চট্টগ্রাম বন্দরের পরবর্তী অধ্যায়: বৈশ্বিক বাণিজ্য ও স্থানীয় সমৃদ্ধির সম্ভাবনা উন্মোচন
Published: 26th, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি অপারেটর আনার প্রস্তাবে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে কিনা। তবে এই বিতর্কের মাঝে যে বিষয়টি আড়ালে পড়ে যাচ্ছে তা হলো, কীভাবে বন্দর পরিচালনায় কৌশলগত আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের অর্থনীতি, শিল্পখাত এবং জনগণের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুফল বয়ে আনতে পারে।
দেশের মোট সামুদ্রিক বাণিজ্যের ৯০ শতাংশের বেশি পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে। যেমন– ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক স্থল পণ্য পরিবহনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাণিজ্যের পরিমাণ যেমন বাড়ছে, তেমনি গ্লোবাল সাপ্লাই চেইনেও পরিবর্তন আসছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নেটওয়ার্কের সঙ্গে আরও কার্যকর সংযুক্তি এবং বন্দরের আধুনিকায়ন এখন সময়োপযোগী। বিশেষ করে তৈরি পোশাক, জুতা, চামড়াজাত পণ্যগুলো রপ্তানিনির্ভর খাতগুলোর প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে হলে কার্যকারিতা ও বৈশ্বিক সংযুক্তি আরও জোরদার করতে হবে।
বন্দর পরিচালনায় অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক অপারেটরদের যুক্ত করা মানে শুধু ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন নয়, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানিকে গ্লোবাল লজিস্টিকস নেটওয়ার্কের সঙ্গে কার্যকরভাবে যুক্ত করবে। ফলে দেশের রপ্তানিকারকরা এশিয়া, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান বন্দরগুলোর সঙ্গে কার্যকরভাবে সংযুক্ত হতে পারবেন। ডিপি ওয়ার্ল্ড, এ.
এই যোগাযোগের ফলে তৈরি পোশাক, জুতা, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো আরও দ্রুত ডেলিভারি, উচ্চ লাভ এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ পাবে। এ সুফল কেবল বন্দরে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং পুরো ভ্যালু চেইনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যার মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন গতি আসবে।
বাংলাদেশের পোশাক খাত ইতোমধ্যে এইচ অ্যান্ড এম, ইউনিক্লো, জারা ও লিভাইস-এর মতো শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর কাছে একটি নির্ভরযোগ্য সোর্সিং হাব হিসেবে পরিচিত। তবে এসব ব্র্যান্ড কেবল সস্তা পণ্য নয়, নির্ভরযোগ্য ও স্বচ্ছ সাপ্লাই চেইন চায়। শুল্ক বা পণ্য খালাসে জটিলতা, বিলম্ব কিংবা অস্থিরতা দেখা দিলে অর্ডার চলে যেতে পারে প্রতিযোগী অন্য কোনো দেশে।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের লজিস্টিকস ব্যবস্থাকে বন্দর থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ সংযোগসহ সম্পূর্ণভাবে আধুনিক করতে হবে। একটি নিরাপদ, স্মার্ট ও আন্তর্জাতিকভাবে সংযুক্ত সাপ্লাই চেইন আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আস্থা বাড়ায় এবং দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করে।
আন্তর্জাতিক বন্দর অপারেটিং প্রতিষ্ঠান দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে এ বার্তা দেয় যে, বাংলাদেশ বৈশ্বিক মান বজায় রেখে স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
