭    ইংল্যান্ড        নটিংহাম          ২০২২
ভারত           ৮৩৫     ইংল্যান্ড        হেডিংলি             ২০২৫
ইংল্যান্ড        ৮১৭     অস্ট্রেলিয়া     অ্যাডিলেড        ১৯২১

শুধু ক্যাচই নয়, যেভাবে দুই ইনিংসে ব্যাটিংধস হয়েছে ভারতের, তা অবাক করেছে ক্রিকেটবোদ্ধাদের। প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪১ রান তুলতে হারায় ৭ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে যখন বড় স্কোরের পথে হাঁটছিল, তখন টেলএন্ডারদের ব্যর্থতা। এই ইনিংসে ৩১ রানে হারায় শেষ ছয় ব্যাটারকে। প্রথম ধসে খুব একটা সমস্যা হয়নি; ভারত লিড নেয় ৬ রানে। কিন্তু দ্বিতীয় ধসের ফল তো সবাই দেখেছে। পঞ্চম দিনে প্রয়োজনীয় ৩৫০ রান করে ইংলিশরা জিতে নেয় টেস্ট। প্রথমবার টেস্টে ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া গিলও প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। 

গিলের ভাবনায় ছিল স্কোর ৪৩০-এর মতো করতে পারবেন তারা, ‘আমরা ভেবেছিলাম, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৩০ রানের মতো তুলে ইনিংস ঘোষণা করব। অপ্রত্যাশিতভাবে অল্প রানের মধ্যে আমাদের ৬ উইকেট পড়ে যায়।’ 

কোচ গৌতম গম্ভীর শেষের ধসের কথাকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘যদি আমরা প্রথম ইনিংসে ৫৭০ কিংবা ৫৮০ করতে পারতাম, তাহলে টেস্টে আধিপত্য আমাদেরই থাকত। মাঝেমধ্যে মানুষ ব্যর্থ হয় (টেলএন্ডারদের নিয়ে)। আমি জানি, এটি হতাশাজনক। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, অন্য যে কারোর চেয়ে তারা বেশি হতাশ। কারণ তারা বুঝতে পারছে, কত বড় সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। আশা করি, তারা এখান থেকে শিখতে এবং সামনের ম্যাচে আমাদের টেলএন্ডারদের কাছ থেকে আরও সেরা পারফরম্যান্স দেখতে পাব। তবে আমি মনে করি না, হারের এটিই বড় কারণ।’

সংখ্যাতথ্য
৩৫০ : হেডিংলি টেস্টে পঞ্চম দিনে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৩৫০ রান। সেটি তারা করেছে। রান তাড়ায় টেস্টের শেষ দিনে এর চেয়ে বেশি রান আছে একটি। ১৯৪৮ সালে এই হেডিংলিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া পঞ্চম দিনে ৪০৪ রান করে ম্যাচ জিতেছিল।

১ : পাঁচ সেঞ্চুরির পরও টেস্টে হারের নজির ভারতেরই প্রথম। ১৯২৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার চার ব্যাটার সেঞ্চুরির পরও অসিরা হেরেছিল।

৩ : টেস্টে তৃতীয়বারের মতো চারটি ইনিংসেই ৩৫০ প্লাস স্কোর হয়েছে। ইংল্যান্ড-ভারত হেডিংলি টেস্টের আগের দু’বারই এমনটা হয়েছিল অ্যাশেজে– ১৯২১ সালে অ্যাডিলেড ও ১৯৪৮ সালে হেডিংলিতে।

১৬৭৩ : হেডিংলিতে ইংল্যান্ড ও ভারতের ইনিংস মিলে রান হয়েছে ১৬৭৩, যা দুই দেশের মধ্যকার টেস্ট লড়াইয়ে সর্বোচ্চ। আগেরটি ছিল ১৯৯০ সালে। সে সময় ম্যানচেস্টারে রান উঠেছিল ১৬১৪।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ভমন গ ল প রথম ইন র ন কর আম দ র দ ই ইন উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

