দীর্ঘদিন ‘জেমস বন্ড’ সিরিজের নিয়ন্ত্রণ ছিল ইয়ন ফিল্মসের হাতে। ‘ডক্টর নো’ থেকে ২০২১ সালে সর্বশেষ ‘নো টাইম টু ডাই’–সহ মোট ২৫টি সিনেমা প্রযোজনা করেছে ইয়ন ফিল্মস। তবে নতুন চুক্তির ফলে জেমস বন্ডের অভিনয়শিল্পী নির্বাচনসহ সৃজনশীল সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করবে এমজিএম। চলতি বছরের শুরুর দিকে এমন ঘোষণার পর ভক্তরা অপেক্ষায় ছিলেন নতুন ‘জেমস বন্ড’ সিনেমার। এবার জানা গেল, নতুন ‘জেমস বন্ড’ সিনেমা পরিচালনা করবেন প্রখ্যাত কানাডিয়ান পরিচালক দ্যনি ভিলনোভ। খবর বিবিসির

এক বিবৃতিতে অ্যামাজন এমজিএম স্টুডিওস জানিয়েছে, ‘ডিউন’, ‘অ্যারাইভাল’ আর ‘ব্লেড রানার ২০৪৯’-এর মতো সিনেমার জন্য পরিচিত এই নির্মাতা এবার ‘০০৭’-এর হাল ধরছেন।
স্টুডিওর প্রকাশিত বিবৃতিতে ভিলনোভ বলেন, ‘আমি আজীবন জেমস বন্ডের ভক্ত। আমার জন্য বন্ড মানে এক পবিত্র ঐতিহ্য। আমি সেই ধারাবাহিকতাকে সম্মান জানাতে চাই এবং সামনে আরও অনেক মিশনের পথ খুলে দিতে চাই।’
এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বন্ড সিরিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চলা জল্পনার অবসান হলো। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘদিনের প্রযোজক বারবারা ব্রকোলি ও মাইকেল জি উইলসন দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে ভক্তদের মধ্যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল।

নতুন সিনেমার নির্বাহী প্রযোজকের দায়িত্বেও থাকছেন ভিলনোভ। তাঁর হাত ধরেই বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়েছে ‘ডিউন’ ফ্র্যাঞ্চাইজি। তবে কে হবেন পরবর্তী বন্ড, সে বিষয়ে এখনো মুখ খোলেনি অ্যামাজন। ড্যানিয়েল ক্রেগের বিদায়ের পর এ নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা।

কেমন হবে ভিলনোভের বন্ড
বিবৃতিতে ভিলনোভ স্বীকার করেছেন, বন্ড সিনেমা পরিচালনা করা ‘এক বিশাল দায়িত্ব’, তবে একই সঙ্গে এটি তাঁর জন্য এক ‘রোমাঞ্চকর চ্যালেঞ্জ’। ‘ছোটবেলায় বাবা আমাকে “ড.

নো” থেকে শুরু করে বন্ডের সব ছবি দেখিয়েছেন। সেই সময় থেকেই আমি এর প্রেমে পড়ি,’ বলেন নির্মাতা।
অ্যামাজন এমজিএম স্টুডিওসের প্রধান মাইক হপকিন্স ভিলনোভকে ‘সিনেমা–দুনিয়ার মাস্টার’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে দর্শকদের জন্য দুর্দান্ত গল্প উপহার দিতে তাঁর জুড়ি নেই।’

আরও পড়ুনকে হচ্ছেন নতুন জেমস বন্ড২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ভিলনোভের সিনেমাগুলোতে ভিজ্যুয়াল আর চরিত্রভিত্তিক গভীরতা মিলে তৈরি হয় ভিন্নধর্মী দৃশ্যকল্প। তাঁর চরিত্রগুলো সাধারণত একা, নৈতিক দোটানায় ভোগে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ভিলনোভের বন্ড হবে ড্যানিয়েল ক্রেগের ‘ক্যাসিনো রয়্যাল’ ঘরানার।

