প্রেমের টানে চীন থেকে গোপালগঞ্জে চীনা নাগরিক
Published: 1st, July 2025 GMT
প্রেমের টানে সুদূর চীন থেকে গোপালগঞ্জে ছুটে এসেছেন এক চীনা যুবক। জেলা শহরের নীচুপাড়া এলাকার প্রেমিকা সীমার বাড়িতেই উঠেছেন ওই চীনা নাগরিক। ইতিমধ্যে বিয়েও সম্পন্ন হয়েছে। এতে সীমার পরিবারে চলছে আনন্দের বন্যা। চীন দেশের নতুন জামাইকে দেখতে ভিড় করছেন আশপাশের লোকজনও। সকলের কাছে এই নব দম্পতির জন্য দোয়া চেয়েছেন সীমার পরিবার।
গতকাল সোমবার (৩০ জুন) জেলা শহরের নীচুপাড়া এলাকার সীমার বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, গত ৬ মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে গোপালগঞ্জে মেয়ে সীমা আক্তারের (১৮) সাথে পরিচয় হয় চীনা নাগরিক লিউ সিলিয়ানের (৩৫)। এরপর বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। তাদের মধ্যে চলে ভিডিওকলে কথা বার্তা আর খোঁজখবর। দুই পরিবারের সাথেও ভিডিওকলের মাধ্যমে হয় পরিচয়।
এরপই জেলা শহরের নীচুপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো.
এদিকে, সোমবার (৩০ জুন) পরিবারের সকল সদস্য ও আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতে পালন করা হয় নানা আনুষ্ঠিকতা। মেয়ের প্রেমের কথা জানার পর প্রেমিক লিউ সিলিয়ানকে মেনে নেন সীমার মা-বাবা। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়েতে সম্মতি দেন তারা।
চীনা ওই যুবক ও জামাইকে দেখেতে সীমার বাড়িতে ভীড় করছেন আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা। বিয়ে হওয়ায় এই নবদম্পতিকে খুশি হয়ে দোয়া করছেন সবাই। যেন তাদের বিবাহ জীবন সুখের হয়।
সীমার বাবা মো. আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, “আমার মেয়ে চীনা নাগরিক লিউ সিলিয়ানের সাথে বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় বলে আমাদের জানান। আমি তাকে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে বললে লিউ সিলিয়ান বিয়ে করবে বলে আমাদের জানায়। পরে আমি আমার মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়েতে সম্মতি দেই। লিউ সিলিয়ান দেশে আসার পর তার মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনের সম্মতিতে এফিডেভিট করে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে রবিবার (২৯ জুন) ছেলে মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়। সোমবার আমার পরিবারের সকল সদস্য ও আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াতের মাধ্যমে নানা আনুষ্ঠানিকতা পালন করি।”
সীমা আক্তার বলেন, “মাস ছয়েক আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। এরপর বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে প্রতিদিনই কথাবার্তা চলতো। একদিন হঠাৎ করে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে। তখন আমি তাকে জানাই সে যদি বাংলাদেশে আসে তাহলে বিয়ে করব। সে আমাকে আশ্বস্ত করে বাংলাদেশে আসবে এবং বিয়ে করবে। সে চীন থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে এয়ারপোর্টে পৌঁছায়। তখন আমার মা-বাবাকে বিষয়টি জানাই। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। আমি ভালবাসার মানুষকে বিয়ে করতে পরে খুশি। ও খুবই ভাল মনের মানুষ। ও আমাকে অনেক ভালবাসে।
লিউ সিলিয়ান জানান, তিনি চায়নার একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। বাংলাদেশে আসার জন্য দুই মাসের ছুটি চেয়েছিলেন। ছুটি না পেয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়ে প্রেমিকার টানে বাংলাদেশে এসেছেন। এক মাসের মধ্যে যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে বউকে সঙ্গে নিয়ে চীনে চলে যাবেন।
লিউ সিলিয়ান আরো জানান, নিজ ধর্ম ত্যাগ করে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তার নাম মো. সাদেকুর রহমান সানি।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ অনেক ভাল। আমার স্ত্রীর পরিবারের মানুষ অনেক ভাল। আমি ওদের সবাইকে ভালবাসি। সারা জীবন সীমাকে ভালবেসে যাবো। আর ওকে সাথে নিয়ে চীনে চলে যাব। সবার কাছে দোয়া চাই।”
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র র স প লগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাজিলিয়ান আগুন নিভিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন
ফুটবল যাদের নেশা, তাদের চোখ ছিল একটাই ম্যাচে, বায়ার্ন মিউনিখ বনাম ফ্ল্যামেঙ্গো। একদিকে ইউরোপের বরফশীতল কৌশল, অন্যদিকে লাতিন আমেরিকার জ্বলন্ত আবেগ। দুইয়ের সংঘাতে শেষ হাসি হেসেছে বাভারিয়ান যন্ত্রনির্মাতা বায়ার্ন। রোববার দিবাগত রাতে ৪-২ গোলের জয় তুলে নিয়ে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে।
ফ্লোরিডার হার্ড রক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ যেন ছিল এক ফুটবল থ্রিলার। দ্রুত গোল, আত্মঘাতী ভুল, পেনাল্টি আর হ্যারি কেইনের দ্বৈত আঘাত।
ম্যাচের মাত্র ৬ মিনিটেই ফ্ল্যামেঙ্গো নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে এগিয়ে দেয় বায়ার্নকে। এক আত্মঘাতী ভুলে খেলার রঙ বদলে যায়। এরপর ৯ মিনিটে দূর থেকে দুরন্ত বাঁ পায়ের শটে হ্যারি কেইন দ্বিতীয় গোলটি করে বুঝিয়ে দিলেন এটা তাদের রাত।
আরো পড়ুন:
সান সিরোতে ইন্টারের বায়ার্ন পরীক্ষা
‘ডার ক্লাসিকেরে’ বায়ার্নকে রুখে দিয়েছে ডর্টমুন্ড
জার্মান রক্ষণভাগে ফাটল ধরাতে দেরি করেননি জেরসন। ৩৩ মিনিটে ফিলিপে লুইজের পাসে গোল করে ২-১ ব্যবধানের বার্তা দেন ব্রাজিলিয়ানরা। কিন্তু বায়ার্নের মধ্যমাঠে থাকা গোরেতজকা ৪১ মিনিটে তৃতীয় গোল করে আবার ব্যবধান বাড়িয়ে দেন। প্রথমার্ধ শেষে স্কোরলাইন— বায়ার্ন ৩, ফ্ল্যামেঙ্গো ১।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ৩-২ করে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরান ফ্ল্যামেঙ্গোর জর্জিনহো। এরপর একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকে ব্রাজিলিয়ান দলটি। কিন্তু শেষ প্রহরে ফের দৃশ্যপটে হ্যারি কেইন। ৭৩ মিনিটে করা তার দ্বিতীয় গোলই নিশ্চিত করে দেয় জার্মান জয়ের ছক।
শেষ দিকে একাধিক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় ফ্ল্যামেঙ্গো। গোললাইন পেরোতে পারল না বল, পেরোতে পারল না প্রতিরোধশীল বায়ার্নকে।
এমন দাপুটে ফুটবলের পর ব্রাজিলের আরেক প্রতিনিধি ফ্ল্যামেঙ্গোও বিদায় নিলো টুর্নামেন্ট থেকে। আর বায়ার্ন পা রাখল শেষ আটে। যেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে ইউরোপ সেরা পিএসজি।
ঢাকা/আমিনুল