কুড়িগ্রাম-চিলমারী রেলপথে এক দিনে দুটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে ‘রমনা লোকাল’ নামের একটি ট্রেন উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর এলাকায় চিলমারীর বালাবাড়ী রেলস্টেশনের উত্তরে লাইনচ্যুত হয়। বিকেল সাড়ে চারটায় লালমনিরহাট থেকে ওই ট্রেন উদ্ধারে আসা উদ্ধারকারী ট্রেনটিও উলিপুরের পাঁচপীর রেলস্টেশন পার হওয়ার পর লাইনচ্যুত হয়। ট্রেন দুটির পরিচালক ঘটনা দুটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

রমনা লোকাল ট্রেনের পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, পার্বতীপুর থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রেনটি বালাবাড়ী স্টেশনের কাছাকাছি রসুলপুর এলাকায় পৌঁছালে গার্ড র‍্যাকের বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনটি দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে রমনা স্টেশন থেকে রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি জানান, উলিপুরের পাঁচপীর স্টেশন থেকে চিলমারী পর্যন্ত রেললাইনে কোথাও পাথর নেই। এ জন্য ট্রেন ঘণ্টায় মাত্র ১২ কিলোমিটার গতিতে চালানো হলেও লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

উদ্ধারকারী ট্রেনের পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সাতটি বগি নিয়ে লালমনিরহাট থেকে রওনা দেওয়া উদ্ধারকারী ট্রেনটি পাঁচপীর ও উলিপুর স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকায় লাইনচ্যুত হয়। পরে সন্ধ্যায় ট্রেনটি আবার লাইনে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে এটি উলিপুর স্টেশনে অবস্থান করছে।’

বিকেলে পাঁচপীর রেলস্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ রেলপথে কোথাও পাথর নেই। পুরো রেলপথ মাটির ওপর দিয়ে বিছানো। অনেক জায়গায় স্লিপার মাটির নিচে দেবে গেছে। কোথাও কোথাও রেললাইনের নিচের জমি থেকে মাটি এনে ফেলা হলেও গাইড ওয়ালের অভাবে মাটি বৃষ্টির পানিতে নিচে নেমে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেল-সংশ্লিষ্ট একজন ব্যক্তি বলেন, পাঁচগাছী স্টেশন থেকে রমনা স্টেশন পর্যন্ত রেলপথটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে গতি ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটারে সীমিত করা হলেও স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চালানো যাচ্ছে না। জরুরি সংস্কার না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই রেলপথ সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিশ্বাস কনস্ট্রাকশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পেলেও এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও রেলপথ, স্লিপার বা পাথর বসানোর কাজ শুরু হয়নি। শুধু কিছু মাটি ভরাট ও কয়েকটি সেতু মেরামত করা হয়েছে। এ জন্য রেলপথটি ঝুঁকিপূর্ণ থেকে গেছে।

বিশ্বাস কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপক রুবেল মিয়া বলেন, স্লিপার সংকটে রেলপথ সংস্কারের কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। তবে আগামী মাসে কিছু স্লিপার আসার কথা আছে। সেগুলো পেলে দুর্গাপুর থেকে উলিপুর পর্যন্ত রেলপথের কাজ শেষ হবে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবু হেনা মোস্তফা আলম সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, চিলমারীর রমনা বাজার স্টেশনের রেলপথ সংস্কারের কাজ চলছে। সেখানে রেললাইনে পাথর সরিয়ে স্লিপার বসানোর কাজ চলমান। এ জন্য দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। রেলপথ প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই এ রেলপথ আন্তনগর ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র নট এল ক য় উল প র র লপথ

এছাড়াও পড়ুন:

কুড়িগ্রামে লাইনচ্যুত ট্রেন উদ্ধারে গিয়ে উদ্ধারকারী ট্রেনও লাইনচ্যুত

কুড়িগ্রাম-চিলমারী রেলপথে এক দিনে দুটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে ‘রমনা লোকাল’ নামের একটি ট্রেন উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর এলাকায় চিলমারীর বালাবাড়ী রেলস্টেশনের উত্তরে লাইনচ্যুত হয়। বিকেল সাড়ে চারটায় লালমনিরহাট থেকে ওই ট্রেন উদ্ধারে আসা উদ্ধারকারী ট্রেনটিও উলিপুরের পাঁচপীর রেলস্টেশন পার হওয়ার পর লাইনচ্যুত হয়। ট্রেন দুটির পরিচালক ঘটনা দুটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

রমনা লোকাল ট্রেনের পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, পার্বতীপুর থেকে চিলমারীর রমনা স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে আসা ট্রেনটি বালাবাড়ী স্টেশনের কাছাকাছি রসুলপুর এলাকায় পৌঁছালে গার্ড র‍্যাকের বগির চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনটি দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে রমনা স্টেশন থেকে রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি জানান, উলিপুরের পাঁচপীর স্টেশন থেকে চিলমারী পর্যন্ত রেললাইনে কোথাও পাথর নেই। এ জন্য ট্রেন ঘণ্টায় মাত্র ১২ কিলোমিটার গতিতে চালানো হলেও লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

উদ্ধারকারী ট্রেনের পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সাতটি বগি নিয়ে লালমনিরহাট থেকে রওনা দেওয়া উদ্ধারকারী ট্রেনটি পাঁচপীর ও উলিপুর স্টেশনের মাঝামাঝি এলাকায় লাইনচ্যুত হয়। পরে সন্ধ্যায় ট্রেনটি আবার লাইনে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে এটি উলিপুর স্টেশনে অবস্থান করছে।’

বিকেলে পাঁচপীর রেলস্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ রেলপথে কোথাও পাথর নেই। পুরো রেলপথ মাটির ওপর দিয়ে বিছানো। অনেক জায়গায় স্লিপার মাটির নিচে দেবে গেছে। কোথাও কোথাও রেললাইনের নিচের জমি থেকে মাটি এনে ফেলা হলেও গাইড ওয়ালের অভাবে মাটি বৃষ্টির পানিতে নিচে নেমে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেল-সংশ্লিষ্ট একজন ব্যক্তি বলেন, পাঁচগাছী স্টেশন থেকে রমনা স্টেশন পর্যন্ত রেলপথটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে গতি ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটারে সীমিত করা হলেও স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চালানো যাচ্ছে না। জরুরি সংস্কার না হলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই রেলপথ সংস্কারের দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিশ্বাস কনস্ট্রাকশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পেলেও এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও রেলপথ, স্লিপার বা পাথর বসানোর কাজ শুরু হয়নি। শুধু কিছু মাটি ভরাট ও কয়েকটি সেতু মেরামত করা হয়েছে। এ জন্য রেলপথটি ঝুঁকিপূর্ণ থেকে গেছে।

বিশ্বাস কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপক রুবেল মিয়া বলেন, স্লিপার সংকটে রেলপথ সংস্কারের কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। তবে আগামী মাসে কিছু স্লিপার আসার কথা আছে। সেগুলো পেলে দুর্গাপুর থেকে উলিপুর পর্যন্ত রেলপথের কাজ শেষ হবে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবু হেনা মোস্তফা আলম সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, চিলমারীর রমনা বাজার স্টেশনের রেলপথ সংস্কারের কাজ চলছে। সেখানে রেললাইনে পাথর সরিয়ে স্লিপার বসানোর কাজ চলমান। এ জন্য দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। রেলপথ প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই এ রেলপথ আন্তনগর ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