বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা, করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলসহ দেশের সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে ৫ আগস্টের পর কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। এক সেকেন্ড দেরি না করে সরকারকে ঘোষণা করতে হবে– তারা বন্দর লিজ দেবে না। 

গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর জেটির সামনে বামপন্থি দল ও সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ নামের ব্যানারে রোডমার্চ শেষে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামে সমাপনী সমাবেশের আগে ফেনী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রোডমার্চের অংশ হিসেবে পথসভা করেন তারা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গেল ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিতাড়িত করে এ দেশের মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল। তবে সরকার এখন বিদেশিদের তাঁবেদার হয়ে উঠেছে। দেশপ্রেমিক মানুষ এখন দেখছে ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট দেশের জনগণের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তারা জনমতের তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মেতেছে।

এর আগে চার দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চের বহর বিকেলে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছে। রোডমার্চে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীর হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগান-সংবলিত প্ল্যাকার্ড। এসবের মধ্যে রয়েছে– ‘ইন্টেরিম সরকার, সাম্রাজ্যবাদের পাহারাদার’, ‘বন্দর-করিডোর, বিদেশিদের দেব না’, ‘চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া চলবে না’। সহস্রাধিক মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স রোডমার্চ কর্মসূচির চার দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো– নিউমুরিংসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনা বিদেশিদের হাতে দেওয়া চলবে না, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে পরিচালনা করতে হবে, রাখাইনে করিডোর দেওয়ার ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে; স্টারলিংক, সমরাস্ত্র কারখানা, করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ চক্রে জড়ানোর উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে; মার্কিন, ভারতসহ ‘সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদী দেশগুলোর’ সঙ্গে বিগত সব সরকারের আমলে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো প্রকাশ করতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী অসম চুক্তি বাতিল করতে হবে।

চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন  বজলুর রশিদ ফিরোজ,  ইকবাল কবির জাহিদ, মাসুদ রানা, মোশরেফা মিশু, নাসির উদ্দিন আহম্মদ, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

ফেনী সংবাদদাতা জানান, একই দাবিতে গতকাল দুপুরে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাসদের (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা বলেন, জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এলেও তারা এখন সেই আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে হাঁটছে। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে একের পর এক চুক্তি করছে। জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, একই দাবিতে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব চত্বরে সংহতি পদযাত্রা শুরুর প্রাক্কালে সাংবাদিক আবদুন নূরের সভাপতিত্বে রোডমার্চের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন মতিলাল বণিক, সাজিদুল ইসলাম, জাফর আহমেদ আকসির, নাসির মিয়া, ফাহিম মুনতাসির প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সম ব শ কর ড র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঈশ্বরদীতে প্রিপেইড মিটার বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ

পাবনার ঈশ্বরদীতে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) পিএলসির গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রমের প্রতিবাদে চার দিন ধরে আন্দোলন চলছে। বৃহস্পতিবার ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সদস্যরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, বাজারের প্রধান ফটকের সামনে শিল্প ও বণিক সমিতির পক্ষ থেকে মানববন্ধন, পথসভা, নেসকোর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি নান্নু রহমান, সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন জনিসহ ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে বুধবার ঈশ্বরদী পৌর জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আজম ও মঙ্গলবার সাবেক ছাত্রনেতা রেজাউল করিম ভিপি শাহীনের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ এবং নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষুব্ধ জনতা। 
প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ করার দাবিতে ‘সচেতন ঈশ্বরদীবাসী’র ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। পরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুন নূরকে স্মারকপত্র দেন বিক্ষোভকারীরা। 
গত সোমবার ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও স্থানীয় লোকজন নেসকো কার্যালয়ে গিয়ে প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানান। মঙ্গলবার ‘সচেতন ঈশ্বরদীবাসী’র ব্যানারে বিক্ষোভ শেষে নেসকো কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত পথসভায় বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে জনগণকে বোকা বানিয়ে দুর্ভোগ বাড়াতে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করতে প্রিপেইড মিটার চালুর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আওয়ামী লীগের দোসররা এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। ঈশ্বরদীবাসী এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেবে না। ঈশ্বরদীতে প্রিপেইড মিটার লাগানোর চেষ্টা করলে জনগণ প্রতিহত করবে। 
পথসভায় বক্তব্য দেন ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজমল হোসেন ডাবলু, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম ভিপি শাহীন, উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দুলাল মণ্ডল, বিএনপি নেতা বরকত আলী, ব্যবসায়ী নেতা সাঈফ হাসান সেলিম, শিল্প ও বণিক সমিতির নির্বাহী সদস্য আকরাম রায়হান বাবু, ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন, মিজানুর রহমান মিজান, রুহুল আমিন প্রমুখ। 
উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দুলাল মণ্ডল বলেন, আই কে রোডে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আগের মিটারে বিল আসত ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। এখন প্রিপেইড মিটারে বিল গুনতে হচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। 
স্মারকপত্র গ্রহণ করে নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুন নূর বলেন, প্রিপেইড ব্যবস্থার সুফল সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত না করায় তাদের মধ্যে ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। ঈশ্বরদীবাসীর এই আন্দোলন ও দাবির বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এর পর তারা যে সিদ্ধান্ত জানাবেন, আমি বাস্তবায়ন করব। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ষড়যন্ত্র ও নোংরামির অভিযোগ এনে ‘বৈষম্যবিরোধী প্লাটফর্ম’ ছাড়লেন উমামা
  • ছাত্র-জনতার ক্ষোভ ও গণপ্রতিরোধকে ‘মব’ বলা ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র: হেফাজতে ইসলাম
  • ছাত্র-জনতার ক্ষোভকে ‘মব’ বলা ফ্যাসিস্টদের ষড়যন্ত্র: হেফাজতে ইসলাম
  • ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি করলে বসে থাকব না: নিপুন রায় 
  • জুলাই সনদ ও যোদ্ধা নিয়ে এলোমেলো কিছু প্রশ্ন
  • ইমরান খানকে সরাতে ‘মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা’
  • ঈশ্বরদীতে প্রিপেইড মিটার বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