ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলা চলছেই। গাজা  উপত্যকাটিতে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে, সৃষ্টি করা হয়েছে খাবারের সংকট। নষ্ট হয়ে গেছে ফসলি জমি।জাতিসংঘের হিসাবে, গাজায় আর মাত্র দেড় শতাংশ ফসলি জমি চাষাবাদের যোগ্য রয়েছে।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী,  ২০২৫ সালে ২৮ জুলাই পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজার প্রায় ৩২ হাজার একর (১৩ হাজার হেক্টর) কৃষিজমি ধ্বংস হয়েছে। যা  উপত্যকাটির মোট কৃষিজমির ৮৬ শতাংশ। প্রবেশযোগ্য জমি আছে ৯ শতাংশ, তবে চাষাবাদ করার অবস্থায় নেই। আর মাত্র ২৩২ হেক্টর বা দেড় শতাংশ জমি চাষাবাদের যোগ্য অবস্থায় রয়েছে।

অথচ ২০২৩ সালেও গাজার পরিস্থিতি ছিলো অন্যরকম। ওই বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর আগে উপত্যকাটির বাসিন্দারা বিভিন্ন ধরনের ফল, সবজি, বাদাম ও খাদ্যশস্য উৎপাদন করতেন।

আরো পড়ুন:

গাজা পুরোপুরি দখল করা হবে কি না, সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের: ট্রাম্প

ইসরায়েলকে অস্ত্র দেবে না কানাডা

এফএওর হিসাবে, গাজা উপত্যকার অর্থনীতির প্রায় ১০ শতাংশ জুড়ে ছিল কৃষিকাজ। উপত্যকার ২০ লাখের মধ্যে ৫ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ আংশিকভাবে কৃষিকাজ ও মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভর করতেন।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী ২০২৫ সালের ২৮ জুলাই পর্যন্ত গাজার প্রায় ৩২ হাজার একর কৃষিজমি ধ্বংস করেছে। এখন মাত্র ২৩২ একর কৃষিজমি টিকে আছে। এফএওর প্রধান কু ডংইউ বলেন, গাজা এখন পুরোপুরি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। ইসরায়েলের অবরোধ ও স্থানীয় কৃষিখাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে ফিলিস্তিনিরা অনাহারে রয়েছেন।

তথ্যসূত্র; দ্য গার্ডিয়ান

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি, এখন কী করবে ভারত-ইসরায়েল

বহু দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্য একের পর এক যুদ্ধের বৃত্তে ঢুকে পড়েছে। একের পর এক দেশ আক্রমণের শিকার হয়েছে, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। সব দিক বিবেচনায় মধ্যপ্রাচ্য হয়ে উঠেছে বিশ্বশক্তিগুলোর যুদ্ধক্ষেত্র। মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি নিয়ে তাদের উদ্বেগ কম, আগ্রহের জায়গা প্রাকৃতিক সম্পদ।

কাতারের দোহায় ইসরায়েলের হামলার পর উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর মধ্যে ‘মার্কিন নির্ভরযোগ্যতা’ নিয়ে ক্রমে সন্দেহ বাড়ছে। দ্য টাইমস অব ইসরায়েলে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দোহায় হামলার আগে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। যদিও ট্রাম্প পরে তা অস্বীকার করেছেন।

আসল ব্যাপার হলো ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের শর্তহীন সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা উপভোগ করে। স্বাভাবিকভাবেই এ সন্ধিক্ষণে সবার নজর ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ প্রকল্পের দিকে। কারণ, ইসরায়েলের এই প্রকল্প খোলাখুলিভাবে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর ওপর হুমকি তৈরি করেছে।

আরও পড়ুনযুবরাজ সালমান এক দশকে যেভাবে সৌদি আরবকে পাল্টে দিলেন১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ফলে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক, রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম বিশ্লেষকেরা ইসরায়েলের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে এবং সেটি যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে আরব-মুসলিম দেশগুলোর সম্পর্ক কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন।

এই প্রেক্ষাপটে সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের মধ্যে কৌশলগত প্রতিরক্ষা অংশীদারত্ব চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিতে পারে। এ অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, ইউরোপ এবং পাকিস্তানের চিরশত্রু ও বিকাশমান অর্থনৈতিক শক্তি ভারতকে হতবাক করেছে।

