ময়মনসিংহে ছাত্রদল নেতার ‘টর্চার সেল’, গান বাজিয়ে চলত নির্যাতন
Published: 12th, August 2025 GMT
নিজের ‘টর্চার সেলে’ তিনজনকে আটকে রেখে মারধর করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় আলোচনায় এসেছেন ময়মনসিংহের তারাকান্দার এক ছাত্রদল নেতা। তাঁর নাম হিজবুল আলম ওরফে জিয়েস। তিনি তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক।
আলোচনায় ‘টর্চার সেল’তারাকান্দা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম মাঝিয়ালি। এখানে একটি মৎস্য খামার আছে হিজবুলের। সেই খামারের ছোট একটি ঘরকে তিনি ‘টর্চার সেল’ বানিয়ে গান বাজিয়ে মানুষকে নির্যাতন করেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি সেখানে স্থানীয় তিন বাসিন্দাকে আটকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পরে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
হিজবুলের মারধরের শিকার হয়েছেন ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ও মাঝিয়ালি গ্রামের বাসিন্দা মামুন সরকার। স্থানীয় বাজারে চাঁদার জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তিনি হিজবুলের হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে গতকাল সোমবার থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, হিজবুল এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, মাদক সেবনকারী ও চাঁদাবাজ। তিনি স্থানীয় মাঝিয়ালি বাজারে বিভিন্ন দোকানদারের কাছ থেকে মালামাল নেওয়ার পর টাকা দেন না। ৮ আগস্ট হিজবুল স্থানীয় বাজারে হক মিয়ার সেলুনে চুল কাটিয়ে বিল পরিশোধ করেননি। টাকা চাইলে উল্টো পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন হিজবুল। একপর্যায়ে হক মিয়া ও তাঁর বড় ভাই লাক মিয়াকে মারধর করে দোকানে তালা লাগিয়ে দেন। বিষয়টি মামুনকে জানালে তিনি দোকান খুলে ব্যবসা করতে বলেন। পরের দিন ৯ আগস্ট দোকানটি খোলা পেয়ে হিজবুল ‘টাকা না দিয়া কার কথায় দোকান খুলছস’ বলে হক মিয়াকে মারধর করেন। তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে মামুন সরকারও মারধরের শিকার হন।
পরে মামুন সরকারের করা মামলায় গতকাল ভোরে হিজবুলের তারাকান্দার দিঘারকান্দা গ্রামের মো.
মামলার বাদী মামুন সরকার বলেন, ‘ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে কেউ এ ধরনের চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা করবেন; তা হতে পারে না। আমি সাংগঠনিক ও আইনগতভাবে কঠোর বিচার চাই। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, এলাকার যদি কেউ বলেন এই ছেলে অপরাধী নন, মাদক ব্যবসায়ী নন, তাহলে আমার কোনো অভিযোগ থাকবে না, আমি মামলা তুলে নেব। তিনি এলাকায় একটি টর্চার সেল করেছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক এনে এখানে নির্মম নির্যাতন করেন। গ্রামপর্যায়ে টর্চার সেল নিয়ে এসেছেন, এটি মানা যায় না।’
প্রসঙ্গত, হিজবুল আলম ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাঁর কোনো তৎপরতা দেখা না গেলেও গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এলাকা ‘শাসন’ করতে শুরু করেন নিজস্ব স্টাইলে।
বানিহালা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল হোসেন বলেন, ‘হিজবুলের টর্চার সেল আছে। সেখানে মানুষকে আটকে মারধর করার ভিডিও দেখেছি। ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বললেও আমরা তাঁকে কোনো কর্মকাণ্ডে পাইনি। আমরা এ অপকর্ম সমর্থন করি না।’
যেভাবে হয় নির্যাতনসামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, নিজের আস্তানায় নিয়ে মুঠোফোনে হিন্দি-বাংলা গান ছেড়ে একজনকে মারছেন হিজবুল। খোঁজ নিয়ে সেই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে প্রথম আলো। যাঁকে মারা হচ্ছিল, তাঁর নাম মো. জুয়েল মিয়া (২৭)। তিনি পেশায় দিনমজুর।
ভিডিওতে দেখা যায়, হিজবুল নিজের হাতে দেশি একধরনের বিশেষ অস্ত্র দেখিয়ে সঙ্গে থাকা অন্যজনকে মারতে বলেন। পরে সঙ্গে থাকা সেই যুবককে মারতে থাকেন জুয়েল। একপর্যায়ে হিজবুলও মারধর করতে থাকেন। মারধরের শিকার অপর যুবকের পরিচয়ও শনাক্ত করে প্রথম আলো। তাঁর নাম রাসেল মিয়া (২৮)। তিনিও পেশায় দিনমজুর।
ময়মনসিংহের তারাকান্দার মাঝিয়ালি গ্রামের খামারের ছোট ঘরকে হিজবুল ‘টর্চার সেল’ বানিয়েছিলেনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ম ন সরক র ছ ত রদল র ম রধর র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের টাকায় সচিবের বাড়ির কবরস্থান উন্নয়ন, বরাদ্দ ২৪ লাখ টাকা
ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম নিজ আশাবট। এই গ্রামের একটি কবরস্থানের সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ, উন্নয়ন এবং সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করার নামে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে আটটি ছোট প্রকল্প নিয়েছে জেলা পরিষদ। বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মোট ২৪ লাখ টাকা।
কাগজে-কলমে কবরস্থানটিকে ‘সামাজিক কবরস্থান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেটি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর পারিবারিক কবরস্থান।
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন সরদারের ইচ্ছায় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা পরিষদ সূত্র বলছে, স্থানীয় সরকার সচিবকে সন্তুষ্ট রাখতে কবির হোসেন কাজটি করেছেন।
এক কবরস্থানের জন্য আট প্রকল্প গ্রহণ, কম্বল বিতরণে অনিয়ম, জেলা পরিষদের প্রশাসকের স্বাক্ষর জালিয়াতিসহ মো. কবির হোসেনের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলেছেন জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ২৬ অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর গত ২৭ অক্টোবর কবির হোসেনকে ময়মনসিংহ থেকে পটুয়াখালী জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। অবশ্য ২ নভেম্বর নতুন আদেশে কবির হোসেনকে নেত্রকোনা জেলা পরিষদে বদলি করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কখনো কবরস্থানে প্রকল্প দিতে বলিনি। ওখানে জনগণের জন্য পানির ব্যবস্থা ও একটি পাঞ্জেখানা মসজিদের (যে মসজিদে জুমা ছাড়া অন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হয়) জন্য বলেছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘ছোট কাজ করতে বললাম, আর জেলা পরিষদ ভুলভাবে এটা করে বিশ্রী অবস্থা করেছে। আমি এখন এটি বাদ দিতে বলেছি।’
সচিব আরও বলেন, বিষয়টি শোনার পরই কবির হোসেনকে বদলি করে দিয়েছেন। শুরুতে পটুয়াখালী বদলি করলেও পরে নেত্রকোনায় করতে হয়। নেত্রকোনাতেও সাংবাদিকেরা আপত্তি করছেন। তাঁকে নতুন জায়গায় বদলি করা হবে।
নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, ২০১৩ সালে সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছিলেন কবির হোসেন সরদার। ইউএনও থাকাকালে তাঁর বিরুদ্ধে দুই ভাইয়ের নামে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় অবস্থিত একটি পোশাক কারখানার শেয়ার কিনে সেটি দখলের অভিযোগ ওঠে। উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে ১১ মাস বসবাস করেও ভাড়া পরিশোধ না করার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। দুই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০১৫ সালে কবির হোসেনকে বিভাগীয় শাস্তি হিসেবে বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল (দুই ধাপ অবনমিত)।
ছোট কাজ করতে বললাম, আর জেলা পরিষদ ভুলভাবে এটা করে বিশ্রী অবস্থা করেছে। আমি এখন এটি বাদ দিতে বলেছি।স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী৩৭ প্রকল্পের ৯টিই এক গ্রামেজেলা পরিষদ সংবিধিবদ্ধ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান। এটি স্থানীয় সরকার বিভাগের জারি করা পরিপত্র দিয়ে পরিচালিত হয়। জেলা পরিষদের নিজস্ব বাজেট রয়েছে। তা দিয়ে বিভিন্ন ছোট ছোট প্রকল্প ও অনুদানমূলক কাজ করে থাকে জেলা পরিষদ। অবশ্য এসব কাজ করার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি ও প্রভাবশালীদের ইচ্ছাপূরণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, গত ১৮ মে জেলা পরিষদের তৎকালীন প্রশাসক ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার জিয়া আহমেদ সুমনের সভাপতিত্বে একটি সভা হয়। সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে পাওয়া ৯০ লাখ টাকার বিপরীতে ৩৭টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১০টি প্রকল্প নেওয়া হয় ফুলপুর উপজেলায়, যার ৯টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে রামভদ্রপুর ইউনিয়নের নিজ আশাবট গ্রামে। প্রতিটি প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩ লাখ টাকা।
এসব প্রকল্পে সুপেয় পানির অবকাঠামোর টাইলস ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, সুপেয় পানির অবকাঠামো নির্মাণ, সীমানাপ্রাচীর, নালা নির্মাণ ইত্যাদির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।প্রকল্পের তালিকায় দেখা গেছে, এক নম্বরে রয়েছে নিজ আশাবট গ্রামের হাজি শমসের আলী সাহেবের কবরস্থান উন্নয়ন। শমসের আলী স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর দাদা। ৪ নম্বর প্রকল্প নিজ আশাবট গ্রামের সামাজিক কবরস্থানে সীমানাপ্রাচীর টাইলসকরণ। তালিকার ৮, ২১, ২৪, ২৫, ২৭ ও ৩২ নম্বর প্রকল্পও একই কবরস্থান ঘিরে। এসব প্রকল্পে সুপেয় পানির অবকাঠামোর টাইলস ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, সুপেয় পানির অবকাঠামো নির্মাণ, সীমানাপ্রাচীর, নালা নির্মাণ ইত্যাদির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
