নতুন সেতু নির্মাণে কত সময় লাগবে, কত খরচ হবে
Published: 10th, August 2025 GMT
নগরের শীতল ঝরনা খালের ওপর ভেঙে দুই ভাগ হয়ে পড়া সেতুর জায়গায় নতুন সেতু নির্মাণে চলতি সপ্তাহেই দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির। এতে ব্যয় হবে ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টায় ভারী বর্ষণের সময় নগরের বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের স্টারশিপ গলির মুখে ভেঙে যায় একটি সেতুর এক পাশ। শীতল ঝরনা খালের ওপর অবস্থিত এই সেতুর আরেক পাশ দিয়ে যান চলাচল করছে। তবে সেতুর এই পাশটিও ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা।
এই সেতু দিয়ে নগরের ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন যাতায়াত করেন লোকজন। নগরের ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেনমুখী সড়কের ওপর থাকা সেতুর অংশ ভেঙে যায়। বর্তমানে অক্সিজেন থেকে ২ নম্বর গেটমুখী অংশ চালু আছে।
রোববার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, ভেঙে যাওয়া সেতুর এক পাশে টিনের ঘেরাও দেওয়া হয়েছে। সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এবং ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সতর্কতামূলক ব্যানার টানানো হয়েছে। এ ছাড়া খননযন্ত্র দিয়ে সেতুর উপকরণগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা জানান, নগরের বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির এক পাশ ভেঙে গেছে। আরেক পাশও ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের আগেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এখন এই প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগের জন্য আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় শীতল ঝরনা খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে সেতুর নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ব্যয়ও ঠিক করা হয়েছে। যার পরিমাণ ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা। নতুন সেতুর প্রশস্ততা হবে ২৩ মিটার। এর দৈর্ঘ্য ১৫ মিটার। আগে দৈর্ঘ্য ছিল ছয় মিটার।
সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গুরুত্ব বিবেচনায় শীতল ঝরনা খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণে বিশেষভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। এ জন্য দ্রুত দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর নির্মাণকাজ শুরু হবে। নতুন সেতু নির্মাণ করতে অন্তত এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে। তবে চেষ্টা করবেন আরও আগে কাজ শেষ করার জন্য।
প্রকল্প পরিচালক জানান, সেতুটির দুই পাশের নির্মাণকাজ একসঙ্গে করা যাবে না। প্রথমে ভেঙে যাওয়া অংশে কাজ করা হবে। এরপর পাশের অংশে কাজ করবেন তাঁরা। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল এক প্রকৌশলী প্রথম আলোকে বলেন, সেতুর দরপত্রপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অন্তত দেড় মাস সময় লাগবে। এরপর ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। তাই নির্মাণকাজ শুরু করতে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগবে।
চট্টগ্রাম নগর থেকে উত্তর চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটিতে যাতায়াত করতে বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক ব্যবহার করেন লোকজন। আবার এই সড়কের দুই পাশে রয়েছে পোশাক কারখানা, ইস্পাত কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান। আছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ এবং ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতো খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ফলে এই সড়কের গুরুত্ব অনেক বেশি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: খ ল র ওপর নত ন স ত নগর র সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
লাইনচ্যুত বগি রেখে চলে গেল ট্রেন, ১১ ঘণ্টা পর উদ্ধার
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ঢাকামুখী লেনে একটি লাইনচ্যুত বগিসহ মোট তিনটি বগি রেখে চলে গেছে একটি মালবাহী ট্রেন। এই দুর্ঘটনার ১১ ঘণ্টা পর বগি তিনটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে সীতাকুণ্ড রেলস্টেশন থেকে এক কিলোমিটার উত্তরে শেখপাড়া এলাকায়। এতে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন না ঘটলেও গন্তব্যে পৌঁছাতে কিছুটা দেরি হতে পারে বলে জানায় রেলওয়ে সূত্র।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। লাইনচ্যুত হওয়ার পর ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত বগিটিকে অন্তত ১০০ মিটার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। ফলে বগিটি ছাড়াও রেলের স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রেলসূত্র জানিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়ে আজ শনিবার সকালে উদ্ধারকাজ শুরু করে উদ্ধারকারীরা। এরপর ঘটনার ১১ ঘণ্টা পর বেলা দুইটার দিকে লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধার করা হয়। দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনে চলাচলকারী ট্রেনগুলো ডাউন লাইন (চট্টগ্রামমুখী লেন) দিয়ে চলাচল করেছে। এতে গন্তব্যে কিছুটা দেরিতে পৌঁছেছে ট্রেনগুলো। দুর্ঘটনাকবলিত তিনটি বগিতে গার্মেন্টস পণ্য ও জুতা রয়েছে।
রেল পুলিশের সীতাকুণ্ড ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ ছিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঢাকামুখী একটি মালবাহী ট্রেন সীতাকুণ্ড রেলস্টেশন থেকে এক কিলোমিটার দূরে শেখপাড়া এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ফলে দুর্ঘটনাকবলিত বগিটির একপাশের চাকা রেললাইনের বাইরে অপর পাশের চাকা দুই রেললাইনের মাঝে ছিল। এতে সামনের দিকের আরও দুটি বগি আটকা পড়ে। দুর্ঘটনাকবলিত তিনটি বগি রেখে ট্রেনটি পরে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। খবর পেয়ে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে। আজ বেলা দুইটার দিকে লাইনচ্যুত বগিটি রেললাইনের ওপরে তুলতে সক্ষম হয়।
রেলওয়ে পূর্বঞ্চলের উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেনটির একটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার পর অন্তত ১০০ মিটার টেনে নিয়ে যায় ইঞ্জিন। ফলে রেলের চাকার সঙ্গে সিমেন্টের স্লিপার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বগিটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা এসে বগিটি উদ্ধার করে লাইনের ওপর তোলেন। যে সব স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোকে তুলে তাৎক্ষণিক কাঠের স্লিপার দিয়ে রেললাইন সচল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
দুর্ঘটনায় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা যাচাই করা হচ্ছে বলে জানান রেলওয়ের প্রকৌশলী আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বগিটিকে ওয়ার্কশপে নেওয়া হবে। ঢাকামুখী রেললাইন ঠিক করার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হবে। এরপর ওই পথ দিয়ে ট্রেন চালানো হবে। ততক্ষণ সময় পর্যন্ত চট্টগ্রামমুখী লাইন দিয়ে উভয় দিকে রেল চলাচল করবে। এতে যাত্রাপথে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর কিছুটা সময় বিলম্ব হচ্ছে। তবে ট্রেন চলাচল বন্ধ নেই।