মুন্সীগঞ্জের সাবেক এমপি বিপ্লব ৭ দিনের রিমান্ডে
Published: 1st, July 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সজল হত্যা মামলায় মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবের জামিন নামঞ্জুর করে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জের এক নম্বর আমলি আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান এই আদেশ দেন। এর আগে সদর থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
এদিকে মব এড়াতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কঠোর নিরাপত্তায় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় ফয়সাল বিপ্লবকে। আদালতে হাজির করা হয় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে। এরপর আসামির জামিন এবং রিমান্ড নামঞ্জুরের আবেদন নিয়ে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট শাহিন মো.
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মুন্সীগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর ছাড়াও পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম ও এপিপি নুর হোসেন রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। প্রায় ২০ মিনিট রিমান্ড শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
এ সময় আদালতে পিনপতন নীরবতা লক্ষ্য করা গেছে। রিমান্ড শুনানি শেষে মুন্সীগঞ্জ এক নম্বর আমলি আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আদেশ দেন।
আদেশ ঘোষণার পর কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লবকে সরাসরি জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে আসামিকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পরপরই আদালত প্রাঙ্গণে ফয়সাল বিপ্লবের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেন অনেকেই। বিক্ষোভকারীরা বলেন, সাধারণত সকাল ১০টার আগে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয় না। তাই এতো আগে তাকে আনা হবে, এটি তারা জানতেন না।
বিক্ষোভে থেকে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লবের বিরুদ্ধে 'আমার ভাই মরল কেন, খুনি বিপ্লব জবাব দে, খুনি বিপ্লবের ফাঁসি চাই, দিতে হবে দিতে হবে' এমন স্লোগানে আদালত প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সদর থানার ওসি সাইফুল আলম জানান, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রিয়াজুল ফরাজী (২৮), ডিপজল (১৯) ও মো. সজল নিহত ও গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। ওই ঘটনায়
সদর থানায় ৩টি হত্যা ও ৪টি হত্যাচেষ্টা মামলাসহ ৭টি মামলা রুজু করা হয়। প্রতিটিতে মামলায় সাবেক এমপি মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবকে আসামি করা হয়েছে।
সদর থানা পুলিশ জানায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লবসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকা মামলার আসামি ও সাবেক এমপি বিপ্লবকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২২ জুন রাজধানী ঢাকার মনিপুরীপাড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর তাকে পল্টন থানায় দায়ের করা বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করে ডিবি পুলিশ। এক সপ্তাহ পর মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় দায়ের করা মামলায় বিপ্লবকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব ক এমপ ব প লবক সদর থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রঙ্গনা সিনেমার শুটিংয়ে ফিরছেন শাবনূর
চলচ্চিত্রপ্রেমীদের স্বপ্নের নায়িকা শাবনূর। একটা সময় তাঁর নামেই হল ভরে যেত। বেশ বিরতির পর তিনি অভিনয়ে ফিরেছিলেন ‘রঙ্গনা’ সিনেমা দিয়ে। সিনেমাটির দৃশ্যধারণ অর্ধেকের বেশি শেষ হয়েছে। গত বছরের এপ্রিলে ‘রঙ্গনা’র দৃশ্যধারণ শুরু হয়। মে মাসে সিনেমার শুটিং শেষ করে আবার সিডনিতে গেছেন শাবনূর। এরপর কেটে গেল ১৪ মাসেরও বেশি সময়।
ওই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, নিজেকে আরও একটু প্রস্তুত হয়েই শুটিংয়ে ফিরবেন তিনি। ‘রঙ্গনা’র বাকি অংশের শুটিং হওয়ার কথা ছিল গত ৮ আগস্ট থেকে। দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে ওই সময় দেশেই ফিরতে পারেননি অভিনেত্রী। তাই শুটিং পিছিয়েছিলেন শাবনূর। অস্ট্রেলিয়া থেকে মোবাইল ফোনে তিনি বলেছিলেন, ‘এখন শুটিং করার অবস্থায় আমরা কেউ নেই। দেশের এ পরিস্থিতিতে কেউই শুটিং করতে চাইবেন না। সহকর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেশে ফিরব। তারপর শুটিংয়ের জন্য নতুন করে শিডিউল করব।’
এরপর ‘রঙ্গনা’র দ্বিতীয় ধাপের শুটিং শুরু করার কথা বলেছিলেন নির্মাতা আরাফাত। জানিয়েছিলেন, ‘দ্বিতীয় অংশের জন্য কিছুটা প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল। এ কারণেই দীর্ঘ একটা বিরতি। আমাদের সব প্রস্তুতি এখন সম্পন্ন। আশা করছি, ডিসেম্বরে আবার ‘রঙ্গনা’র ক্যামেরা চালু করতে পারব।”
এর মধ্যে গুজব রটে যায়, শাবনূর সম্মানীর কারণে নতুন করে শিডিউল পাচ্ছেন না। এ কারণে মাঝপথে থেমে গেছে রঙ্গনার কাজ। নির্মাতা তাঁর সঙ্গে নাকি কথা দিয়ে কথা রাখেননি। সিনেমার দুই দফা কাজ পিছিয়েছে। আবার শাবনূরও সিনেমার কাজের বিষয়ে কোনো তথ্য দিচ্ছেন না। এ কারণে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। ওই সময় খবর ছড়িয়েছে, রঙ্গনা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন শাবনূর। এমন খবরে চলতি বছর জানুয়ারিতে সিনেমায় তাঁর কাজ করা নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন শাবনূর।
ফেসবুকে ওই অভিনেত্রী লেখেন, ‘আমার সিনেমা-সম্পর্কিত কোনো খবর আমার মুখ থেকে না শোনা পর্যন্ত গুজবে কান দেবেন না এবং অনুগ্রহ করে কারও কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। এরপর কেটে গেল ৫ মাস। তবুও শুটিংয়ে কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না শাবনূরের। তাহলে কবে শুটিংয়ে ফিরবেন শাবনূর? এমন প্রশ্নের জবাবে নির্মাতা বলেন, ‘কেউ কেউ বলার চেষ্টা করছেন, রঙ্গনার শুটিং আর হচ্ছে না। এটা পুরোপুরি অবাস্তব কথা। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের শুটিং হবে। শিগগিরই শাবনূর আপা দেশে আসবেন, তারপর শুরু হবে সিনেমার দৃশ্যধারণ। গরম পড়ছে প্রচুর। এটি কমলে শুটিংয়ের কথা ভাবব। শাবনূর আপুর সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা হচ্ছে। তাঁর সন্তানের স্কুল বন্ধের ব্যাপার রয়েছে। সবকিছু পজিটিভ আছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী নভেম্বরে সিনেমার শুটিং করার পরিকল্পনা আছে।’
শাবনূরও শুটিংয়ে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন ঘনিষ্টজনদের কাছে। বরাবরের মতো এবারও শুটিংয়ে ফেরা না ফেরা নিয়ে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
চলতি বছর এপ্রিল মাসের শুরুতে শাবনূর তাঁর অসুস্থ মাকে নিতে ৮ ঘণ্টার জন্য ঢাকায় আসেন। ফিরেও যান চুপিসারে। আর গত মাসের মাঝামাঝি সিডনির ল্যাকেম্বার একটি রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন তিনি। এরপর বাসায় বিশ্রাম ছিলেন। এখন সুস্থ বলে জানিয়েছেন এই নন্দিত অভিনেত্রী।