পুলিশের এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেয়ার কারণে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পতদ্যাগ এবং মেলা ইস্যুতে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই বলে উল্লেখ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতৃত্বাধীন আটটি সংগঠন। 

তারা জানান, যেহেতু এসআই সুকান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেহেতু এখন আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই। উল্লিখিত ইস্যুতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততাও নেই। কেউ ব্যক্তি স্বার্থে বা কোনো ব্যানারে অনৈতিক কিছু করলে তার দায়ভার তারা নেবে না বরং আইনের আওতায় নেয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা। 

আজ সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে  আট সংগঠনের যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একাংশের নেতারা, রেড জুলাই, জুলাই রেভ্যুলেশনারী এলায়েন্স, জাস্টিস ফর জুলাই, ইনকিলাব মঞ্চ, আপ বাংলাদেশ, রঙমশাল ও পুসাবের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

আন্দোলন নিয়ে ‘হতবাক’ শহীদ আবু সাঈদের পরিবার

আন্দোলনে স্থবির এনবিআর

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো আব্দুল্লাহ-আল সাফিন।

গত ২৪ জুন বিকেলে একাধিক মামলার আসামি পুলিশের এসআই সুকান্তকে আটক করে খানজাহান আলী থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করে ছাত্র-জনতা। রাতেই থানা থেকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গত ২৫ ও ২৬ জুন কেএমপির সদর দপ্তর ঘেরাও করে পুলিশ কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। তবে এসআই সুকান্তকে গত ২৬ জুন চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানোর পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি অংশ কর্মসূচিতে যোগদান থেকে বিরত থাকে। 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অপর অংশ ছাত্র-জনতার ব্যানারে পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দারের অপসারণ দাবি করে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে গত ২৬ জুন রাতে বিক্ষোভকারীরা কর্মসূচি স্থগিত রেখে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন তারা। পুলিশ কমিশনারকে অপসারণ না করায় গত ২৮ জুন বেলা আড়াইটা থেকে ‘ব্লকেড কর্মসূচি’ শুরু করেন। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের মুখপাত্র সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি ফের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

লিখিত বক্তব্যে আব্দুল্লাহ-আল সাফিন বলেন, ‘‘এসআই সুকান্তকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় আমরা আন্দোলনে সরব হই। পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তারের পর আন্দোলন সফল হওয়ায় আমরা আন্দোলন থেকে সরে আসি। আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি, এখানো আমাদের গুটিকয়েক সহযোদ্ধাদের ব্যবহার করে একটি বিশেষ মহল ওই আন্দোলন ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। যার দায়ভার কোনোভাবেই জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতা নেবে না।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা জুলাইকে ব্যবহার করে এমন কোন কাজ করব না, যা জুলাই আন্দোলনকে বিতর্কিত করে। আর কেউ এমন কাজ করতে চাইলে আমরা তাদের প্রতিহত করব।’’

এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ-আল সাফিন বলেন, ‘‘জুলাই কর্মসূচির সঙ্গে মেলার যৌক্তিকতা নেই। যারা মেলার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন, তাদের সঙ্গে আমাদের সর্ম্পকও নেই।’’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতারা চাচ্ছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে খুলনা শহরের শিববাড়ি মোড়ের জিয়াহল চত্বরে ৩৬ দিন মেলা আয়োজন করতে।  

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ-আল সাফিন বলেন, ‘‘একটি স্বার্থান্বেষী মহল দৃষ্টিভঙ্গি অন্যত্র ঘুরিয়ে দিতে পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ দাবিতে সরব। এরপর দেখা যাবে, এসআই সুকান্ত ইস্যু বাদ দিয়ে অন্য কোনো কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবিতে ওই মহলটি সরব হচ্ছে।’’

সংবাদ সম্মেলনে জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। আগামীকাল ১ জুলাই থেকে এ কর্মসূচি শুরু হবে। 
 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এসআই স ক ন ত র য ক ত কত

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মো. আবদুল্লাহ (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিনকে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

খাগড়াছড়ি ও গুইমারার পরিস্থিতি থমথমে, নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর

ঠাকুরগাঁওয়ে মা-মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার 

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান আব্দুল্লাহ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন করা হয় আবদুল্লাহকে।

মারা যাওয়া আবদুল্লাহ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে। 

সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়াইল গ্রামে একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়রা আব্দুল্লাহকে আটক করে মারধর করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে সোপর্দ করার পর পুলিশ তার ওপর আরো নির্যাতন চালায়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে আবদুল্লাকে চারদিন আটকে রাখা হয়। ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিন এ ঘটনা নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কিংবা থানার ওসিকে অবগত করেনি।

আব্দুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় তার ছোট ভাই সাকিল মিয়া বাদী হয়ে সোমবার নবীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিম উদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা তবি মিয়া, আলামিন, আয়নাল হককে আসামি করা হয়। ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত এসআই মহিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাগড়াছড়িতে হত্যা ও হামলার ঘটনায় ৩ মামলা
  • পাথরঘাটায় ৪০ কেজি হরিণের মাংস জব্দ
  • পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গ্রেপ্তার