ভাসানচর থেকে পালিয়ে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে ২১ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আটক করেছে সন্দ্বীপ থানা–পুলিশ। পরে ওই রোহিঙ্গাদের আবার ভাসানচরের ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আটকের পর পুলিশের কাছে রোহিঙ্গারা দাবি করেছেন, তাঁরা কাজের সন্ধানে চট্টগ্রামে যাচ্ছিলেন।

আজ রোববার সকালে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি ট্রলার বিকল হয়ে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপকূলে আটকে পড়লে স্থানীয় লোকজন শরণার্থীদের আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। সকাল সাড়ে সাতটায় সন্দ্বীপের ছোঁয়াখালি ঘাটের কাছে উপকূলীয় কেওড়া (ম্যানগ্রোভ) বাগানের কাছে রোহিঙ্গাদের ট্রলারটি দেখতে পান স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি।

সন্দ্বীপ থানা–পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে নারী, শিশুসহ ২১ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। পরে একটি বোটে তাঁদের আবার ভাসানচরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রামের উদ্দেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দলটিতে ১৭ পুরুষ, এক নারী ও তিন শিশু ছিল বলে জানা গেছে। ভোররাতে তাঁরা চট্টগ্রামের উদ্দেশে ভাসানচর থেকে রওনা দিলেও সন্দ্বীপের দক্ষিণ–পূর্ব উপকূলের কাছে পৌঁছালে তাঁদের ট্রলারটি বিকল হয়ে পড়ে। স্রোতে ভাসতে ভাসতে ছোঁয়াখালি ঘাটের কাছে এসে ট্রলারটি স্থলভাগে আটকে পড়ে। তাঁরা ট্রলারটি সারিয়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীভর্তি ট্রলারটি রেখে পালিয়ে যান চালক ও সহকারী। রোহিঙ্গারা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা কাজের সন্ধানে ক্যাম্প ছেড়ে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয়ভাবে ট্রলারটি ভাড়া করেছিলেন।

আটক রোহিঙ্গারা পুলিশকে জানিয়েছেন, গভীর রাতে তাঁরা ভাসানচরের ক্যাম্প থেকে পালিয়ে ট্রলারে ওঠেন। ভোররাত আনুমানিক চারটায় তাঁদের বহন করা ট্রলারটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় তাঁরা সন্দ্বীপে আটকে পড়েন।

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা ২১ রোহিঙ্গাকে আটক করি। বেলা তিনটায় অন্য একটি ট্রলার ঠিক করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ অনুযায়ী যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাঁদের আবার ভাসানচরের ক্যাম্পে ফেরত পাঠাই। তিনজন পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু ও অন্যদের বয়স ১৮ থেকে ৪০–এর মধ্যে। তাঁরা চট্টগ্রামে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২১ র হ ঙ গ ভ স নচর

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্লোটিলা বহরের ম্যারিনেট গাজা জলসীমা থেকে কত দূরে

দ্য ম্যারিনেট। ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহরের নৌযান। নৌযানটি এখনো ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখী যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। আজ শুক্রবার আল-জাজিরার অনলাইনে এই তথ্য জানানো হয়।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি বলছে, একমাত্র দ্য ম্যারিনেটকেই এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। বহরের বাকি নৌযানগুলোকে তারা ইতিমধ্যে আটক করেছে।

দ্য ম্যারিনেট পোল্যান্ডের পতাকাবাহী নৌযান। তবে নৌযানটির মালিকের বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য কোনো নির্ভরযোগ্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে পাওয়া যায়নি।

ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়, দেখুন লাইভ ট্র্যাকারে

নৌযানটিতে ছয়জন আরোহী আছেন। এই আরোহীদের মধ্যে একজন তুরস্কের অধিকারকর্মী সিনান আকিলতু। তিনি আজ নৌযানটি থেকে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমরা এখন উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় প্রবেশ করেছি। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা দুটি মহৎ পরিণতির যেকোনো একটির দিকে অগ্রসর হচ্ছি।’

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকারের তথ্যের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানায়, আজ ভোরের দিকে ভূমধ্যসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলছিল ম্যারিনেট। এ সময় সূর্যোদয় হচ্ছিল।

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, ভোর ৪টার দিকে ম্যারিনেটের গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৩ দশমিক ৭৮ নট। (ঘণ্টায় প্রায় ৭ কিলোমিটার)। নৌযানটি গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে প্রায় ৪৩ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৮০ কিলোমিটার) দূরে অবস্থান করছিল।

আরও পড়ুনগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজে জলকামান ব্যবহার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী১৩ ঘণ্টা আগেগ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি বাদে সব নৌযান আটক করেছে ইসরায়েল

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই ম্যারিনেটকে সতর্ক করে দিয়েছে। তারা বলেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ ও অবরোধ ভাঙার যেকোনো চেষ্টা প্রতিহত করা হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে নৌযানটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। তবে তা ঠিক করা হয়েছে। নৌযানটি গাজা অভিমুখে চলছে।

ফ্লোটিলা আয়োজকেরা জানিয়েছেন, বহরের ৪২টি নৌযানকে অবৈধভাবে আটকানো হয়েছে। আরোহীদের আটক হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও ম্যারিনেট পিছু হটছে না।

আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইসরায়েল ‘জলদস্যুর কাজ’ করেছে: এরদোয়ান১৪ ঘণ্টা আগে

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা বলেছে, ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়, ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।

ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত আছে বলে জানিয়েছে ফ্লোটিলা আয়োজকেরা।

আরও পড়ুনসুমুদ ফ্লোটিলার আটক অধিকারকর্মীরা ২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলে পৌঁছতে পারেন২০ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