৪৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক শিল্প ছাড়াও চামড়া, ওষুধ এবং জুতা খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধিও এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। কাঁচামালের উচ্চমূল্য, বন্দরজট, জটিল কাস্টমস এবং অনিয়মিত সাপ্লাই চেইনের কারণে এই খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বন্দর পরিচালনায় অংশগ্রহণ করলে ডিজিটাল কাস্টমস প্ল্যাটফর্ম, আধুনিক ওয়্যারহাউজ সিস্টেম এবং তথ্যভিত্তিক স্মার্ট কার্গো ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম কার্যকারিতা অনেক গুণ বাড়াতে পারে। এতে রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে এবং অপ্রত্যাশিত বিলম্ব হ্রাস পাবে। কোভিড-পরবর্তী বাস্তবতায় দ্রুত লজিস্টিকস একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা, সেখানে এসব উদ্যোগ আরও তাৎপর্যপূর্ণ। এর ফলে রপ্তানিকারকরা খরচের ধাক্কা কিছুটা সামলাতে পারবেন এবং দ্রুত পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবেন।
বেসরকারীকরণ মানেই চাকরি কমে যাবে এমন ধারণাও অনেকের রয়েছে। তবে বাস্তবতা বলছে, সক্ষমতা বাড়লে কর্মসংস্থানও বাড়ে। শুধু বন্দরে নয়, পরিবহন, গুদামজাতকরণ ও সহায়ক খাতগুলোতেও নতুন নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হয়। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক অপারেটর স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ করে, যা কর্মীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদে মূল্য যোগ করে।
আরেকটি উদ্বেগ হলো, বিদেশি অপারেটররা মুনাফা বিদেশে নিয়ে যাবে। তবে সঠিক পিপিপি মডেলের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট কাঠামোতে বিনিয়োগ, রাজস্ব বণ্টন ও করনীতি নিশ্চিত থাকলে জাতীয় রাজস্ব রক্ষা করা সম্ভব। উপরন্তু, অর্থনীতির সম্প্রসারণে সরকারের মোট রাজস্বও বাড়ে।
আরেকটি সাধারণ উদ্বেগ হলো, বিদেশি অপারেটররা তাদের লভ্যাংশ বিদেশে পাঠাবে, যার ফলে দেশের রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে সঠিকভাবে প্রণয়ন করা চুক্তির মাধ্যমে রাজস্ব ভাগাভাগি, বাধ্যতামূলক পুনঃবিনিয়োগ এবং ন্যায্য কর ব্যবস্থার নিশ্চয়তা দেওয়া যায়। তদুপরি, উন্নত বাণিজ্য অবকাঠামোর ফলে যে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ ঘটে, তা সাধারণত সরকারের মোট রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বেসরকারীকরণ মানে জাতীয় সম্পদ বিক্রি করে দেওয়া নয়। অবকাঠামোর মালিকানা রাষ্ট্রের কাছেই থাকবে, নীতিনির্ধারণ থাকবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের হাতে। সঠিক নজরদারি ও চুক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশ তার স্বার্থ রক্ষা করেই বৈশ্বিক দক্ষতার সুফল নিতে পারবে।
বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের লজিস্টিকস অবকাঠামো বর্তমানে চাপের মুখে। চট্টগ্রাম বন্দরে এরই মধ্যে সীমাবদ্ধতা ও জট সৃষ্টি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতের বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এখন কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে মূল্যবান বাণিজ্যিক সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে, পণ্য পরিবহন অন্য দেশে চলে যেতে পারে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থাও কমে যেতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে কৌশলগত আধুনিকায়ন ও বেসরকারীকরণ হতে পারে বাংলাদেশের বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়ানোর একটি কার্যকর পথ। আন্তর্জাতিক বন্দর অপারেটররা পুঁজি, আধুনিক প্রযুক্তি এবং সমন্বিত লজিস্টিকস সেবা নিয়ে এসে চট্টগ্রামকে একটি প্রতিযোগিতামূলক আঞ্চলিক হাব-এ রূপান্তর করতে ভূমিকা রাখতে পারে।
এটি নিয়ন্ত্রণ হারানোর নয়, বরং একটি লাভজনক অংশীদারিত্ব। সুচিন্তিত পরিকল্পনা, স্বচ্ছ শর্ত এবং দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করে বেসরকারীকরণ এমন একটি গতি সঞ্চার করতে পারে, যা সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রেখেই প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে।
