সাবেক সিইসি নূরুল হুদার গলায় জুতার মালা পরানো এবং লালমনিরহাটে সংখ্যালঘু বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগ এনে হেনস্তার ঘটনায় মব ভায়োলেন্সের বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে। সেই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যক্তিদের মধ্য থেকেও বক্তব্য এল, কোনো মব ভায়োলেন্স প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। কিন্তু ১০ মাস ধরে মব ভায়োলেন্সকে কারা প্রশ্রয় দিল বা প্রশ্রয়ই যদি না দেওয়া হয়, এমন ঘটনা থামছে না কেন? 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সেই সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তি, সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ও বাড়িঘরের ওপর বিক্ষুব্ধ মানুষের ক্ষোভের অংশ হিসেবে শুরুতে এটিকে ‘মব জাস্টিস’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তখন কয়েক দিন সরকার ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কয়েক সপ্তাহ পরও থানাগুলোয় পুলিশের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কিন্তু ১০ মাস পরে এসেও কেন ‘মব জাস্টিস’ দেখতে হবে?

শুধু ঢাকায় সংবাদমাধ্যমের সামনে ‘কঠোর হব’, ‘বরদাশত করা হবে না’—এসব বলাই কি মব ঠেকানো যথেষ্ট? সরকারের কেউ কেন শতাধিক মাজার ভাঙচুরের একটি ঘটনাস্থলেও গেলেন না; মবের ঘটনা সাজিয়ে মসজিদের ইমামকে হত্যা করা হলো, তার এতিম মেয়ের কাছে কেউ গেলেন না; কেন মবের হামলার শিকার আহত পুলিশকে কেউ হাসপাতালে দেখতে গেলেন না? 

বিচারব্যবস্থার ওপর আস্থাহীন মানুষ যখন কোনো অপরাধে জড়িত থাকার সন্দেহে কোনো ব্যক্তিকে অবমাননা, মারধর, হত্যা বা সম্পদ ধ্বংসের মাধ্যমে সাজা দেওয়া বা প্রতিশোধ নিতে যায়, সেটি তখন হয়ে পড়ে মব জাস্টিস। জাতিসংঘের মানবাধিকার-সংক্রান্ত বৈশ্বিক ঘোষণা অনুযায়ী, মব জাস্টিসের কারণে মানবাধিকারের বড় লঙ্ঘন হয়।

কারণ, এখানে উচ্ছৃঙ্খল জনতা আইন নিজের হাতে তুলে নেয়। অভিযুক্ত ব্যক্তি নিরপরাধ হলে তার রেহাই পাওয়ার সুযোগ বা অপরাধী সাব্যস্ত হলে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি প্রয়োগের সুযোগ—কোনো কিছুই থাকে না। সামান্য অপরাধে মৃত্যুও ঘটে। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মাঠে থাকলেও মব জাস্টিস থামানো যায়নি। ফলে সেটি আর মব জাস্টিস থাকেনি, মব ভায়োলেন্সেই রূপ নেয়।

মব ভায়োলেন্স নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে কথিত তৌহিদি জনতা কর্তৃক একের পর এক মাজারে হামলা ও ভাঙচুর; পাশাপাশি ছিল নারীর ওপর হামলা বা হেনস্তার ঘটনাগুলোও। আর আওয়ামী লীগের দোসর তকমা দিয়ে বিভিন্ন মানুষের ওপর হামলা বা বাড়িঘর, দোকানপাটে ভাঙচুরের ঘটনাও ছিল।

বরগুনার আমতলীতে একটি মাজারে হামলার পর এতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ১৬ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মব ভ য় ল ন স মব জ স ট স সরক র র র ওপর অপর ধ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

মানিকগঞ্জে স্কুলবাসে দেওয়া আগুনে দগ্ধ সেই চালকের মৃত্যু

মানিকগঞ্জে থেমে থাকা একটি স্কুলে বাসে সন্ত্রাসীদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ বাসচালক পারভেজ খান (৪৫) মারা গেছেন। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছেলে সুমন।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ফলসাটিয়াতে স্কুলবাসে আগুন দেয় সন্ত্রাসীরা। এসময় বাসের ভেতর ঘুমন্ত পারভেজ গুরুতর দগ্ধ হন। তার বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা ইউনিয়নের বাড়াইভিকরা গ্রামে।

আরো পড়ুন:

ঢাকায় সমাবেশে আহত সেই শিক্ষিকা মারা গেছেন

লিবিয়ায় নৌকাডুবি: ৪ বাংলাদেশির মৃত্যু

আরো পড়ুন: মানিকগঞ্জে স্কুলবাসে আগুন 

শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‍“গত বৃহস্পতিবার স্কুলবাসটিতে আগুন দেওয়া হয়। এতে দগ্ধ হন বাসটির ভেতর  ঘুমিয়ে থাকা চালক পারভেজ। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। স্কুলবাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” 

ঢাকা/চন্দন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