সাদাপাথর লুটে মদদদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন
Published: 14th, August 2025 GMT
সিলেটে সাদাপাথর লুটের পেছনে দায়ী ও মদদদাতা রাজনৈতিক দল, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সদস্যদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর শহরের আলফাত স্কয়ারে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ‘হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এতে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজন অংশ নেন।
বক্তারা জানান, নিরীহ শ্রমিকদের হয়রানি না করে প্রকৃত লুটেরাদের ধরতে হবে। এই সম্পদ রক্ষায় যাঁদের অবহেলা আছে, তাঁদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
দেশের অন্যতম দর্শনীয় একটি স্থান থেকে প্রকাশ্যে পাথর লুটের ঘটনায় মানুষ বিস্মিত জানিয়ে বক্তারা বলেন, লুটেরাদের সঙ্গে প্রশাসনের যোগসাজশ ছিল। রাজনৈতিকভাবে এখন যাঁদের বিরুদ্ধে লোকদেখানো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাঁরা প্রকৃতপক্ষে চুনোপুঁটি। রাঘববোয়ালদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সেখানে রাজনৈতিক সমঝোতা আছে, দায়িত্বশীলদের যোগসাজশ আছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর সেটি লোকজন দেখতে পেয়েছেন।
এ ছাড়া টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ টাঙ্গুয়ার হাওর এখন অভিভাবকহীন। সেখানেও প্রকাশ্যে মাছ আহরণ ও গাছ কাটা হয়। সেখানেও পরিবেশ, প্রকৃতি ও মানুষের জীবন–জীবিকা সংকটের মুখে। এই হাওর রক্ষায় মুখে মুখে বড় কথা না বলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল হকের সভাপতিত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ রাজু আহমেদ। এতে বক্তব্য দেন সামাজিক সংগঠন ‘জনউদ্যোগ’–এর আহ্বায়ক রমেন্দ্র কুমার দে, সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ কে এম আবু নাছার, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হাসান আতাহের, জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আইনজীবী দীপঙ্কর বনিক, মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ, নওগাঁয় ইউএনওর অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন
নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান ও ধামুইরহাট পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালামের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের শাস্তি ও ইউএনওর অপসারণের দাবিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, উপজেলার মঙ্গলকোঠা আবাসিক এলাকায় ধামুইরহাট পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার লোকজনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। ময়লা ফেলতে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান ও পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালাম ঘটনাস্থলে যান। এ সময় ওই দুই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে মঙ্গলকোঠা এলাকার এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুই নারীকে মারধর করেন।
গৃহবধূ সামিরন খাতুন বলেন, ‘পৌরসভার লোকজন গাড়িতে করে আমাদের এলাকায় ময়লা ফেলতে এলে এলাকার সবাই মিলে বাধা দিই। বসতবাড়ির আশপাশে ময়লা ফেললে সমস্যা হবে বলে ইউএনওকে ময়লা না ফেলতে এলাকাবাসী অনুরোধ করেন। কিন্তু ইউএনও আমাদের কথা না শুনে আমাকেসহ মিতুকে (অন্তঃসত্ত্বা নারী) নিজেই লাঠি দিয়ে মারধর করেন। আমরা ইউএনওর অপসারণসহ তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে স্থানীয় আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘ইউএনও আমার গর্ভবতী স্ত্রীর গায়ে তুলেছে সবার সামনে। একজন ইউএনওর আচরণ এমন হলে আমরা বিচার কার কাছে পাব?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান বলেন, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা একটি খাস জমিতে ময়লা ফেলতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি ওই এলাকায় গেলে এলাকার কিছু লোক তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সেখানে কয়েকজন অবৈধ দখলদার নারী-পুরুষ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আনসারদের গায়ে হাত তোলেন। নারীদের মারধরের অভিযোগের বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ‘সেখানে কারও গায়ে হাত তোলা হয়নি। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, আজ মানববন্ধন করে কিছু লোক ইউএনওর বিরুদ্ধে নারীকে মারধরের অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।