৪৪তম বিসিএসে পদ বৃদ্ধিসহ ৮ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
Published: 26th, June 2025 GMT
৪৪তম বিসিএসে পদসংখ্যা বৃদ্ধিসহ আট দফা দাবিতে বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৪৪তম বিসিএসের প্রার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ৪৪তম বিসিএসের প্রার্থীদের জানানো দাবিগুলো হলো ৪৪তম বিসিএসে পদসংখ্যা বৃদ্ধি, চূড়ান্ত ফলাফলের সঙ্গে লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভার (মৌখিক পরীক্ষা) নম্বর প্রকাশ, চূড়ান্ত ফলাফল প্রদানের আগে ক্যাডার পছন্দের সংশোধনের সুযোগদান, একই ক্যাডারে একই ব্যক্তিকে দ্বিতীয়বার সুপারিশ না করা, নন-ক্যাডার বিধিমালা-২০২৩ বাতিল বা সংশোধন–পূর্বক ভাইভায় উত্তীর্ণ সব প্রার্থীকে চাকরি প্রদান এবং যেসব প্রার্থীর স্নাতকে পঠিত বিষয়ের বিষয় কোড নেই, তাঁদেরও সংগতিপূর্ণ নন-ক্যাডার পদে আবেদনের সুযোগ প্রদান করা।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুস্তাকিন আহমেদ আশিক বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মূল উপলক্ষ ছিল কোটা। এ জন্য আমরা এই বিসিএসের প্রত্যেক প্রার্থী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু গণ–অভ্যুত্থানের পরে আমাদেরই এখন ইতিহাসের সবচেয়ে কম পদ দেওয়া হচ্ছে। এটা কি যৌক্তিক?’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিরাজুস সালেহীন সিয়ন বলেন, ‘বিসিএস পরীক্ষার উদ্দেশ্য সুদক্ষ ও চৌকস অফিসার নিয়োগ করা। বিগত বিসিএসগুলোর সার্কুলারে উল্লিখিত পদের চেয়ে বেশিসংখ্যক পদে সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, ৪৪তম বিসিএসে এই বেকারবান্ধব প্রথার ব্যত্যয় ঘটতে যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা এবং আগের বিসিএসগুলোর মতো পদ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দাবি জানাই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজা এ কে আজাদ বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষাধিক শূন্যপদ আছে। এ পদগুলোতে জনবল নিয়োগের অভাবে জনগণ ঠিকমতো সেবা পাচ্ছে না। একই সেবা পাওয়ার জন্য বারবার জনগণকে দপ্তরে দপ্তরে ঘুরতে হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনে জনবলের অভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এর জন্য অর্থনীতি বহুমুখীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে ৪৪তম বিসিএসে ১ হাজার ৩০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভায় উত্তীর্ণ হওয়া দক্ষ জনবল প্রস্তুত আছে ১০ হাজারের বেশি। এ জনবলের সবাইকে সরকার যথাস্থানে নিয়োগ দিলে জনগণেরও উপকার হয়, আমাদেরও কর্মসংস্থান হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে ৪৪তম বিসিএসের কয়েকজন প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব স এস র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতি আগে যেমন ছিল, সে রকম হবে না, সেই সুযোগও নেই: সৈয়দা রিজওয়ানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের বিষয়ে নাগরিকেরা মনে করেন, কী আর হবে, আগে যেমন ছিল, তেমনই হবে। এটা মনে করলে আর কিছুই বদলাবে না। আগে যেমন ছিল যাতে সে রকম না হয়, সে জন্য সাড়ে আট শ বাচ্চা প্রাণ দিয়েছে, সাড়ে চার শ বাচ্চা অন্ধত্ব বরণ করেছে। এসব আপনার, আমার বাচ্চা। কাজেই আগে যেমন ছিল, সে রকম হবে না, সেই সুযোগও নেই।’
গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী দেশের রাজনীতির পরিস্থিতি নিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আজ শনিবার এ কথা বলেন। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা মহানগরী ও উপজেলা এলাকার ৪৪টি খাসপুকুর ও জলাশয় সংস্কার, উন্নয়ন, সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল আজ। এ উপলক্ষে দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের দড়িপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জাতীয় সম্পদ হিসেবে খাসপুকুর ও জলাশয় রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। সংস্কারকাজের আওতায় সীমানা নির্ধারণ, সীমানা পিলার স্থাপন, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, পুনঃখনন, পাড়বাঁধাই, পানি প্রতিস্থাপন, দূষণমুক্তকরণ, ঘাট নির্মাণ, ওয়াকওয়ে, বেঞ্চ স্থাপন ও বৃক্ষরোপণ করা হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ জরুরি বলে উল্লেখ করেন সৈয়দা রিজওয়ানা। ঢাকার অধিকাংশ জলাশয় দখল, ভরাট ও দূষণের চাপের মুখে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি খতিয়ান অনুযায়ী ঢাকা মহানগরী ও জেলায় মোট ১১৩টি খাসপুকুর আছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৪৪টি জলাশয় চিহ্নিত করে সংস্কারকাজ শুরু করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনকে বাকি জলাশয়গুলোর তালিকা তৈরি করে ধাপে ধাপে পুনর্গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জনসাধারণকে পলিথিন ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পলিথিন পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। সরকারি নজরদারি ও জনসচেতনতার কারণে সুপারশপগুলো এখন পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার কমিয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক দায়িত্ববোধ অত্যন্ত জরুরি। সে জন্য সবাইকে পলিথিনের ব্যবহার পরিহার করতে হবে।
সিলেটে সাদাপাথর লুট প্রসঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘পাথর লুটপাটকারীরা বড় বড় স্লোগান দিয়ে আমাদের দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে রেখেছিল। কিন্তু জনগণের বিক্ষোভ প্রকাশের কারণে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়।’
পরিবেশ রক্ষায় জনগণের আন্দোলনের প্রসঙ্গে সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘গণতন্ত্রের শর্তে রয়েছে আপনার পরিবেশ আপনাকে রক্ষা করতে হবে। উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলা যাবে না। এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়ার মানুষদের আন্দোলন সফল হয়েছে। আড়িয়ল বিলে বিমানবন্দর করা যাবে না, সেটি এলাকার মানুষ সোচ্চার হয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।’
ঢাকার জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহিনা আহমেদ, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আনিসুজ্জামান ও কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া প্রমুখ।