বাংলাদেশ রপ্তানি বাড়াতে এবং বিশ্ববাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে কাজ করছে। তাই বন্দর আধুনিক করা এখন খুবই জরুরি। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন হওয়া উচিত সঠিক পরিকল্পনা আর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে। (স্পন্সরড কন্টেন্ট)
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব সরক র করণ স প ল ই চ ইন পর বহন ক র কর ত ম লক র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
রোনালদো কি সত্যিই বিশ্বকাপে ১-২ ম্যাচ মিস করবেন
পর্তুগাল আজ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলবে আর্মেনিয়ার বিপক্ষে। ম্যাচটা পর্তুগিজদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জিতলে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হবে, এমনকি ড্র করলেও সমূহ সম্ভাবনা। কিন্তু হারলে নেমে যেতে হতে পারে প্লে-অফের পরীক্ষায়। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে পাচ্ছে না পর্তুগাল। বৃহস্পতিবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লাল কার্ড দেখায় আজ দর্শক হয়ে থাকতে হচ্ছে তাঁকে।
তবে রোনালদো ও পর্তুগালের জন্য বড় বিপদ সামনে। লাল কার্ডের জন্য এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা সবাইকেই কাটাতে হয়। শাস্তির মূল পরিমাণ ঠিক কত ম্যাচের বা দিনের, সেটি অপরাধের মাত্রার ওপর নির্ভর করে পরে ঘোষণা করা হয়। আর এখানেই শঙ্কা রোনালদোকে নিয়ে।
আইরিশ ফুটবলার দারা ও’শেয়ারকে আঘাতের দায়ে রোনালদো যদি দুই থেকে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান, তাহলে পর্তুগাল বিশ্বকাপে উঠলে গ্রুপ পর্বের একটি বা দুটি ম্যাচই তিনি মিস করবেন। আর গ্রুপ পর্বে ম্যাচ যেহেতু মাত্র তিনটি, দল আগেভাগে খারাপ করে বিদায় নিশ্চিত হলে রোনালদোর বিশ্বকাপ শুরুর আগেই শেষ হয়ে যাবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, এমন পরিস্থিতি কি সত্যিই তৈরি হতে পারে? রোনালদোর বিশ্বকাপে ১-২ মিস করার সম্ভাবনা কতটুকু? ২০২৬ বিশ্বকাপ শুরু হবে জুনে, যা এখনো ছয় মাসেরও বেশি সময় বাকি। এর মধ্যে পর্তুগাল ম্যাচও খেলবে। আর রোনালদোকে আসলে কত ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটাতে হবে, সেটি জানা যাবেই–বা কবে?
রোনালদোর অপরাধ কী ছিলআয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের ৬১তম মিনিটে ও’শেয়ারকে কনুই দিয়ে মেরেছেন রোনালদো। রেফারি গ্লেন নাইবার্গ এ ঘটনায় তাঁকে হলুদ কার্ড দেখান। তবে ভিএআরে ঘটনা পর্যালোচনার পর রেফারি সিদ্ধান্ত পাল্টান, দেখান লাল কার্ড। রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত বদলের অর্থ হচ্ছে, রেফারির কাছে ঘটনাটি গুরুতরই মনে হয়েছে।
শাস্তি কীলাল কার্ডের ন্যূনতম শাস্তি এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা। এরপর ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিটি ঠিক করে সেটি এক ম্যাচে সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি বাড়বে। বাড়লে কতটা? ফিফা তাদের শৃঙ্খলাবিধির ১৪.১ ধারা অনুসারে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই ধারার ‘ই’ অনুচ্ছেদ অনুসারে, গুরুতর ফাউল খেলার জন্য দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। এই নিয়মটি বল দখলের জন্য অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক চ্যালেঞ্জের আওতায় পড়ে।
