পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের পর প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। আজ সোমবার দেশটি বলেছে, পারমাণবিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রত্যেকেরই ‘খুব সতর্ক’ থাকা উচিত।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিনগুলো ইতিমধ্যে যুদ্ধের দায়িত্বে আছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে সামগ্রিকভাবে আমরা এমন কোনো বিতর্কে জড়াতে চাই না এবং এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যও করতে চাই না।’

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তেজনা: বিশ্ব কি পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে০২ আগস্ট ২০২৫

এদিকে উত্তেজনার মধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আগামী বুধবার রাশিয়া সফর করতে পারেন। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে রুশ বার্তা সংস্থা তাস এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা আগামী শুক্রবার শেষ হচ্ছে। এর মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে কোনো চুক্তি না হলে রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। সময়সীমা শেষ হওয়ার দুই দিন আগে উইটকফের এই সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

গত রোববার ট্রাম্প নিজেই উইটকফের রাশিয়া সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বুধ কিংবা বৃহস্পতিবার উইটকফ রাশিয়া সফর করতে পারেন। সফরকালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গে অনলাইনে বাগ্‌যুদ্ধের জেরে দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে সাবমেরিন কোথায় মোতায়েন করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।

আরও পড়ুনপারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন: ৮ আগস্টের আলটিমেটামের পর কী করবেন ট্রাম্প১৩ ঘণ্টা আগে

উইটকফ এর আগেও বেশ কয়েকটি সফরে পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছেন। কিন্তু পুতিনকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত করাতে ব্যর্থ হয়েছেন। আগামীকালের সফরটি মস্কোর অনুরোধে হচ্ছে কি না, সে সম্পর্কে কিছু বলবে না বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। এ সফর থেকে কী প্রত্যাশা করা যায়, তা-ও জানায়নি।

পেসকভ বলেছেন, ‘উইটকফ মস্কোতে এলে আমরা সব সময়ই খুশি হই। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পেরেও আমরা খুশি। আমরা এ যোগাযোগকে গুরুত্বপূর্ণ, অর্থবহ ও খুব উপকারী বলে বিবেচনা করি।’

গত সপ্তাহে পুতিন বলেছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে শান্তি আলোচনায় কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু পুতিনের এমন বক্তব্যের পরেও যুদ্ধ অব্যাহত রেখেছে রাশিয়া। এমনকি যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মুখেও তাঁর অবস্থান পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র স বম র ন

এছাড়াও পড়ুন:

নিরস্ত্রীকরণে সম্মতির খবর নাকচ: হামাস বলল, দখলদারির মোকাবিলা জাতীয় ও আইনি অধিকার

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা চলাকালে অস্ত্রত্যাগের বিষয়ে সম্মতি জানানোর খবরের বিরোধিতা করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি দখলদারি মোকাবিলার জাতীয় ও আইনি অধিকার তাদের রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজায় আটক থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের স্বজনদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে উইটকফ তাঁদের বলেন, হামাস জানিয়েছে, তারা ‘নিরস্ত্রীকরণে প্রস্তুত’। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ এটা ফলাও করে প্রচার করেছে।

মার্কিন দূতের এমন মন্তব্য সংবাদমাধ্যমে প্রচারের পর গতকাল শনিবার এর তীব্র বিরোধিতা করে হামাস। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, যতক্ষণ (ইসরায়েলি) দখলদারি বহাল থাকবে, ততক্ষণ তা প্রতিরোধ করা এবং সেটার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরা তাদের জাতীয় ও আইনি অধিকার।

‘(ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড) পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত (দখলদারির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরা) আমাদের পূর্ণ জাতীয় অধিকার। এর মধ্যে প্রধান হলো, জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি সম্পূর্ণ সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এ অধিকার ত্যাগ করা যাবে না’, বলেছে হামাস।

স্টিভ উইটকফ গতকাল ইসরায়েলের তেল আবিবে জিম্মিদের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করেন। এর এক দিন আগে তিনি গাজায় গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল–সমর্থিত ‘বিতর্কিত’ সংস্থা জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণ সরবরাহ কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।

আরও পড়ুনস্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস০১ আগস্ট ২০২৫

গাজার এখনকার অপুষ্টিজনিত সংকটময় পরিস্থিতিতে স্টিভ উইটকফের এ সফরকে ‘সাজানো অনুষ্ঠান’ বলে সমালোচনা করেছে হামাস।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত মে মাসে জিএইচএফ ত্রাণকেন্দ্র পরিচালনা শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০–এর বেশি ফিলিস্তিনি ত্রাণ নিতে গিয়ে হামলায় নিহত হয়েছেন।

আরও পড়ুনভাইরাল হওয়া ছবিটি নিয়ে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ-বিতর্ক, পেছনের সত্যটা কী১৮ ঘণ্টা আগে

গাজায় হত্যাকাণ্ড আর জিএইচএফের কার্যক্রমের ক্রমবর্ধমান সমালোচনা সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন দৃঢ়ভাবে এ সংস্থার পাশে দাঁড়িয়েছে। গত জুনে ওয়াশিংটন জিএইচএফের জন্য ৩০ মিলিয়ন (৩ কোটি) ডলার তহবিল অনুমোদনের কথা জানিয়েছে।

একদিকে গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি, অন্যদিকে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে ওই মন্তব্য করেছেন স্টিভ উইটকফ।

আরও পড়ুনগাজার নাসের হাসপাতালে পাঁচ দিনে কী কী দেখলেন রয়টার্সের সাংবাদিকেরা৩১ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনগাজায় নৃশংসতা চালিয়ে ইসরায়েল কি পশ্চিমা বিশ্বেও একঘরে হয়ে যাচ্ছে০১ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়া যাচ্ছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত
  • উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ব্যবহারিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ
  • নিরস্ত্রীকরণে সম্মতির খবর নাকচ: হামাস বলল, দখলদারির মোকাবিলা জাতীয় ও আইনি অধিকার
  • স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস