ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মঞ্চে উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ককে বসানো হলেও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের জন্য জায়গা রাখা হয়নি। এতে বিএনপির ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মঞ্চে উঠে এনসিপি নেতাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পশ্চিম পাতরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে। কর্মসূচির আয়োজন করেছিল ‘সৎসংঘ সামাজিক উন্নয়ন সোসাইটি’।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চারা বিতরণ অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসানো হয় এনসিপির নেতা মো.

আশরাফ হোসেনকে। মঞ্চে আরও ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। কিন্তু স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বসানো হয় মঞ্চের সামনে। নিজেদের উপেক্ষিত মনে করে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে মঞ্চে উঠে আশরাফকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং অনুষ্ঠান পণ্ড করার হুমকি দিয়ে চিৎকার–চেঁচামেচি শুরু করেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইউএনও ও আয়োজকেরা ব্যর্থ হন, চলতে থাকে বাগ্‌বিতণ্ডা।

এ সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আইয়ুব মোল্লা, উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান ওরফে সাঈদ মুন্সী, ভাঙ্গা পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মিজানুর রহমান ওরফে পান্না, চুমুরদি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফর শেখ ও আজিমনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সিরাজ মাতুব্বর। এর মধ্যে চড়াও হওয়ার ঘটনার নেতৃত্ব দেন আইয়ুব মোল্লা।

আইয়ুব মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউএনও সাহেব এনসিপির ওই নেতাকে নিয়ে নিজের গাড়িতে চড়িয়ে ঘুরিয়ে বেড়ান, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়ে যান। বিষয়টি এলাকার লোক স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছে না।’

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, আশরাফ হোসেনকে রক্ষা করতে গিয়ে ইউএনওকেও কয়েক দফায় বিএনপির কর্মীদের তোপের মুখে পড়তে হয়। খবর পেয়ে কাছাকাছি রাজনৈতিক সভায় থাকা কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে নেতা-কর্মীদের নিবৃত্ত করেন। পরে কর্মসূচি স্বাভাবিকভাবে শুরু হয়।

আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্তজা বলেন, ‘এটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠান। রাজনৈতিক নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এনসিপির নেতা কখন মঞ্চে উঠেছেন, তা আমার জানা নেই। বিতর্ক ওঠায় তিনি মঞ্চ থেকে নেমে যান।’

ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের মঞ্চে বসানো হয়নি, এনসিপির আহ্বায়ককে মঞ্চে বসানো হয়েছে। কিছুটা ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল, পরে বিষয়টির সমাধান হয়েছে।

এনসিপির নেতা আশরাফ হোসেন বলেন, বিএনপির কর্মীরা তাঁকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করলে ইউএনওর হস্তক্ষেপে তিনি রক্ষা পান। পরে শহীদুল ইসলাম এসে যাঁরা চড়াও হয়েছিলেন, তাঁদের দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করিয়েছেন। তিনি নিজেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

এ বিষয়ে ভাঙ্গার ইউএনও মিজানুর রহমান বলেন, এনসিপির আহ্বায়ক মঞ্চে বসায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হন। পরে শহীদুল ইসলাম ও খন্দকার ইকবালের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স অন ষ ঠ ন র রহম ন য় ব এনপ এনস প র কর ম র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ধামইরহাটের ইউএনওর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ  

নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে তার কার্যালয় ঘেরাও করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়েছে। 

বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন উপজেলার মঙ্গলকোটা গ্রামের বাসিন্দারা।

ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীর স্বামীর আব্দুল কুদ্দুস বলেছেন, আজ সকাল ১১টায় ইউএনও মঙ্গলকোটা গ্রামে একটি খাস জায়গা দখলমুক্ত করে সেটিকে ধামইরহাট পৌরসভার বর্জ্য রাখার স্থান নির্ধারণ করেন। স্থানীয়রা ওই জায়গাকে বর্জ্য রাখার স্থান করতে বাধা দিলে ইউএনওর সঙ্গে হট্টগোল হয়। আমি মোবাইল ফোনে ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে ইউএনওর নির্দেশে আমাকে আটক করার চেষ্টা করেন আনসার সদস্য। এ সময় আমার স্ত্রী এসে আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে ইউএনও নিজে আমার স্ত্রীর বুকে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেন এবং লাল নিশান টাঙানো বাঁশের লাঠি দিয়ে আমার স্ত্রীকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট শুরু করেন। প্রতিবেশী সাবিনা ইয়াসমিন বাধা দিতে গেলে ইউএনও তাকেও মারপিট করেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে আমার স্ত্রী ও সাবিনা ইয়াসমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাধীন আছেন।

এ বিষয়ে ধামইরহাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হানজালা বলেছেন, পৌরসভার বর্জ্য রাখার স্থান নির্ধারণ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ঝামেলা হয়। এর জের ধরে গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ঘেরাও করেন। পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। 

এ বিষয়ে ইউএনও শাহারিয়ার রহমান বলেছেন, নারীর গায়ে হাত দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। গ্রামবাসী সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে। এ থেকে বাঁচার জন্যই তারা নাটক করছে।

ঢাকা/সাজু/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ, নওগাঁয় ইউএনওর অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন
  • ধামইরহাটের ইউএনওর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ  
  • আড়াইহাজারে পূজার নিরাপত্তায় ৩১ মন্ডপে রাতভর নির্ঘুম পরিদর্শন ইউএনও’র