বাংলাদেশে কফি–সংস্কৃতি প্রসারে ‘আমা কফি’
Published: 1st, October 2025 GMT
বিশ্বজুড়ে কফি এখন শুধু একটি পানীয় নয়, এটি এখন শহুরে সংস্কৃতির বড় একটি অংশ। বাংলাদেশেও তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে কর্মব্যস্ত মানুষের কাছে কফির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আর এই কফি-সংস্কৃতিকে বাংলাদেশে জনপ্রিয় করতে কাজ করছে আমা কফি। আবুল খায়ের গ্রুপ ২০২১ সালে আমা কফি বাজারে আনে। আসার পর স্বল্প সময়েই আমা কফি তার গুণগত মান ও বৈচিত্র্যময় পণ্যের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে।
ব্রাজিলের স্বাদ যখন হাতের মুঠোয়
আমা কফির প্রধান আকর্ষণ হলো এর ব্রাজিলীয় কফি ব্লেন্ড। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এই ব্লেন্ড তৈরি করা হয়। ব্রাজিল বিশ্বের বৃহত্তম কফি উৎপাদনকারী দেশ। সেই দেশের ঐতিহ্যবাহী মানের কফিকে প্রক্রিয়াজাত করে আমা বাংলাদেশে নিয়ে এসেছে। একই সঙ্গে আমা কফি পণ্যের বৈচিত্র্য নিয়ে আসছে বাজারে। তাদের রয়েছে তিন ধরনের পণ্য। সব শ্রেণির ভোক্তার চাহিদা পূরণ করছে আমা কফি। ‘থ্রি ইন ওয়ান ইনস্ট্যান্ট কফি প্যাক’ যারা চটজলদি এবং চিনিসহ কফি পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এটি একটি আদর্শ সমাধান। অন্যদিকে চিনিমুক্ত (সুগার ফ্রি) ইনস্ট্যান্ট কফি, যাঁরা অতিরিক্ত চিনি ছাড়া কফি পান করতে চান তাঁদের জন্য। এ ছাড়া ক্ল্যাসিক কফির মাধ্যমে কফির সেই চিরচেনা ‘বিটার সুইট’ স্বাদ পাচ্ছেন কফিপ্রেমীরা।
তারুণ্যের মধ্যে জনপ্রিয়তা ও বাজার সাফল্য
দেশে আমা কফির দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জনের পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলো নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্যতা। আন্তর্জাতিক মানের স্বাদ, সহজলভ্যতা ও সুগার ফ্রি প্যাক তরুণ ও ডায়েট সচেতন গোষ্ঠীকে আকৃষ্ট করেছে। আর তাই মাত্র তিন বছরের মধ্যে আমা কফি আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কফি আমদানি বাজারে একটি প্রভাবশালী ব্র্যান্ড হিসেবে।
আমা বেভারেজ বিজনেস সলিউশন
শুধু খুচরা কফি প্যাকেট নয়, প্রতিষ্ঠান এবং অফিসের জন্য আমা কফি একটি সম্পূর্ণ কফি পরিবেশন সমাধানও সরবরাহ করছে। আমা বেভারেজ বিজনেস সলিউশনের মাধ্যমে হোটেল, ক্যাফেটেরিয়া, রেস্টুরেন্ট, কুলিং কর্নার, অফিস এবং সামাজিক অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হট বেভারেজ পরিবেশনের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা আমা নিশ্চিত করে। এই সমাধানের আওতায় তারা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কোম্পানির তৈরি ভেন্ডিং মেশিন সরবরাহ করে। সেই সঙ্গে ভেন্ডিং মেশিনে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় কফি, ইনস্ট্যান্ট টি ও হট চকলেট ইত্যাদি উপকরণও সরবরাহ করা হয়। পরিবেশনের জন্য কাগজের কাপের ব্যবস্থাও আছে। ভেন্ডিং মেশিনের জন্য যেকোনো প্রযুক্তিগত সহায়তা (টেকনিক্যাল সাপোর্ট) এবং রক্ষণাবেক্ষণের (মেইনটেন্যান্স) জন্য আমা কফির রয়েছে অভিজ্ঞ কারিগরি দল।
আমা কফি তার ব্রাজিলীয় গুণগত মান, স্বাস্থ্যসচেতন পণ্য ও তরুণ প্রজন্মকে লক্ষ্য করার পাশাপাশি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আধুনিক সমাধান প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের কফি বাজারে একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।