পটুয়াখালীতে আদালতে হাতাহাতির ঘটনায় বিএনপির ২০ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
Published: 29th, June 2025 GMT
পটুয়াখালীতে আদালতের এজলাসে আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি ও আসামিদের মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির লাইব্রেরি সম্পাদক মো. মজিবুল হক বিশ্বাস মামলার আবেদন করলে বিচারক ইসরাত জাহান মৌমি আবেদনটি আমলে নিয়ে সদর থানা–পুলিশকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন। আদালতের পেশকার মাহাবুবুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ কলাপাড়া উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী আইনজীবী মো.
মামলার আরজিতে ঘটনার তারিখ ২৫ জুন উল্লেখ করা হলেও ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ জুন। ওই দিন দুপুরে পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়ান বিএনপিপন্থী একাধিক আইনজীবী। এ সময় আদালতে হাজিরা দিতে আসা আসামিদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় পক্ষে–বিপক্ষে বিক্ষোভ ও স্লোগানে আদালত চত্বরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ২৫ জুন কলাপাড়া উপজেলার একটি মামলার ২১ আসামি পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজিরা দিতে এজলাসে উপস্থিত হন। এ সময় বিচারক বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে ১৯ জনের জামিন মঞ্জুর ও দুই আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। দুই আসামির জামিন নামঞ্জুরে ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমানের উসকানিতে বারান্দায় হট্টগোল সৃষ্টি করেন জামিন পাওয়া আসামিরা। এরপর আইনজীবী নোমানের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও হুমকি দেন আসামিরা। এ ছাড়া জামিন পাওয়া কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে আদালত চত্বরে তাণ্ডব চালিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন বহিরাগতরা। পরে আসামিরা আদালত চত্বর–সংলগ্ন জেলা আইনজীবী সমিতিতে ঢুকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে সমিতি ভবনের দরজা–জানালায় আঘাতে হত্যার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী ও জেলা যুবদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, স্থানীয় রাজনীতি ও ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে ২৬ জুন আদালতে হাজিরা দিতে আসা একাধিক আসামিদের মারধর করা হয়। একই কারণে ওই ব্যক্তিদের নামে আজ দ্রুত বিচার আদালতে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৬ জুনের ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাঁকে নিয়মবহির্ভূত নোটিশ করেন। অথচ ২৬ জুনের ঘটনায় তিনি (জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মো. সালাহউদ্দীন) জড়িত। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নোটিশে স্বাক্ষর করার ক্ষমতা রাখেন না বলে তিনি দাবি করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আস ম র ২৬ জ ন ঘটন য় র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস