৭১ ও ২০০৯’র পর রাষ্ট্রের মালিকানা এক গোষ্ঠীর হয়ে যায়: ইবি ভিসি
Published: 29th, June 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, “রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। কিন্তু ১৯৭১ ও ২০০৯ সালের পর তা জনগণের না হয়ে একটি গোষ্ঠীর হয়ে যায়। অনেকে সুবিধা পেতে চেয়েছে। কিন্তু জিয়াউর রহমান দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করে ইউনিভার্সাল ক্যারেক্টারে পরিণত হয়েছেন। তিনি ৩ বছর ক্ষমতায় থেকে মানুষকে সেবা দেন এবং এই দেশকে একটি রিপাবলিক রূপ দেন।”
রবিবার (২৯ জুন) দুপুর ১২টায় টিএসসিসিতে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী কর্মকর্তা ও কর্মচারী ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, “জিয়াউর রহমান এমন এক ব্যক্তি, যিনি স্বল্প সময়ে জাতিকে গড়ার একটি দর্শন দিয়েছেন। অনন্তকাল ধরে দেশের জনগোষ্ঠীর কাছে তিনি মাইলফলক হয়ে থাকবেন।”
আরো পড়ুন:
চবি বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি
পাবিপ্রবিতে ২ অনুষদের উদ্যোগে প্রথম জাতীয় সম্মেলন
তিনি বলেন, “শাসকরা যদি শাসনতন্ত্র নিজেদের জন্য বা দলের জন্য ব্যবহার করে, তাহলে জনগণ অধিকার পাবে না। এই রাষ্ট্রে বহুমাত্রিক জাতি বাস করে। এই হিসেবে আমরা জাতীয়তাবাদকে অস্বীকার করতে পারবো না। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে সেকুলারিজম এমনভাবে শুরু হয় যে, মানুষ চিন্তা করতে শুরু করে এ দেশ থেকে ইসলাম হয়তো হারিয়ে যাবে।”
তিনি আরো বলেন, “শহীদ জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদ আর ইসলামী মূল্যবোধ নিয়ে সোচ্চার হন। শহীদ জিয়াউর রহমান কোনো খণ্ডিত ব্যক্তিত্ব নয়, তিনি আপামর জনগোষ্ঠীর ব্যক্তিত্ব।”
জাতীয়তাবাদী কর্মকর্তা ও কর্মচারী ফোরামের সভাপতি আব্দুল মঈদ বাবুলের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এম.
এছাড়াও সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মতিনুর রহমান, জিয়া পরিষদের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এমতাজ উদ্দিন, সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদসহ দলটির অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র রহম ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আবার জনগণের ভোটাধিকার হরণের ষড়যন্ত্র চলছে: জামায়াত
আবারও দেশের জনগণের ভোটাধিকার হরণের পাঁয়তারা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, জনগণের বিপরীতে দাঁড়াবেন না। আরেকটি এক-এগারোর ক্ষেত্র তৈরি করবেন না।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জামায়াতের এই নায়েবে আমির এ কথা বলেন। জুলাই ঘোষণা এবং জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াত।
আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘নির্বাচন যে তারিখে দিছে, এটা ঠিক আছে। আমরা তার আগেও নির্বাচন চাইছিলাম। ডিসেম্বর হলেও আমরা করতাম। মানুষ আশা করে, এবার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। আমরা ইলেকশন চাই, সিলেকশন চাই না।’
বিদেশের ডিজাইনে (ছকে) পরিকল্পিত নির্বাচনের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সমাবেশে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, দেশের মানুষ জীবন এবং রক্ত দিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করবে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যেতে চায়, কিন্তু তার আগে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার বিষয়গুলো জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। নির্বাচনের জন্য আনন্দমুখর পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সরকারকে আলোচনা টেবিলে বসার জন্য আহ্বান জানান জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ তাহের। তিনি বলেন, ‘দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাবেন না। জনগণের বিপরীতে দাঁড়াবেন না। আরেকটি এক-এগারোর ক্ষেত্র তৈরি করবেন না।’
আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দল এবং রাজনীতিবিদেরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে সবাই মিলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। অতীতের মতো অংশগ্রহণহীন নির্বাচন করলে এবার বাংলাদেশ টিকবে না, স্বাধীনতা টিকবে না।’
জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল্লাহ তাহের বলেন, এই সরকারের প্রধান কাজ সংস্কার করা। তারা সংস্কারের জন্যই কমিশন তৈরি করেছে। সে কমিশনের সবাই ঐকমত্য হওয়ার পর সরকার বলে এটির আইনি ভিত্তি নেই। তাহলে সংস্কার হলো কোথায়? তিনি বলেন, যেসব বিষয় ঐকমত্য হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামী নির্বাচন হতে হবে।
একটি জরিপের কথা উল্লেখ করে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। তারা পিআরের পক্ষে। কিন্তু আপনারা যাঁরা বিরোধিতা করছেন, আপনাদের কি বিরোধিতা করার অধিকার আছে?’
জামায়াতের সহকারী সেক্রটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের আগেই দেখছি, কোনো কোনো দলের কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে জিহ্বা কেটে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিচ্ছেন। আমরা লক্ষ করছি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি ঘোষণা করছেন; কিন্তু এখনো জিহ্বা কেটে নেওয়ার কথা বলা এই সন্ত্রাসীকে কেন গ্রেপ্তার করতে পারেননি?’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, আবদুল হালিম, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমির সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে বিজয়নগর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি কাকরাইল ও মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় নেতা-কর্মীদের হাতে প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।