কে হবেন নতুন বন্ড
এখন সবার মনে একটাই প্রশ্ন—কে হবেন পরবর্তী বন্ড? এ মুহূর্তে আলোচনায় রয়েছেন ব্রিটিশ অভিনেতা অ্যারন টেইলর-জনসন ও জেমস নর্টন। আইরিশ অভিনেতা পল মেসক্যালকেও অনেকে বিবেচনায় নিচ্ছেন। নতুন ‘০০৭’ হবেন এমন কেউ, যিনি পরবর্তী এক দশক ধরে চরিত্রটি ধারণ করতে পারবেন, যিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও ক্ষুধার্ত। তাঁকে ব্র্যান্ড প্রচার, ভিডিও গেম, এমনকি সম্ভাব্য টিভি স্পিন-অফেও অংশ নিতে হতে পারে।
ড্যানিয়েল ক্রেগের উত্তরসূরি হওয়া—মোটেও সহজ নয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে: আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। সাংঘর্ষিক সংস্কৃতি থেকে (রাজনৈতিক দলগুলোকে) বেরিয়ে আসতে হবে। এই পরিবর্তন সম্ভব না হলে শত সংস্কার করেও কোনো লাভ হবে না। আমাদের মধ্যে ফাউন্ডেশনাল চেঞ্জ (মৌলিক পরিবর্তন) আনতে হবে।”

রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে লেকশোর গ্র্যান্ড হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) উদ্যোগে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সেমিনার অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

আমীর খসরু বলেন,“ফ্যাসিস্ট বা স্বৈরাচার পলায়নের মাধ্যমে দেশের জনগণের মনোজগতে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে। এই যদি রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদরা ধারণ করতে না পারেন, তাহলে সেই দল ও রাজনীতিবিদদের দরকার আছে বলে মনে করি না।”

আরো পড়ুন:

ডাকাতি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার, বিএনপি নেতা বহিষ্কার

নেত্রকোনায় মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, বিএনপি নেতা বহিষ্কার 

আমীর খসরু বলেন, “সবাই মন খুলে কথা বলতে পারছি। এটা দেশ ও জনগণের জন্য মুক্ত মতপ্রকাশের সৌন্দর্য। এ কথা বলার সুযোগ অব্যাহত রাখা গেলে অনেক সমস্যার সমাধান সহজ হবে।”

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “বিভিন্ন দেশের বিপ্লব পরবর্তী ইতিহাস বলে যেসব দেশ বিপ্লব পরবর্তী দ্রুত গণতান্ত্রিক পন্থায় ফিরতে পেরেছে তারা পরবর্তীতে ভালো করেছে। আর যেসব দেশ দ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরতে পারেনি তারা গৃহযুদ্ধ, অর্থনৈতিক বিপর্য়ের দিকে গেছে।”

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “কোনো বিকল্প নেই জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচন করা।নির্বাচিত প্রতিনিধি যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। তা না হলে যেসব দেশে বিপ্লব পরবর্তী ডিসঅর্ডার হয়েছে বাংলাদেশেও সেই আশঙ্কা থাকবে।”

আমীর খসরু বলেন, “আমাদের সবাইকে এক জায়গায় আসতে হবে, একমতে আসতে হবে। মানি লন্ডারিং বন্ধ হয়েছে। যারা করত তারা পালিয়ে গেছে।ফলে স্বাভাবিকভাবে রেমিট্যান্স বেড়ে গেছে। এক্সপোর্ট ইনকাম (রপ্তানি আয়) বেড়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে। বিনিময় হার স্থিতিশীল হয়েছে।”

আমীর খসরু বলেন, “বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। লুটপাটের অর্থনীতিতে যে ধরনের বাজেট ছিল, এই সরকারও সেরকম বাজেটই করেছে। এই জায়গাটায় ভুল হয়েছে।”

“আগামী দিনে শিক্ষা, স্বাস্থ্য তথা সামগ্রিক সামাজিক উন্নয়নে আমাদের সুযোগ হলে এক নম্বর বাংলাদেশ ওভার রেগুলেটেড কান্ট্রি। আমরা সিরিয়াস ডিরেগুলেশন করব। একটা রেস্টুরেন্ট করতে ১৯টি পারমিশন লাগে। প্রত্যেকটি জায়গায় এত রেগুলেট করে রাখা হয়েছে বিনিয়োগ কোনোভাবেই উৎসাহিত হয় না। সিরিয়াস ডিরেগুলেশন ছাড়া হবে না।”