নিজ আশাবট গ্রামে গত ২৬ অক্টোবর দুপুরে গিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের বাড়ির সামনে পারিবারিক কবরস্থানে অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলতে দেখা যায়। তখন পর্যন্ত কবরস্থানের সীমানাপ্রাচীর, মোটর স্থাপন, পানির ট্যাংক বসানো ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার কাজ এগিয়েছিল। সেখানে ‘পারিবারিক কবরস্থান’ লেখা একটি পুরোনো সাইনবোর্ডও দেখা যায়।
জেলা পরিষদের প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে কবরস্থানটিকে ‘সামাজিক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা গ্রামের সবার জন্য উন্মুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় সরকার সচিবের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে উজ্জ্বল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এটি পারিবারিক কবরস্থান। কিছুদিন আগে কবরস্থানের সীমানা চিহ্নিত করে দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। কাজটি সরকারিভাবেই হচ্ছে।
কবরস্থানের সীমানাপ্রাচীর, মোটর স্থাপন, পানির ট্যাংক বসানো ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার কাজ এগিয়েছিল। সেখানে ‘পারিবারিক কবরস্থান’ লেখা একটি পুরোনো সাইনবোর্ডও দেখা যায়। কম্বল বিতরণে নয়ছয়জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কবির হোসেনের বিরুদ্ধে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কম্বল কেনায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জেলা পরিষদ থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, গত ২৮ জানুয়ারি কম্বল কেনার একটি কার্যাদেশ দেন কবির হোসেন। জেলার ১৩টি উপজেলার দুস্থ, অসহায় ও গরিব মানুষের জন্য প্রায় ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ১২ হাজার কম্বল সরবরাহের জন্য নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মেসার্স হাওলাদার এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী সাত দিনের মধ্যে উপসহকারী প্রকৌশলীর কাছে কম্বল সরবরাহের কথা।
জেলা পরিষদের উপসহকারী প্রকৌশলী ও কম্বল ক্রয় কমিটির সদস্য আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কোনো কম্বল বুঝে পাইনি।’ কিন্তু কীভাবে কম্বলের বিল গেল—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটি আমি জানি না।’
জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কম্বল বুঝে পাওয়ার কোনো নথি আমাদের কাছে নেই। তবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কম্বল বিতরণ হয়েছে মর্মে কিছু কাগজ আমাদের দিয়েছেন।’
প্রশাসকের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগজেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তাহমিনা আক্তার। তাঁর স্বাক্ষর জাল করে প্রায় ১ কোটি ১৩ লাখ টাকার প্রকল্প গ্রহণের কার্যবিবরণী তৈরির অভিযোগ উঠেছে কবির হোসেনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নজরে আসার পর কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা পরিষদের প্রশাসক তাহমিনা আক্তার।
নোটিশের যথাযথ জবাবও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন কবির হোসেন। স্থানীয় সরকার সচিবের বাড়ির সামনে একই স্থানে আটটি প্রকল্প দেওয়া, কম্বল কেনায় নয়ছয় করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রকল্প সব তো আমি একা করি না, মাসিক সভায় অনুমোদন করে মন্ত্রণালয় হয়ে আসে। কোনো সমস্যা থাকলে আমরা অনেক সময় প্রকল্প পরিবর্তন করি।’
এদিকে স্থানীয় সরকার সচিবের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন অবৈধ কাজ করানোর জন্য জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলীসহ অন্য কর্মচারীদের অনবরত চাপ প্রয়োগ করেন কবির হোসেন। তাঁর ‘অত্যাচার’ থেকে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সম্পদ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রক্ষা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয় অভিযোগপত্রে।
জেলা পরিষদের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব বাজেটে ঐচ্ছিক কার্যাবলির আওতায় অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে অর্থ লুটপাটের অভিযোগ ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের প্রশাসক তাহমিনা আক্তার।