বিদেশি পরামর্শকের সঙ্গে দেশি বিশেষজ্ঞ থাকবেন
Published: 28th, June 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী শেয়ারবাজার সংস্কারে একজন বিদেশি পরামর্শক আনার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি আরও জানান, দেশীয় প্রেক্ষাপট বুঝে সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করতে দেশি বিশেষজ্ঞদেরও সমন্বয়ে দল গঠন করা হবে। গত বৃহস্পতিবার অংশীজনের সঙ্গে মাসিক সমন্বয় সভায় এ তথ্য জানান।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্টক এক্সচেঞ্জ, ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংক, আইসিএবি, আইসিবি এবং সিডিবিএলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সভায় আইপিও মান এবং এর দুর্বলতা নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে। ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএর পক্ষ থেকে মন্দ আইপিও যাতে বাজারে আসতে না পারে, তার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং অডিটরদের দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানান।
জানা গেছে, বৈঠকে ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আইপিও নিয়ে কথা উঠলে একজন অন্যজনকে দেখিয়ে দেয়। কেউ নিজের দোষ নিতে চায় না। কোম্পানির অস্তিত্বই নেই এমন কোম্পানির শেয়ার স্টক এক্সচেঞ্জে কেনাবেচা হচ্ছে। এটি স্রেফ প্রতারণা। ঝুড়ির মধ্যে একটা আপেল খারাপ হলে তা ফেলে দিতে হয়, না হলে অন্যগুলোকে খারাপ করে। পৃথিবীর সব দেশে সেটিই নিয়ম, ব্যতিক্রম বাংলাদেশ।
মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর একজন প্রতিনিধি বলেন, কোম্পানি ও অডিটরের দেওয়া তথ্যে নির্ভর করতে হয় ইস্যু ম্যানেজারকে। দুই বছরে একটি আইপিও ফাইল জমা দিলে লাইসেন্স হারানোর ভয়ে কিছু এড়িয়ে যাওয়া হয়। আবার ১০ কোটি টাকার আইপিওতে কো-ইস্যু ম্যানেজার নাম দিয়ে তিন প্রতিষ্ঠানও যুক্ত হয়।
নিরীক্ষকদের সংগঠন আইসিএবির প্রতিনিধি জানান, ঢালাও অভিযোগ ঠিক নয়। যখনই কোনো অডিট প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আইসিএবির কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে, তখন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তালিকাভুক্ত কপারটেক নামে কোম্পানির আইপিও অনিয়মের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সংবাদপত্রে অনিয়মের তথ্য প্রকাশের পর অডিট প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল হয়েছিল। কিন্তু ড.
ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, আইপিও আবেদন মূল্যায়নে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা কম। অডিট এবং মূল্যায়নে পেশাদার চার্টার্ড ও কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট নিয়োগের পরিকল্পনা আছে। মূল্যায়ন সময় কমানো হবে বলে জানান তিনি।
সভায় অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, সমন্বয় সভায় যেসব সমস্যার কথা উঠে এসেছে, তা সবার জানা। সমস্যা সমাধানে সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থা বা দায়িত্ব বণ্টন হয়নি। আগের সভায় কী আলোচনা হয়েছিল, তার প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার উল্লেখ নেই।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র আইপ ও
এছাড়াও পড়ুন:
ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করার নির্দেশ দিলো আদালত
এমন এক সময়ে যখন বেশিরভাগ মানুষ লেখার জন্য কিবোর্ড ব্যবহার করে, তখন হাতের লেখা কি আসলেই গুরুত্বপূর্ণ? ভারতীয় আদালতের মতে, অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, যদি সেই লেখক হন একজন চিকিৎসক।
ডাক্তারদের বাজে হাতের লেখা নিয়ে ভারতসহ সারাবিশ্বেই রসিকতা করা হয়। কারণ অনেক ক্ষেত্রে এই লেখা কেবল ফার্মাসিস্টরাই বুঝতে পারেন, রোগী কিংবা অন্য কেউ নয়। কিন্তু স্পষ্ট হাতের লেখার গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি আদেশ জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘মেডিকেল প্রেসক্রিপশন পাঠ একটি মৌলিক অধিকার।’ কারণ এটি জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারে।
আদালতের এই আদেশ এমন একটি মামলায় এসেছে, যেখানে লিখিত শব্দের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। মামলায় একজন নারীকে ধর্ষণ, প্রতারণা এবং জালিয়াতির অভিযোগ ছিল এবং বিচারপতি জসগুরপ্রীত সিং পুরি জামিনের জন্য পুরুষের আবেদনের শুনানি করছিলেন।
ওই নারী অভিযোগ করেছিলেন, লোকটি তাকে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, তার ভুয়া সাক্ষাৎকার নিয়েছে এবং তাকে যৌন শোষণ করেছে।
অভিযুক্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তাদের সম্মতিতে সম্পর্ক ছিল এবং অর্থ নিয়ে বিরোধের কারণে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল।
বিচারপতি পুরি জানান, যখন ওই নারীকে পরীক্ষা করা এক সরকারি চিকিৎসকের মেডিকেল রিপোর্টটি দেখেন, তখন এর কিছুই তিনি বুঝতে পারেননি।
বিচারপতি তার আদেশে লিখেছেন, “এটি এই আদালতের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। কারণ একটি শব্দ বা একটি অক্ষরও স্পষ্টভাবে পড়া যায়নি।”
বিবিসি রায়ের একটি কপি দেখেছে যার মধ্যে প্রতিবেদন এবং দুই পৃষ্ঠার একটি প্রেসক্রিপশন রয়েছে। পুরো প্রেসিক্রিপশন ও রিপোর্ট অপাঠ্য।
বিচারপতি পুরি লিখেছেন, “যেহেতু প্রযুক্তি ও কম্পিউটার সহজলভ্য, তবুও এটা অবাক করার মতো যে সরকারি ডাক্তাররা এখনো হাতে প্রেসক্রিপশন লিখছেন যা সম্ভবত কিছু রসায়নবিদ ছাড়া অন্য কেউ পড়তে পারে না।”
আদালত সরকারকে মেডিকেল স্কুলের পাঠ্যক্রমের মধ্যে হাতের লেখার পাঠ অন্তর্ভুক্ত করতে এবং ডিজিটালাইজড প্রেসক্রিপশন চালু করার জন্য দুই বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করতে বলেছে।
বিচারপতি পুরি জানিয়েছেন, যতদিন না এটি বাস্তবায়ন না হয়, ততদিন পর্যন্ত সব ডাক্তারকে বড় অক্ষরে স্পষ্টভাবে প্রেসক্রিপশন লিখতে হবে।
ঢাকা/শাহেদ