নতুন ‘জেমস বন্ড’ সিনেমা বানাবেন অস্কার মনোনীত এই নির্মাতা
Published: 26th, June 2025 GMT
দীর্ঘদিন ‘জেমস বন্ড’ সিরিজের নিয়ন্ত্রণ ছিল ইয়ন ফিল্মসের হাতে। ‘ডক্টর নো’ থেকে ২০২১ সালে সর্বশেষ ‘নো টাইম টু ডাই’–সহ মোট ২৫টি সিনেমা প্রযোজনা করেছে ইয়ন ফিল্মস। তবে নতুন চুক্তির ফলে জেমস বন্ডের অভিনয়শিল্পী নির্বাচনসহ সৃজনশীল সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করবে এমজিএম। চলতি বছরের শুরুর দিকে এমন ঘোষণার পর ভক্তরা অপেক্ষায় ছিলেন নতুন ‘জেমস বন্ড’ সিনেমার। এবার জানা গেল, নতুন ‘জেমস বন্ড’ সিনেমা পরিচালনা করবেন প্রখ্যাত কানাডিয়ান পরিচালক দ্যনি ভিলনোভ। খবর বিবিসির
এক বিবৃতিতে অ্যামাজন এমজিএম স্টুডিওস জানিয়েছে, ‘ডিউন’, ‘অ্যারাইভাল’ আর ‘ব্লেড রানার ২০৪৯’-এর মতো সিনেমার জন্য পরিচিত এই নির্মাতা এবার ‘০০৭’-এর হাল ধরছেন।
স্টুডিওর প্রকাশিত বিবৃতিতে ভিলনোভ বলেন, ‘আমি আজীবন জেমস বন্ডের ভক্ত। আমার জন্য বন্ড মানে এক পবিত্র ঐতিহ্য। আমি সেই ধারাবাহিকতাকে সম্মান জানাতে চাই এবং সামনে আরও অনেক মিশনের পথ খুলে দিতে চাই।’
এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বন্ড সিরিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চলা জল্পনার অবসান হলো। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘদিনের প্রযোজক বারবারা ব্রকোলি ও মাইকেল জি উইলসন দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে ভক্তদের মধ্যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল।
নতুন সিনেমার নির্বাহী প্রযোজকের দায়িত্বেও থাকছেন ভিলনোভ। তাঁর হাত ধরেই বিশ্বজুড়ে সমাদৃত হয়েছে ‘ডিউন’ ফ্র্যাঞ্চাইজি। তবে কে হবেন পরবর্তী বন্ড, সে বিষয়ে এখনো মুখ খোলেনি অ্যামাজন। ড্যানিয়েল ক্রেগের বিদায়ের পর এ নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা।
কেমন হবে ভিলনোভের বন্ড
বিবৃতিতে ভিলনোভ স্বীকার করেছেন, বন্ড সিনেমা পরিচালনা করা ‘এক বিশাল দায়িত্ব’, তবে একই সঙ্গে এটি তাঁর জন্য এক ‘রোমাঞ্চকর চ্যালেঞ্জ’। ‘ছোটবেলায় বাবা আমাকে “ড.
