রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা
Published: 7th, August 2025 GMT
৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ বৃহস্পতিবার গুলশান থানায় এই মামলা করা হয়। এ ছাড়া সিআইডি আজ আদালতের নির্দেশে যমুনা ফিউচার পার্কে এক লাখ বর্গফুট কমার্শিয়াল স্পেস (বাণিজ্যিক স্থান) ক্রোক করেছে।
আজ সিআইডির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রংধনু গ্রুপের মালিক রফিকুল ইসলাম এবং তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগের অনুসন্ধান করে সিআইডি। অনুসন্ধানকালে সিআইডি জানতে পারে, রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জমি কেনা বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে বিক্রি করে। বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির কাছে রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ ওরফে অপু ও মেহেদী হাসান দিপু গত ৮ মার্চ বিভিন্ন দলিলে সাড়ে ৭ একর জমি বিক্রি করেন। ওই তফসিলভুক্ত জমির মধ্যে গত ১ জুন সোয়া ৬ একরের বেশি জমি রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ ও মেহেদী হাসান বিভিন্ন দলিলে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের কাছে আবার বিক্রি করে ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে উপার্জন করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতিতে বালু ভরাট করার ভুয়া কার্যাদেশ দেখিয়ে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি টাকা এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেন রফিকুল ইসলামের ছেলেরা। তাঁরা ইসলামী ব্যাংক বারিধারা শাখা থেকে ভুয়া মূল্যায়ন কপি তৈরি করে অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় সম্পত্তির মূল্য দেখিয়ে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেন। এ ছাড়া তাঁরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঋণের টাকা পরিশোধ না করে অর্থ পাচারের মাধ্যমে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডায় নাগরিকত্ব গ্রহণে ২৪০ কোটি টাকার বেশি (২০ লাখ মার্কিন ডলার) বিনিয়োগ করেন।
এ কারণে প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি এবং অর্থ পাচার, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে রফিকুল ইসলাম এবং তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আজ গুলশান থানায় মামলা করে সিআইডি। একই সঙ্গে আজ ১৩টি ব্যাংক হিসাবের প্রায় ১৭ কোটি টাকা এবং যমুনা ফিউচার পার্কের লেভেল–২–এর এক লাখ বর্গফুট বাণিজ্যিক স্থান আদালতের আদেশে ক্রোক করে সিআইডি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স আইড
এছাড়াও পড়ুন:
মাদারীপুরে ২ কলেজে দুদকের অভিযান
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের নানা অভিযোগের ভিত্তিতে দুটি কলেজে অভিযান চালিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দিনব্যাপি অভিযান পরিচালনা করা হয়। ডাসার সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় (শেখ হাসিনা একাডেমি এন্ড উইমেন্স কলেজ) ও শশীকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় জেলা দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান অপুসহ চারজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর ডাসার সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় জাতীয়করণ করার লক্ষ্যে পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই পরিপত্রে কলেজটির নিয়োগ, পদোন্নতি, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর ইত্যাদির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি সরকারের কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশ দেয়া হয়। পরিপত্র অনুযায়ী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা উপেক্ষা করে ছয়জন শিক্ষক ও কর্মচারী সৈয়দ অলিউর রহমান, সুদীপ বসু, রেবেকা পারভান এ্যানী, নুরুন নাহার, হুমায়ুন কবির ও মো. মামুনকে নিয়োগ দেয়।
আরো পড়ুন:
সাবেক মন্ত্রী জাবেদ ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা
ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিটের ভূমি অধিগ্রহণে জালিয়াতি, মামলার অনুমোদন
এছাড়াও শশীকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের এক প্রভাষক ভারতে অবস্থান করেন কিন্তু বেতন-ভাতা উত্তোলন করে এবং কলেজের অধ্যক্ষ নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ ওঠে। এ সব বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি দুদকের নজরে আসলে অভিযান পরিচালনা করে।
সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘‘চার সদস্যের একটি টিম দুটি কলেজে অভিযান চালিয়েছি। সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ওই শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। এ বিষয়ে তারা কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। আগামী রবিবার পর্যন্ত তারা সময় নিয়েছেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘শশীকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য হাতে পেয়েছি এবং এগুলোর রেকর্ডপত্র আমরা সংগ্রহ করেছি। এক শিক্ষক ভারতে থেকে বাংলাদেশ থেকে বেতন নিচ্ছেন, এ তথ্য সত্য কিন্তু কোন প্রক্রিয়ায় নিচ্ছেন; সেটা পর্যালোচনা করছি। সেটা আইন এবং বিধিবহির্ভূত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
ডাসার সরকারি মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকিয়া সুলতানা জানান, উপর মহলের মৌখিক অনুমতির ভিত্তিতে তখন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
ঢাকা/বেলাল/বকুল