সম্প্রতি ভারত যখন ‘ইসরায়েলি ধাঁচের সম্প্রসারণবাদের’ ঘোষণা দিয়ে আক্রমণ করে, তখন পাকিস্তান কার্যকরভাবে নিজের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে। কয়েক বছর আগে প্রয়াত ব্রিটিশ সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক মন্তব্য করেছিলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান সংঘাতে ইসরায়েল বড় ভূমিকা রাখছে।

এ বছরের শুরুতে তুরস্ক-পাকিস্তান-আজারবাইজানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তিটি মুসলিম দেশগুলোতে যে শঙ্কা বাড়ছে তারই প্রতিফলন।

পাকিস্তান-সৌদি আরব চুক্তি দিল্লি ও জেরুজালেমে সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা হলেও ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ ও ‘অখণ্ড ভারত’ প্রকল্পের কারণে বিশ্বশান্তি হুমকির মুখে পড়ার বিষয়ে কোনো উদ্বেগ দেখা যায় না।

ইসরায়েল ও ভারতের জোট এবং তাদের ‘সম্প্রসারণবাদী’ নীতির কারণে উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তিকে আগ্রাসী পরিকল্পনা হিসেবে নয়; বরং প্ররোচনাহীন হামলার বিরুদ্ধে একটি আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরেই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন। গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে, ছয়টি মুসলিম দেশ বোমা হামলা চালিয়ে এবং মুসলমানদের হত্যা, হত্যাচেষ্টা, বাস্তুচ্যুতি ও স্থায়ীভাবে পঙ্গু করার পর নেতানিয়াহু এখন অভিযোগ তুলছেন—বিশ্বে ইসরায়েল যে ক্রমে নিঃসঙ্গ হয়ে উঠছে, এর জন্য দায়ী চীন, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো। তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘আমাদের অস্ত্রশিল্পকে আরও বিকশিত করতে হবে। আমরা একসঙ্গে এথেন্স ও সুপার স্পার্টা হব।’

আরও পড়ুনইসরায়েল-ভারত যেভাবে পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে চেয়েছিল২৬ জুন ২০২৫

‘ফিফটি স্টেটস-ওয়ান ইসরায়েল’ শীর্ষক এক বিশাল সমাবেশে নেতানিয়াহু বলেন, ‘জীবনের মূল্য আইনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’। তাঁর এ বক্তব্যে ইঙ্গিত মেলে, সামনে আরও বড় যুদ্ধ অপেক্ষা করছে।

আসলে বৃহত্তর ইসরায়েল প্রকল্পের লক্ষ্য হলো পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশের অংশবিশেষ দখল করে নেওয়া। এর মধ্যে রয়েছে মিসর, জর্ডান, সিরিয়া, লেবানন ও সৌদি আরব। এটি স্বীকার করতেই হবে, এটি নিছক কল্পকাহিনি নয়; বরং ঠেকানো সম্ভব এমন এক বাস্তবতা।

সাম্প্রতিক একটি নিবন্ধে আমি লিখেছিলাম, ইসরায়েল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একের পর এক মুসলিম দেশ ধ্বংস করছে। পশ্চিমা বিশ্ব ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এবং লেবানন, সিরিয়া, জর্ডান, মিসর, এমনকি আরও দূরে মধ্যপ্রাচ্যে ভূমি দখলের অভিযানকে সমর্থন করছে। ‘ইহুদি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে’ কিংবা ‘বিশ্বকে নিরাপদ করা’—এই যুক্তিকে সামনে আনা হচ্ছে। ইসরায়েলের এ মারাত্মক অভিযান কোথায় গিয়ে শেষ হবে? এরপর কোন দেশ—পাকিস্তান, তুরস্ক, মিসর নাকি সৌদি আরব?

সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের পর দুই দেশের নেতারা। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রিয়াদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • “আই.ই.টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় দাবা প্রতিযোগিতা ২০২৫” অনুষ্ঠিত
  • অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স ও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ কার্যক্রম উদ্বোধন
  • বিনা মূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, দিনে ২০০ টাকা ভাতা, সুযোগ পেতে করুন আবেদন
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে নতুন কোয়াসি চাঁদের সন্ধান
  • কলেজে শিক্ষা কোটায় ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত
  • সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশ ২০২৫–২৬–এ সম্মাননা পেল দেশের ৪৯টি শীর্ষ ব্র্যান্ড
  • দুই পদে নিয়োগ ফেনী ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে, সর্বনিম্ন বেতন ২ লাখ
  • ম্যারিকো বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
  • পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তি, এখন কী করবে ভারত-ইসরায়েল