হারানো স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের জন্য বিশ্রাম এবং সঠিক খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরের সময় ডায়েট বা সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা যেমন জরুরি, ঠিক তেমনি ডেঙ্গু জ্বর-পরবর্তী খাদ্য ব্যবস্থা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এ জ্বর থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর শারীরিক শক্তি ও পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করা খুব জরুরি।
l ডেঙ্গু জ্বর-পরবর্তী খাদ্য হিসেবে প্রোটিন, ভিটামিনস, মিনারেল ও তরল খাবার খাওয়া খুব জরুরি। প্রোটিন রক্ত গঠন ছাড়াও কোষের সুস্থতার জন্য একটি জরুরি পুষ্টি উপাদান। মুরগির স্যুপ, ডিম, পাতলা দুধ বা ছানা, দই, মাছ ইত্যাদি খাবার থেকে আসে প্রোটিন।
l ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার পর রোগীর শরীরে প্রচুর শক্তির প্রয়োজন হয়। জাউ বা স্যুপ জাতীয় তরল খাবারের বড় সুবিধা হলো এটি হজম করা খুব সহজ, রোগীকে অতিরিক্ত খাওয়ানোর পরেও ভারী এবং বমি বমি অনুভব হয় না। মুরগির সঙ্গে সবজির পাতলা স্যুপ করে খেলেও তরলের চাহিদা পূরণ হয়, প্রোটিন ও ভিটামিন পাওয়া যায়। স্যুপ খেলে দুর্বলতা কমে।
l ভিটামিন যুক্ত খাবার শরীরের পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, যা ডেঙ্গু জ্বর-পরবর্তী খুব জরুরি।
l তাজা ফলের রস (চিনি ছাড়া), ডাবের পানি, আখের গুড়ের শরবত, ফ্রেশ ফল, ফলের স্মুদিম যেকোনোভাবে ফল খেলে তা থেকে এনার্জি পাওয়া যায়। ফলের পটাশিয়াম, খাদ্য আঁশ, ভিটামিন সি ও অন্যান্য ভিটামিন পাওয়া যায়। বেদানা অনেক উপকারী ফল। ডেঙ্গু জ্বরের সময় এবং পরবর্তী সময়ে নিয়মিত বেদানা খেলে উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়া মাল্টা, কমলা, পাকা পেঁপে, কলাও খেতে হবে নিয়মিত। রঙিন ফল স্কিন ও চুলের রিকভারিতেও খাওয়া জরুরি।
l ভিটামিন কে, ই, এ সমৃদ্ধ শাক-সবজি ব্রোকলি, পালংশাক, পেঁপে ছাড়াও গাঢ় সবুজ রঙের সবজি ডেঙ্গু জ্বরের সময় এবং পরবর্তী সময়ে খুব উপকারী। স্যুপ করে, জুস করে অথবা মাছ দিয়ে পাতলা ঝোল করে খেতে পারেন।
l ডেঙ্গু জ্বর থেকে সেরে উঠতে পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তরল খাবারগুলো শরীর দ্বারা দ্রুত শোষিত হওয়ার সুবিধা রয়েছে। উভয়ই রিহাইড্রেটিং এবং দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে। রস বা জুস বিশেষ করে সাইট্রাস ফল বা টক ফল শরীরের গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সেরা উৎস। কমলালেবু বা লেবু জাতীয় ফল পুষ্টি ও ভিটামিনে পূর্ণ, যার মধ্যে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী ভিটামিন সি, অন্ত্রবান্ধব এবং ফাইবার, যা হজমের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। ডাবের পানি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ ও লবণের উৎস। ফলের রস রোগীদের স্বাভাবিক ইলেকট্রোলাইটের মাত্রা বজায় রাখতে, উচ্চ জ্বরের কারণে ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে এবং শরীরের দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে।
l রোগীকে এড়ানো উচিত, যার মধ্যে রয়েছে: প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজা খাবার, মসলাদার চটকদার খাবার,অতিরিক্ত মসলাদার খাবার, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যেমন চা-কফি, অ্যালকোহল ইত্যাদি। v
[পুষ্টিবিদ, ফরাজী ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল লিমিটেড]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ য য কর পরবর ত জ বর র
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্র সংসদের দাবিতে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দৃঢ অবস্থান
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (মাকসু) প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমরণ ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে অপরাধ তত্ত্ব ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী আক্তারুজ্জামান সাজু আমরণ অনশন শুরু করেন। তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতীকী অনশনে অংশ নেন।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মসূচি চলছে। অনশনরত আক্তারুজ্জামান অসুস্থ হওয়ায় স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৯ দফা দাবির অন্যতম হলো দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা। এই লক্ষ্যেই ২১ জুলাই তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবিপত্র দেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও রিজেন্ট বোর্ড থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
পরবর্তীতে ২ আগস্ট প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে ১০ আগস্টের মধ্যে রিজেন্ট বোর্ডে প্রস্তাবটি পাস করানোর আহ্বান জানানো হয়। তবে সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও দাবি বাস্তবায়িত হয়নি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।
অনশনস্থলে শিক্ষার্থীরা “ভাত নয়, আইন খাবো”, “তালা ভাঙছি, মাকসু আনবো”, “ইনকিলাব জিন্দাবাদ”সহ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
গতকাল রাত ১০টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে এসে শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করীম বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবিটি পরবর্তী রিজেন্ট বোর্ডে তুলব। যদি তখনও সমাধান না আসে, তারা পরবর্তী কর্মসূচি নিতে পারেন। আমরা অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেছি এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছি যেন কোনো নিরাপত্তা বা স্বাস্থ্যঝুঁকি না হয়।”
বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের আবেদনের বিষয়ে প্রশাসন আলোচনা করেছে এবং একটি মিটিংও হয়েছে। আবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী কীভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে, সেই প্রক্রিয়া চলছে।”
ঢাকা/আবিদ/ইভা