জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েকজন নেতার কক্সবাজার সফরকে ঘিরে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আপনারা যেতেই পারেন, অসুবিধার কিছু নেই। সেখানে যদি কোনো কূটনীতিকের সঙ্গে আপনাদের আলাপ-আলোচনা হয়, হওয়ার যদি প্রোগ্রাম থাকে, সেটা হতেই পারে। কিন্তু মানুষের সংশয় হচ্ছে, সন্দেহ হচ্ছে, এই লুকোচুরি কেন?’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির শুক্রভাঙ্গা এলাকায় মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে নিহত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অফিস সহকারী মাসুমা বেগমের বাসায় যায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধিদল। সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রুহুল কবির রিজভীও সঙ্গে যান। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিজভী এনসিপি নেতাদের সফরের প্রসঙ্গে টেনে এ কথা বলেন।

এনসিপির উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকে এই হোটেলে আছি, তার পরের দিন কিছু সংবাদপত্রে কিছু কথা উঠল, তার পরের দিন আবার হোটেল পরিবর্তন করা, আবার আরেক জায়গায়, এটা মানুষ সন্দেহ করে। এটা করবেন কেন?’

একই প্রসঙ্গে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আজকে জনমনে আপনারা কেন সুযোগটি তৈরি করে দিচ্ছেন? কেন আপনাদের নিয়ে বিভিন্ন কথা উঠছে? আপনারা যেকোনো কাজেই যেতে পারেন, যে কারোর সঙ্গেই সাক্ষাৎ করতে পারেন, ওটা প্রকাশ্যে জানিয়ে দিন। সেটা আপনারা মিডিয়াকে বলুন, তাহলে তো আর কোনো প্রশ্ন আসে না।’

এসময় জন-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা রমজানের আগেই (আগামী বছর) নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড.

মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাই, জনগণের দাবি, মানুষের দাবি, মানুষের আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষাকে তিনি ধারণ করে রমজানের পূর্বেই নির্বাচন ঘোষণা করেছেন। আমি মনে করি, শুধু রাজনৈতিক দল নয়, জন–আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি এই ঘোষণাটা দিয়েছেন।’

আরও পড়ুনকক্সবাজার সফরের বিষয়ে হাসনাত, সারজিসসহ এনসিপির পাঁচ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ০৬ আগস্ট ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ সরকার উল্লেখ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজ আমরা যেটা খবরের কাগজে দেখেছি, নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে অতি শীঘ্র শিডিউল ঘোষণা করা এবং নির্বাচনী কাজকর্ম শুরু করার জন্য। আমরা মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকার একটি নিরপেক্ষ সরকার, গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য একটি প্রস্তুতিমূলক সরকার, বিপ্লবী সরকার এবং এই সরকার সমস্ত জন–আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করবেন, এটাই মূল কথা।’ অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

পরে নিহত মাসুমা বেগমের স্বামী মোহাম্মদ সেলিমের হাতে এককালীন আর্থিক সহায়তা তুলে দেন রিজভী। একই সঙ্গে মাসুমার ছেলে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর পড়ালেখার দায়িত্ব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিচ্ছেন বলেও পরিবারটিকে জানানো হয়। আবদুল্লাহ উত্তরার দিয়াবাড়ি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ালেখা করে।

এ সময় আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান, উপদেষ্টা আশরাফ উদ্দিন ও আবুল কাশেম, সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন, সদস্য মাসুদ রানা, মুস্তাকিম বিল্লাহ, শাকিল আহমেদ, ফরহাদ আলী সজীব উপস্থিত ছিলেন।

আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি জামিল হোসেন, ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসনাইন নাহিয়ান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান ও ওয়াকিল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা রুবেল হোসেন, ঢাকা কলেজ ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ আল মিসবাহ প্রমুখ।

আরও পড়ুনসাগরের পাড়ে বসে গভীরভাবে ভাবতে চেয়েছি: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী১ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল উপদ ষ ট ব এনপ র আপন র সরক র এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন ফর্মুলা-ই রেসিং কার আরও শক্তিশালী হচ্ছে