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “বিনিয়োগকারীরা কখনই অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বিনিয়োগে আসবে না। তারা দেখতে চাইবে পরবর্তী সরকার কী করে। ইজ অব ডুয়িং বিজনেস এ বাংলাদেশ অনেক পেছনে। ফলে ডিরেগুলেশন। আপনি যদি সত্যিকারের উন্নয়ন চান, তাহলে সরকারের ভূমিকা কমিয়ে আনতে হবে। ট্রেড বডিগুলো আর কী কী করতে পারবেন, সেজন্য তৈরি হন। আমরা ক্ষমতায় এলে ট্রেড বডিগুলোকে সেলফ রেগুলেটেড করার দায়িত্ব দেওয়া হবে। ফিজিক্যাল প্রেজেন্স কমানোর সব চেষ্টা আমরা করব। আমরা চাই, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে এসে এয়ারপোর্টে বসেই যেন অনলাইনে কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন।”

আমীর খসরু বলেন, “যত বেশি রেগুলেশন থাকবে, তত করাপশন থাকবে। এই কারণে আগের সরকারের সময়ে অলিগার্ক সৃষ্টি হয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট লোকই ব্যবসা করতে পেরেছে।অন্যরা পারেনি। ইকোনোমি মাস্ট বি ডেমোক্রেটাইজ। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকতে হবে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা থাকতে হবে। এজন্য ইলেকশন থাকতে হবে। রাজনীতিবিদদের মানুষের কাছে যেতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “কর্মসংস্থানে ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার থাকতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইউকে মডেলে ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ার ব্যবস্থা চালু করা হবে। মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা বিনা বেতনে করে দেওয়া হবে। দেশের জিডিপির ২ শতাংশের কম শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় হয়। আমাদের টার্গেট জিডিপির ৫ শতাংশ করে এই দুই খাতে ব্যয় করা।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা দক্ষতা উন্নয়নে জোর দেব। আমরা ওয়ার্ক আউট করেছি কোথায় কি কর্মসংস্থান হবে। সেজন্য কত বিনিয়োগ করতে হবে। আমাদের পরিকল্পনা আছে ক্রিয়েটিভ ইকোনোমি। যারা মেইনস্ট্রিমে আসেনি তাদেরকে বৈশ্বিক বাজারে অনলাইনে সংযুক্ত করে দেওয়া হবে, যাতে ঘরে বসে একজন তার পণ্য অ্যামাজনে বিক্রি করতে পারে।  এর মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নত করা হবে।”

আমীর খসরু বলেন, “একজন থেকে ট্যাক্স নিতে চাইলে ট্যাক্স বাড়বে না। ট্যাক্স নেট বাড়াতে হবে। ইকোনোমিক কর্মকাণ্ড বাড়লে ট্যাক্স নেটও বাড়বে। দেশের বাইরে অনেক বাংলাদেশি আছেন, যারা দেশে আসতে চায়। সহায়তা চায়। ইতিবাচক নীতি চায়।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “শ্রমিকদের ব্যাপারে যে আকাঙ্ক্ষা জেগেছে তা রাজনীতিবিদদের পূরণ করতে হবে। বক্তৃতা দিয়ে হবে না। আমি ও আমার দল জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করার চেষ্টা করছে। কারণ জনগণ আমাদেরকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে আমরা যাতে ডে ওয়ান থেকে পারফর্ম করতে পারি। তবে সবার সহযোগিতা লাগবে।”

ঢাকা/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ১৬ দল
  • রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে: আমীর খসরু
  • চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্ত
  • রাস্তায় মানষিক ভারসাম্যহীন নারীর সন্তান প্রসব, যেভাবে বাঁচল নবজাতক
  • ইংল‌্যান্ডে ধর্ষণের অভিযোগ হায়দার আলীর বিরুদ্ধে
  • সোনারগাঁয়ে দেড় কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি প্রতারণা করে দখলের অভিযোগ
  • সোনারগাঁয়ে দেড় কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি প্রতারণা করে দখলের অভিযোগ
  • তারা বহিস্কৃত, কাউন্সিল অবৈধ: শামীম পাটোয়ারী
  • হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের বড় পরীক্ষা হবে আগামী নির্বাচন: কুগেলম্যান
  • হাতুড়ি নিয়ে যুবদল নেতাকে যুবলীগ নেতার ধাওয়া