অ্যামাজন এমজিএম স্টুডিওসের প্রধান মাইক হপকিন্স ভিলনোভকে ‘সিনেমা–দুনিয়ার মাস্টার’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে দর্শকদের জন্য দুর্দান্ত গল্প উপহার দিতে তাঁর জুড়ি নেই।’আরও পড়ুনকে হচ্ছেন নতুন জেমস বন্ড২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ভিলনোভের সিনেমাগুলোতে ভিজ্যুয়াল আর চরিত্রভিত্তিক গভীরতা মিলে তৈরি হয় ভিন্নধর্মী দৃশ্যকল্প। তাঁর চরিত্রগুলো সাধারণত একা, নৈতিক দোটানায় ভোগে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ভিলনোভের বন্ড হবে ড্যানিয়েল ক্রেগের ‘ক্যাসিনো রয়্যাল’ ঘরানার।
কে হবেন নতুন বন্ড
এখন সবার মনে একটাই প্রশ্ন—কে হবেন পরবর্তী বন্ড? এ মুহূর্তে আলোচনায় রয়েছেন ব্রিটিশ অভিনেতা অ্যারন টেইলর-জনসন ও জেমস নর্টন। আইরিশ অভিনেতা পল মেসক্যালকেও অনেকে বিবেচনায় নিচ্ছেন। নতুন ‘০০৭’ হবেন এমন কেউ, যিনি পরবর্তী এক দশক ধরে চরিত্রটি ধারণ করতে পারবেন, যিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও ক্ষুধার্ত। তাঁকে ব্র্যান্ড প্রচার, ভিডিও গেম, এমনকি সম্ভাব্য টিভি স্পিন-অফেও অংশ নিতে হতে পারে।
ড্যানিয়েল ক্রেগের উত্তরসূরি হওয়া—মোটেও সহজ নয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
রোনালদো কি সত্যিই বিশ্বকাপে ১-২ ম্যাচ মিস করবেন
পর্তুগাল আজ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলবে আর্মেনিয়ার বিপক্ষে। ম্যাচটা পর্তুগিজদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জিতলে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হবে, এমনকি ড্র করলেও সমূহ সম্ভাবনা। কিন্তু হারলে নেমে যেতে হতে পারে প্লে-অফের পরীক্ষায়। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে পাচ্ছে না পর্তুগাল। বৃহস্পতিবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লাল কার্ড দেখায় আজ দর্শক হয়ে থাকতে হচ্ছে তাঁকে।
তবে রোনালদো ও পর্তুগালের জন্য বড় বিপদ সামনে। লাল কার্ডের জন্য এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা সবাইকেই কাটাতে হয়। শাস্তির মূল পরিমাণ ঠিক কত ম্যাচের বা দিনের, সেটি অপরাধের মাত্রার ওপর নির্ভর করে পরে ঘোষণা করা হয়। আর এখানেই শঙ্কা রোনালদোকে নিয়ে।
আইরিশ ফুটবলার দারা ও’শেয়ারকে আঘাতের দায়ে রোনালদো যদি দুই থেকে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান, তাহলে পর্তুগাল বিশ্বকাপে উঠলে গ্রুপ পর্বের একটি বা দুটি ম্যাচই তিনি মিস করবেন। আর গ্রুপ পর্বে ম্যাচ যেহেতু মাত্র তিনটি, দল আগেভাগে খারাপ করে বিদায় নিশ্চিত হলে রোনালদোর বিশ্বকাপ শুরুর আগেই শেষ হয়ে যাবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এমন পরিস্থিতি কি সত্যিই তৈরি হতে পারে? রোনালদোর বিশ্বকাপে ১-২ মিস করার সম্ভাবনা কতটুকু? ২০২৬ বিশ্বকাপ শুরু হবে জুনে, যা এখনো ছয় মাসেরও বেশি সময় বাকি। এর মধ্যে পর্তুগাল ম্যাচও খেলবে। আর রোনালদোকে আসলে কত ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটাতে হবে, সেটি জানা যাবেই–বা কবে?
রোনালদোর অপরাধ কী ছিলআয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের ৬১তম মিনিটে ও’শেয়ারকে কনুই দিয়ে মেরেছেন রোনালদো। রেফারি গ্লেন নাইবার্গ এ ঘটনায় তাঁকে হলুদ কার্ড দেখান। তবে ভিএআরে ঘটনা পর্যালোচনার পর রেফারি সিদ্ধান্ত পাল্টান, দেখান লাল কার্ড। রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত বদলের অর্থ হচ্ছে, রেফারির কাছে ঘটনাটি গুরুতরই মনে হয়েছে।
শাস্তি কীলাল কার্ডের ন্যূনতম শাস্তি এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা। এরপর ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিটি ঠিক করে সেটি এক ম্যাচে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি বাড়বে। বাড়লে কতটা? ফিফা তাদের শৃঙ্খলাবিধির ১৪.১ ধারা অনুসারে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই ধারার ‘ই’ অনুচ্ছেদ অনুসারে, গুরুতর ফাউল খেলার জন্য দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। এই নিয়মটি বল দখলের জন্য অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক চ্যালেঞ্জের আওতায় পড়ে।