উদাহরণ হিসেবে অঁরেলিয়ে চুয়ামেনির কথা বলা যেতে পারে। রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সের হয়ে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে সরাসরি লাল কার্ড দেখেছিলেন। এ ঘটনায় তাঁকে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়—একটি লাল কার্ডের জন্য, অন্যটি গুরুতর ফাউলের জন্য।
পর্তুগালের জন্য বিপদ হচ্ছে রোনালদোর পরিস্থিতি আরও গুরুতর হতে পারে। ফিফা আইনের অধীনে তাঁর কনুই মারাকে সহিংস আচরণ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে। অনুচ্ছেদ ১৪.১ ধারার ‘এইচ’ এবং ‘আই’ অনুচ্ছেদে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার কথা বলা আছে।
এইচ. সহিংস আচরণের জন্য কমপক্ষে তিন ম্যাচ।
আই. আক্রমণাত্মক আচরণের জন্য কমপক্ষে তিন ম্যাচ বা উপযুক্ত সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞা, যার মধ্যে কনুই মারা, ঘুষি মারা, লাথি মারা, কামড়ানো, থুতু দেওয়া, বা কোনো খেলোয়াড় বা রেফারি নন এমন কাউকে আক্রমণ করা অন্তর্ভুক্ত।
যেহেতু রোনালদো আইরিশ ডিফেন্ডারকে কনুই দিয়ে আঘাত করেছেন, তাই তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার খড়্গে পড়তে পারেন, যার ফলে বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচ মিস করবেন তিনি। এর আগে চলতি মৌসুমের শুরুতে আর্মেনিয়ার তিগরান বারসেঘিয়ানকে উত্তর আয়ারল্যান্ডের এক খেলোয়াড়কে সামান্য মাথা দিয়ে আঘাত করার দায়ে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ফিফা।
পর্তুগাল আজই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করলে কী হবেআজ আর্মেনিয়ার বিপক্ষে জিতলে বা ড্র করলে বিশ্বকাপের টিকিট কাটা হয়ে যাবে পর্তুগালের। এর অর্থ হচ্ছে, পর্তুগাল তাদের পরবর্তী প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলবে আগামী বছরের জুনে বিশ্বকাপের মূল পর্বে। সে ক্ষেত্রে রোনালদো গ্রুপ পর্বের প্রথম একটি বা দুটি ম্যাচ (মোট নিষেধাজ্ঞা দুই বা তিন ম্যাচ সাপেক্ষে) মিস করবেন। এর আগে মার্চে ফিফা উইন্ডো আছে। তবে সে সময় পর্তুগাল খেললেও তা হবে ‘প্রীতি ম্যাচ’। রোনালদোকে শাস্তি ভোগ করতে হবে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচেই।
কবে জানা যাবে রোনালদোর নিষেধাজ্ঞা কত ম্যাচেরঘটনার কত দিনের মধ্যে ফিফা ডিসিপ্লিনারি কমিটি শাস্তি ঘোষণা করবে, সে বিষয়ে কোনো বিধান নেই। সাধারণত, ঘটনার পরবর্তী মাসের শুরুতে রায় পাওয়া যায়। এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হচ্ছে আগামী ৫ ডিসেম্বর। সে দিন ওয়াশিংটন ডিসিতে ২০২৬ বিশ্বকাপের সূচি চূড়ান্ত (ড্র) হবে। এর কাছাকাছি সময়েই রোনালদো তাঁর নিষিদ্ধ ম্যাচসংখ্যার খবর পেয়ে যাবেন।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে খেলার কি কোনো উপায়ই থাকবে নাপ্রথম কথা, রোনালদো এখন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা পাননি। যদি অন্তত দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পান, তবেই বিশ্বকাপের প্রথম থেকে না খেলার প্রশ্ন আসবে। তবে অপরাধের ধরনের কারণে ধরে নেওয়া যায় নিষেধাজ্ঞা তিনি পেতে যাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে পর্তুগালের বিশ্বকাপে জায়গা করাও একটা বিষয়। আজ পর্তুগাল যদি আর্মেনিয়াকে হারাতে না পারে এবং একই গ্রুপে হাঙ্গেরি আয়ারল্যান্ডকে হারায়, তাহলে পর্তুগাল গ্রুপে পিছিয়ে ইউরোপিয়ান প্লে-অফে নেমে যাবে।
সে ক্ষেত্রে পর্তুগালের পরবর্তী দুটি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হবে প্লে-অফ সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল। নিষেধাজ্ঞা পেলে রোনালদো এই ম্যাচগুলো মিস করবেন। দল বিশ্বকাপে গেলে সেখানে শুরু থেকেই খেলতে পারবেন ‘সিআরসেভেন’। কিন্তু যে প্লে-অফের ওপরে বিশ্বকাপে খেলা, না খেলা নির্ভর করবে, সেই ম্যাচে না খেলতে পারাও তো রোনালদো এবং পর্তুগালের জন্য ধাক্কা।