দ্রুতগতির বৈদ্যুতিক গাড়ির আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার নাম ফর্মুলা–ই। আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিযোগিতাকে ফর্মুলা-ই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ বলা হয়। ২০১৪ সালে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতায় বৈদ্যুতিক গাড়ির রেস দেখা যায়। ফর্মুলা–ই এখন পর্যন্ত দ্রুততম ও সবচেয়ে টেকসই রেসিং কার উন্মোচন করেছে। আগামী ২০২৬-২৭ মৌসুমে জেন–৪ নামের এই গাড়িটির অভিষেক ঘটবে। এটি বর্তমানে ফর্মুলা ওয়ানে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী যেকোনো গাড়ির চেয়ে দ্রুততর অ্যাক্সিলারেশন বা ত্বরণে চলতে পারে। এই নতুন গাড়িতে বিদ্যমান জেন–৩ ইভো মডেলের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি শক্তি থাকবে। ৩৫০ কিলোওয়াট থেকে ৬০০ কিলোওয়াট শক্তিতে পরিণত হবে গাড়িটি।

নতুন মডেলের গাড়িতে স্থায়ীভাবে সক্রিয় অল-হুইল ড্রাইভ থাকবে। এটি হবে শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য গাড়ি। নির্মাণের সময় এর মধ্যে কমপক্ষে ২০ ভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদান ব্যবহার করা হবে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফর্মুলা–ইর প্রধান নির্বাহী জেফ ডডস বলেন, বৈদ্যুতিক রেসিংয়ে এক দশকের বেশি সময়ের অগ্রগতি, উদ্ভাবন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার মেলবন্ধন এই গাড়ি। পরিচালক সংস্থা এফআইএর সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি এই গাড়িটি আমাদের তৈরি করা সবচেয়ে উন্নত, চাহিদাপূর্ণ ও টেকসই মেশিন। কর্মক্ষমতা ও পরিবেশগত বিষয়ে নতুন মান তৈরি করবে। বিদ্যমান গাড়িটিই ইতিমধ্যে প্রায় ১.৮ সেকেন্ডে ১০০ কিমি/ঘণ্টা গতিতে পৌঁছাতে পারে। যেকোনো ফর্মুলা ওয়ান গাড়ির চেয়ে প্রায় ৩০ ভাগ দ্রুত ছুটতে পারে এই গাড়ি।

নতুন গাড়িটি চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য একটি গেম-চেঞ্জার হবে বলে মনে করছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। ১২ বছর আগে যখন এই সিরিজ শুরু হয়, তখন সর্বোচ্চ গতি ছিল প্রায় ১৪০ মাইল প্রতি ঘণ্টায়। ব্যাটারির স্বল্পতার কারণে চালকদের রেসের মাঝখানে গাড়ি পরিবর্তন করতে হতো। ডডস বলেন, ‘আমি আপনাদের বলতে পারি নতুন গাড়ির গতি সোজা রাস্তায় ও টেস্ট ট্র্যাকে প্রতি ঘণ্টায় ২০০ মাইল দেখা যায়। এর সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টার ২০০ মাইলের  চেয়ে বেশি হবে। তিনি আরও বলেন, আগামী বছরে এই গাড়ি ফর্মুলা ওয়ান গাড়ির সমতুল্য গতিতে ল্যাপ করার বা তার চেয়েও দ্রুতগতিতে চলার সম্ভাবনা থাকবে।

এফআইএর সিনিয়র সার্কিট স্পোর্ট ডিরেক্টর মারেক নাওয়ারেকি জানান, উচ্চগতির জন্য নিরাপত্তা মূল্যায়ন করা হয়েছে। বড় কোনো সমস্যা নেই। এসব গাড়ির জন্য কিছু ট্র্যাকে ডিজাইন পরিবর্তন করতে হতে পারে।

সূত্র:  রয়টার্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