মব ভায়োলেন্সসহ মানুষে মানু‌ষে ঘৃণা, বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা ও হিংস্রতা সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে ব‌লে মন্তব‌্য ক‌রে‌ছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

তি‌নি বলেন, “দেশের এমন ভয়ার্ত পরিস্থিতির জন্য ১৯৭১ এর দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে জীবন দেয়নি এদেশের সূর্যসন্তানরা। মানুষে মানুষে ঘৃণা, বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা ও হিংস্রতা সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।”

পুরান ঢাকায় সোহাগ হত‌্যাকা‌ণ্ডের প্রতি‌ক্রিয়ায় শ‌নিবার (১২ জুলাই) এক বিবৃ‌তি‌তে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন।

‘মব ভায়োলেন্সের নামে মানুষ হত্যা ও দেশব্যাপী চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চল‌ছে’ জা‌নি‌য়ে এসব ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সোহাগ হত্যায় গভীর শোক প্রকাশ করে গোলাম মোহাম্মদ কাদের নিহতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।একইসাথে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের প্রকা‌শিত সংবাদের তথ‌্য তু‌লে ধ‌রে জিএম কা‌দের ব‌লেন, “২৪ সালের আগষ্ট থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত ১০ মাসে মব ভায়োলেন্সে সারা দেশে হত্যা করা হয়েছে ১৭৪ জনকে। ঢাকা বিভাগে ৮০, খুলনা বিভাগে ১৪, রাজশাহী বিভাগে ১৬, রংপুর বিভাগে ৭, সিলেট বিভাগে ৫, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯, বরিশাল বিভাগে ১৭ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জন নির্মম হত্যার শিকার হয়েছেন। মব ভায়োলেন্সে হত্যার তথ্যে ও সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমাদের সম্প্রীতির ঐতিহ্য ধংস হয়ে যাচ্ছে।”

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান সরকা‌রের কড়া সমা‌লোচনা ক‌রে বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের কড়া হুঁশিয়ারিতেও কমছে না ভয়ার্ত ও ঘৃণ্য মব ভায়োলেন্স। সারা দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।”

মব ভায়োলেন্স সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীদের আইনের আওয়তায় এনে দেশে নিরাপদ পরিস্থিতি সৃষ্টিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মব ভ য় ল ন স পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে বিভ্রান্তি, আজ আবার বৈঠক হতে পারে

দেশে সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়বে কি না, বাড়লেও কত টাকা বাড়বে, সেটি ফয়সালা হতে পারে এ বৈঠকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ভোজ্যতেল পরিশোধন ও উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গত সোমবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ানোর কথা জানায়। এতে বাজারে একধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তবে সরকার এ বিজ্ঞপ্তিকে আমলে নেয়নি। গত মঙ্গলবার বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন, সরকার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি।

পুরো পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে গতকাল বুধবার বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম কার্যকর করেনি বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) এত দিন যা ছিল, তা-ই আছে। নতুন এমআরপির কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, কারখানার মালিকেরা মঙ্গলবার তাঁকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত খুচরা পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়েনি।

প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের বর্তমান দাম ১৮৯ টাকা। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন দাম হবে ১৯৫ টাকা। আর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের নতুন দাম ১৭৭ টাকা, যার বর্তমান দাম ১৬৯ টাকা। এ ছাড়া খোলা পাম তেলের দাম ১৫০ টাকা লিটার থেকে বেড়ে ১৬৩ টাকা করার কথা বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

জানা গেছে, ভোজ্যতেলের দাম বাড়াতে কয়েক মাস ধরেই চেষ্টা করে আসছেন পরিশোধন কারখানার মালিকেরা। গত ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। এ বৈঠক শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছিল, ‘কারখানামালিকেরা দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশি।’

সাধারণত বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন দেয়। গত মাসে বিটিটিসি ভোজ্যতেল নিয়ে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার এ নিয়ে আরও পর্যালোচনার দায়িত্ব দেয় দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউনট্যান্টস অব বাংলাদেশকে (আইসিএমএবি)।

আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট মাহতাবউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে আমরা কাজটা করছি।’

সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল গত এপ্রিল মাসে। তখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮৯ টাকা করা হয়েছিল। এ ছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৬৯ টাকা এবং বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৭০ টাকা বাড়িয়ে ৯২০ টাকা করা হয় তখন।

অবশ্য আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে এসে খোলা পাম তেলের দাম লিটারে ১৯ টাকা কমিয়ে ১৫০ টাকা করা হয়। ব্যবসায়ীরা তখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল, বাড়তে পারে লিটারে বড়জোর ১ টাকা।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিটিটিসির মাধ্যমে ভোজ্যতেলসহ সব নিত্যপণ্য নিয়ে পর্যালোচনা করার নির্ধারিত নিয়মকানুন আছে। তা অনুসরণ না করার ফলেই বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আর এ কারণে ভোক্তারা অহেতুক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। ক্যাবের পক্ষ থেকে আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