সাদা পাথর রক্ষায় ঢাবি শিক্ষার্থীদের ৩ দাবি
Published: 12th, August 2025 GMT
সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও দেশের পর্যটন খাত ধ্বংসের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে তারা এ মানববন্ধন করেন। এ সময় তারা অবিলম্বে পাথর উত্তোলন বন্ধ ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, পাথর খেকো ঠাঁই নাই’, ‘বাঁশের লাঠি তৈরি করো, পাথর খেকো সাইজ কর’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘লাল জুলাইয়ের বাংলায়, পাথর খেকো খায় নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
৩ দফা দাবিতে শাবিপ্রবি প্রকৌশলী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ডাকসুতে প্রথম দিনে মনোনয়নপত্র নিলেন ছাত্রীসহ ৭ জন
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, সিলেটের সাদা পাথর এলাকায় এখন শুধু ‘সাদা’ আছে, পাথর নেই। এখানকার সব পাথরখেকোরা পাথর খেয়ে জায়গাটি মরুভূমিতে পরিণত করেছে। পরিবেশ উপদেষ্টা বলছেন, তিনি এটা আটকাতে পারছেন না। প্রশ্ন হলো—তাদের কী এত ক্ষমতা যে প্রশাসনের সামনেই সব পাথর খেয়ে ফেলছে? আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আপনারা দ্রুত তাদের আটকান, উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন এবং পর্যটন কেন্দ্রকে রক্ষা করুন।
ভাষাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী আশা তালুকদার বলেন, “সিলেটের ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর এলাকার সব পাথর উত্তোলন করে এলাকা সম্পূর্ণ ফাঁকা করে ফেলা হয়েছে। আমরা যদি এগুলো রক্ষা করতে না পারি, তবে বাংলাদেশের অস্তিত্বই কোথায় থাকবে? প্রশাসনের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছি—এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেন।”
রুবেল আহমেদ রাহী বলেন, “কিছুদিন আগেও পরিবেশ উপদেষ্টা রেজওয়ান হাসান সিলেট থেকে ঘুরে এসে বলেছিলেন, আর পাথর উত্তোলন হবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রশাসনের নাকের ডগা থেকে দিনের আলোতেই পাথর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব দেখেও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। পরিবেশ উপদেষ্টাকে বলতে চাই—আপনি উপদেষ্টার চেয়ারে বসে কী আঙুল চুষছেন? সাদা পাথরের সব পাথর শেষ, বালি শেষ—এখন নৌকা নষ্ট করে কী করবেন? পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ দেখতে চাই। অবিলম্বে এসব চোর-অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনুন।”
এ সময় শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; পরিবেশ রক্ষায় কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে; পাথরখেকোদের সঙ্গে প্রশাসনকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রির ঘটনায় ঝাড়ু-জুতা মিছিল
সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে গোপনে বিক্রির ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবীতে ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান–সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট স্কুলের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া, সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম এবং একাধিক অভিযোগের মুখে থাকা প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ইউনিয়নকে যেন ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে মাসুম ও মনিরুজ্জামান নিজেদের ইচ্ছেমতো সব কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
তাদের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের মালামাল রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়। পরে এলাকাবাসী মালামাল ভর্তি গাড়ি আটক করে। কিন্তু এখন উল্টো ভালো মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ মোল্লা বলেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল চুরি করে বিক্রি করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
স্কুলের মতো পবিত্র জায়গায় দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এলাকাবাসী রাতেই মালামাল আটকে দিয়ে প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই প্রশাসন যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে।”
এলাকাবাসীরা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও পরিচালনা কমিটিতে সৎ-নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি।
মানববন্ধন শেষে এলাকাবাসী ঝাড়ু ও জুতা প্রদর্শন করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া মাসুম জানান, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যপ্রণীত ভাবে আমাদের বিতর্কিত করতে বিক্রি করা মালামাল চুরির ঘটনা সাজিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গতকাল মিটিং করেছি৷
অভিযুক্ত বর্তমান কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূইয়া জানান, আমরা স্কুলের একটি কমিটি করে বিক্রি করেছি। তবেমাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে কোনো অনুমতি নেই নি। বিক্রি করার পর গাড়িতে উঠাতে রাত হয়ে যায়। এখানে কোনো চুরির ঘটনা ঘটে নি।
উল্লেখ্য, গত (৯ সেপ্টেম্বর) শনিবার স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককের নির্দেশে রাতের আধাঁরে নিয়মবহির্ভূতভাবে পঞ্চমীঘাট স্কুলের মালামাল বিক্রি করা হয়। যা স্থানীয় এক ভাঙ্গারীর পিক-আপ ভ্যানে নেয়ার সময় স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।