উদাহরণ হিসেবে অঁরেলিয়ে চুয়ামেনির কথা বলা যেতে পারে। রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সের হয়ে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে সরাসরি লাল কার্ড দেখেছিলেন। এ ঘটনায় তাঁকে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়—একটি লাল কার্ডের জন্য, অন্যটি গুরুতর ফাউলের জন্য।
পর্তুগালের জন্য বিপদ হচ্ছে রোনালদোর পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে। ফিফা আইনের অধীনে তাঁর কনুই মারাকে সহিংস আচরণ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে। অনুচ্ছেদ ১৪.১ ধারার ‘এইচ’ এবং ‘আই’ অনুচ্ছেদে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার কথা বলা আছে।
এইচ. সহিংস আচরণের জন্য কমপক্ষে তিন ম্যাচ।
আই. আক্রমণাত্মক আচরণের জন্য কমপক্ষে তিন ম্যাচ বা উপযুক্ত সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞা, যার মধ্যে কনুই মারা, ঘুষি মারা, লাথি মারা, কামড়ানো, থুতু দেওয়া, বা কোনো খেলোয়াড় বা রেফারি নন এমন কাউকে আক্রমণ করা অন্তর্ভুক্ত।
যেহেতু রোনালদো আইরিশ ডিফেন্ডারকে কনুই দিয়ে আঘাত করেছেন, তাই তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার খড়্গে পড়তে পারেন, যার ফলে বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচ মিস করবেন তিনি। এর আগে চলতি মৌসুমের শুরুতে আর্মেনিয়ার তিগরান বারসেঘিয়ানকে উত্তর আয়ারল্যান্ডের এক খেলোয়াড়কে সামান্য মাথা দিয়ে আঘাত করার দায়ে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ফিফা।
পর্তুগাল আজই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করলে কী হবেআজ আর্মেনিয়ার বিপক্ষে জিতলে বা ড্র করলে বিশ্বকাপের টিকিট কাটা হয়ে যাবে পর্তুগালের। এর অর্থ হচ্ছে, পর্তুগাল তাদের পরবর্তী প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলবে আগামী বছরের জুনে বিশ্বকাপের মূল পর্বে। সে ক্ষেত্রে রোনালদো গ্রুপ পর্বের প্রথম একটি বা দুটি ম্যাচ (মোট নিষেধাজ্ঞা দুই বা তিন ম্যাচ সাপেক্ষে) মিস করবেন। এর আগে মার্চে ফিফা উইন্ডো আছে। তবে সে সময় পর্তুগাল খেললেও তা হবে ‘প্রীতি ম্যাচ’। রোনালদোকে শাস্তি ভোগ করতে হবে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচেই।
কবে জানা যাবে রোনালদোর নিষেধাজ্ঞা কত ম্যাচেরঘটনার কত দিনের মধ্যে ফিফা ডিসিপ্লিনারি কমিটি শাস্তি ঘোষণা করবে, সে বিষয়ে কোনো বিধান নেই। সাধারণত, ঘটনার পরবর্তী মাসের শুরুতে রায় পাওয়া যায়। এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হচ্ছে আগামী ৫ ডিসেম্বর। সে দিন ওয়াশিংটন ডিসিতে ২০২৬ বিশ্বকাপের সূচি চূড়ান্ত (ড্র) হবে। এর কাছাকাছি সময়েই রোনালদো তাঁর নিষিদ্ধ ম্যাচসংখ্যার খবর পেয়ে যাবেন।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে খেলার কি কোনো উপায়ই থাকবে নাপ্রথম কথা, রোনালদো এখন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা পাননি। যদি অন্তত দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান, তবেই বিশ্বকাপের প্রথম থেকে না খেলার প্রশ্ন আসবে। তবে অপরাধের ধরনের কারণে ধরে নেওয়া যায় নিষেধাজ্ঞা তিনি পেতে যাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে পর্তুগালের বিশ্বকাপে জায়গা করাও একটা বিষয়। আজ পর্তুগাল যদি আর্মেনিয়াকে হারাতে না পারে এবং একই গ্রুপে হাঙ্গেরি আয়ারল্যান্ডকে হারায়, তাহলে পর্তুগাল গ্রুপে পিছিয়ে ইউরোপিয়ান প্লে-অফে নেমে যাবে।
সে ক্ষেত্রে পর্তুগালের পরবর্তী দুটি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হবে প্লে-অফ সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল। নিষেধাজ্ঞা পেলে রোনালদো এই ম্যাচগুলো মিস করবেন। দল বিশ্বকাপে গেলে সেখানে শুরু থেকেই খেলতে পারবেন ‘সিআরসেভেন’। কিন্তু যে প্লে-অফের ওপরে বিশ্বকাপে খেলা, না খেলা নির্ভর করবে, সেই ম্যাচে না খেলতে পারাও তো রোনালদো এবং পর্তুগালের জন্য ধাক্কা।