কুষ্টিয়ায় অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ছিনতাই
Published: 20th, September 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার খলিশাকুণ্ডি ইউনিয়নের পিপুলবাড়িয়া মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতেরা অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে অন্তত ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লিটন নামে এক রোগীকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে যাচ্ছিল। পথে ডাকাতেরা পিপুলবাড়িয়া মাঠ এলাকায় যাত্রীছাউনির সামনে রাস্তার ওপর গাছের গুঁড়ি ফেলে গতিরোধ করে। এরপর পাঁচ-ছয়জনের ডাকাতদল দেশীয় অস্ত্র হাতে অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও যাত্রীদের জিম্মি করে।
অ্যাম্বুলেন্সের চালক রতন আহমেদ বলেন, ‘রাতে রোগীকে অক্সিজেনসহ কুষ্টিয়ায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। গাড়িতে রোগী ও তাঁর স্বজনসহ মোট চারজন ছিলেন। পিপুলবাড়িয়া মাঠ এলাকায় ডাকাতেরা গাড়ি আটকে আমার গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ছিনিয়ে নেয়। যাওয়ার আগে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দিয়ে যায়।’
রোগীর স্বজন জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা অ্যাম্বুলেন্সের চালককে কাতলামারী দিয়ে কুষ্টিয়ায় যেতে মানা করেছিলাম। কিন্তু তিনি ওই পথেই গিয়েছিলেন। পথে ডাকাতেরা আমাদের কাছ থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। দিবাগত রাত ২টার দিকে আমরা রোগীকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি।’
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল হাসান বলেন, দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগজনিত সমস্যায় লিটন নামে এক রোগী ভর্তি হন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। পথে এমন ডাকাতির ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, ‘ডাকাতির বিষয়ে শুনেছি। এ নিয়ে কাজ করছি। তবে কেউ এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ দেননি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ লতপ র
এছাড়াও পড়ুন:
‘মোটরসাইকেল আমার ছেলেটার জীবন নিল’
কয়েক মাস আগে একটি কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানে হোম ডেলিভারির কাজ নেন তরুণ প্রিয়ন্ত দাস (২২)। প্রতিষ্ঠানের শর্ত ছিল, এ কাজের জন্য তাঁর একটি মোটরসাইকেল লাগবে। ওই সময় ছেলেকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দেন বাবা। সেই মোটরসাইকেলে করে এক সহকর্মীর বাড়িতে বেড়ানো শেষে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার রাতে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জুড়ী-বটুলি শুল্ক স্টেশন সড়কের দক্ষিণ সাগরনাল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রিয়ন্ত দাস পাশের বড়লেখা উপজেলার পানিসাওয়া গ্রামের প্রদীপ দাসের ছেলে। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা সদরে একটি কুরিয়ার সার্ভিসে কাজ করতেন তিনি
পুলিশ ও স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বুধবার প্রিয়ন্তের ছুটি ছিল। এ সুযোগে বন্ধু শোভন দাসকে নিয়ে নিজের মোটরসাইকেলে জুড়ীর ফুলতলা চা-বাগানে এক সহকর্মীর বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে ফেরার সময় রাত আটটার দিকে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেলটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে দুই আরোহী আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে প্রিয়ন্ত মারা যান। অবস্থার অবনতি ঘটায় শোভনকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রিয়ন্তর বাবা প্রদীপ দাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেটা (প্রিয়ন্ত) কলেজে লেখাপড়া করত। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার আগে পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়ে চাকরি খুঁজছিল। আড়াই-তিন মাস আগে বলল, একটা চাকরি মিলেছে, মোটরসাইকেল লাগব। কিনি দিলাম। এই মোটরসাইকেল আমার ছেলেটার জীবন নিল।’
জুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) উস্তার মিয়া বলেন, স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই প্রিয়ন্তের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।