হঠাৎ সরকারের ঋণ বেড়েছে সঞ্চয়পত্রে

ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা সঞ্চয়পত্রে হঠাৎ সরকারের ঋণ বেড়েছে। গত এপ্রিলে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে। যদিও আগের মাসগুলোতে অনেক কমায় চলতি অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১০ মাসে ৭ হাজার ৪৩১ কোটি টাকার ঋণ কমেছে বলে সঞ্চয় পরিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় তিন বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় ক্ষমতা কমেছে। এর মধ্যে ২০২২ সাল থেকে ব্যাংক খাতে ব্যাপক তারল্য সংকট সৃষ্টি হওয়ায় আমানতের সুদহার বেড়ে যায়। ট্রেজারি বিল, বন্ডের সুদহারও অনেক বেড়েছে। ট্রেজারি বিল, বন্ডে বেশ কিছুদিন ধরে সুদহার রয়েছে ১২ শতাংশের আশপাশে। আবার ট্রেজারি বিল, বন্ডের মুনাফার ওপর কোনো কর কাটা হয় না। এখানে যে কোনো পরিমাণের বিনিয়োগ করা যায়। সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর ৫ থেকে ১০ শতাংশ কর কাটা হয়। এসব কারণে সাম্প্রতিক সময়ে সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ কমেছিল। এর মধ্যে এপ্রিলে হঠাৎ বৃদ্ধির একটি বড় কারণ হতে পারে ওই মাসে সুদ পরিশোধের চাপ কম ছিল।

বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রতিবছরই সরকার অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি উৎস থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে। আগামী অর্থবছরের জন্য সঞ্চয়পত্র থেকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ছিল। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ১৪ হাজার কোটি টাকায় নামানো হয়। সঞ্চয়পত্রে ঋণ নেতিবাচক থাকার পরও সংশোধিত বাজেটে এসে এই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মূলত বাজেটের হিসাব মেলানোর জন্য।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি অর্থবছরই শুধু এমন করা হয়েছে তা নয়। চলতি অর্থবছরসহ টানা তিন অর্থবছর ধরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ না বেড়ে কমছে। গত অর্থবছর সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণ কমেছিল ২১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কমেছিল ৩ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ পেয়েছিল ১৯ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। গত এপ্রিল পর্যন্ত সঞ্চয়পত্রে সরকারের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা।

রাজস্ব আয়ে আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি নেই। গত এপ্রিল পর্যন্ত রাজস্ব আয় হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা মাত্র ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি। আর চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার অনেক কম। এ সময়ে বিদেশি ঋণ ও অনুদানও কমেছে। যে কারণে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নির্ভরতা বাড়তে শুরু করেছে। অবশ্য এখনও তা লক্ষ্যমাত্রার নিচে রয়েছে।
আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেটের আকার কমিয়ে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে বৈদেশিক উৎস থেকে ৯৬ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে। আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকায় নামানো হয়। চলতি অর্থবছরের ২১ মে পর্যন্ত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ৬০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিগত সরকার দেশি-বিদেশি উৎসে মোট ১৮ লাখ কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। এসব ঋণের সুদ পরিশোধে সরকারের প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। এ ছাড়া পরিচালন ব্যয়ও প্রতিবছর বেড়ে থাকে। অথচ সে হারে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। এ রকম অবস্থায় সরকার এখন কম সুদের বিদেশি ঋণ নেওয়ায় জোর দিয়েছে। চলতি মাসে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার মতো পেতে যাচ্ছে সরকার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে যা শক্তিশালী করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সীতাকুণ্ডে বনাঞ্চল কেটে গড়ে ওঠা জাহাজভাঙা কারখানা উচ্ছেদ
  • চুয়াডাঙ্গায় শিশু ধর্ষণের পৃথক দুটি মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন
  • চুক্তিভিত্তিক আমদানিতে আর্থিক দায়মুক্তি পেল ব্যাংক
  • সৌদি, আরব আমিরাত, ওমানে বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদা কেন কমছে
  • যুক্তরাষ্ট্র নেই, ইউরোপ কি একা পুতিনকে রুখতে পারবে
  • মেসি সম্পর্কে এই ১০টি তথ্য আপনি জানতেন কি
  • হঠাৎ সরকারের ঋণ বেড়েছে সঞ্চয়পত্রে
  • যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৬ বিশ্বকাপে ইরান কি খেলতে পারবে
  • ৮ ছাত্র সংগঠনের কার্যালয় মধুর ক্যান্টিন