চাকসু নির্বাচনের তারিখ পেছানো নিয়ে যা জানা গেল
Published: 23rd, September 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের সময় পেছানো হয়েছে। পরিবর্তিত তারিখ অনুযায়ী, আগামী ১৫ অক্টোবর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তবে হঠাৎ নির্বাচনের তারিখ পেছোনোর নেপথ্যে ভিন্ন কারণ আছে কি-না সে প্রশ্নও রাখছেন কেউ কেউ। আবার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে দেখছেন অনেকে।
আরো পড়ুন:
জবি সংলগ্ন অবৈধ দোকান উচ্ছেদ
২ দফা দাবিতে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারের কক্ষে তালা
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী নোমান ইবনে মোসলেহ উদ্দিন ফেসবুকে লেখেন, “যেই যুক্তিতে ১২ তারিখের চাকসু নির্বাচন ১৫ তারিখ হলো, সেই যুক্তি তো নির্বাচন কমিশনসহ প্রার্থীরা আগেই জানতেন। তাহলে কেনো এটা একেবারে তফসিলের আগে অথবা পাশ হওয়ার পরপর পেছানো হলো না?”
শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহীম এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “চাকসু নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে।” ঐ পোস্টের কমেন্টে তিনি যুক্ত করে লেখেন “১৫ তারিখ চাকসু এবং ১৬ তারিখ রাকসু।”
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “প্রথমত, পূজার বন্ধ এবং বিসিএস পরীক্ষার শিডিউল আগে থেকেই ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কেন আগেই ১৫ তারিখ না দিয়ে ১২ তারিখ দিয়েছে?”
তিনি বলেন, “পাশাপাশি রাকসু পেছানোর পরপরই চাকসু পেছানো কি একই সূত্রে গাঁথা কিনা? সেই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এছাড়াও অনেকগুলো বিভাগ ইতোমধ্যেই পরীক্ষার পুনঃনির্ধারণ করেছে, সেগুলো আবার পেছাতে হবে।”
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “তিনদিন নির্বাচন পেছানোর বিষয়টিকে আমরা স্বাভাবিকভাবেই দেখছি এবং এটি শিক্ষার্থীবান্ধব মনে করছি। পূজোর বন্ধ থাকায় অনেকে বাড়িতে চলে যাবেন। আবার হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রার্থীরা এ সময়টাতে পূজোতে থাকবেন। সার্বিক বিবেচনায় এটি যথার্থ সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
তবে পূজোর বন্ধের বিষয়টি পূর্বে অবগত থাকার পরও কেন তখন নির্বাচন পেছানোর দাবি তুলেননি- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা তফসিল ঘোষণার সময় বা পরে নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে কিছু জানাইনি। তবে এখন নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই।”
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক ও চাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, “আমরা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি। তবে এজন্য এক সপ্তাহ পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তকে আমরা মেনে নিচ্ছি না। এতে অনেকগুলো বিভাগ সেজনজটে পড়তে পারে।”
শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ও চাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী জশদ জাকির বলেন, “বিষয়টিকে আমরা খুব ইতিবাচকভাবেই দেখেছি। এ ক্যাম্পাসে প্রায় ২ হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী আছেন। এখন তিনদিন পেছানোয় তারা স্বাচ্ছন্দে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।”
তিনি আরো বলেন, “তফসিল ঘোষণার সময় নির্বাচন পেছানোর কথা মৌখিকভাবে বললেও আমাদের সেভাবে বলা হয়নি। কারণ, অনেকে ব্যাশিং করে বলতে পারে যে আমরা চাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র করছি। তবে এ সময়ে এসে নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্তকে আমরা খুব ভালোভাবে নিচ্ছি।”
এ বিষয়ে চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “তবে গতকাল (সোমবার) মতবিনিময় সভায় অধিকাংশ প্রার্থী ও শিক্ষার্থীর দাবি ছিল নির্বাচন কয়েকদিন পেছানোর। শুধু এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচন তিনদিন পেছানো হয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আয়োজনে চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন। আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারতে গিয়েছেন। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে—সংবাদ সম্মেলন করে সরকারকে তা জাতির কাছে পরিষ্কার করতে হবে। জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে ভারতের আধিপত্যবাদকে বাংলার মানুষ এই দেশ থেকে তাড়িয়েছে। ভারতের আধিপত্যবাদ ও বশ্যতা বাংলার মানুষ আর কখনোই গ্রহণ করবে না। এই অন্তর্বর্তী সরকার যদি ভারতের অন্যায় কোনো আবদারে এবং অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতি নতি স্বীকার করতে চায়, তাহলে আপনাদের পরিণতিও শুভ হবে না। জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।’
অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির ফাঁদে পা দিয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘একটি দল সংস্কার চাচ্ছে না। তারা পুরোনো বস্তাপচা নিয়মে নির্বাচন করতে পাঁয়তারা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারও ওই দলের ফাঁদে পা দিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। যদি সংস্কার না হয়, শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। সে জন্য আমরা গণভোটের কথা বলেছি। সরকার গণভোট দেবে বলেছে, কিন্তু প্যাঁচ লাগিয়ে দিয়েছে। সেটা হচ্ছে, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হবে। তাদের বুঝতে হবে, এই দুটো নির্বাচন এক জিনিস নয়। কিন্তু ওই দলটি আলাদা গণভোট চায় না। কারণ, ডাকসু, চাকসু, জাকসু ও রাকসুর নির্বাচনের ফলাফল। জনগণ সংস্কারের পক্ষে। জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি গণভোট হয়, তাহলে শতকরা ৮০ ভাগ লোক আমাদের পক্ষে রায় দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। বিশেষ অতিথি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ শাহজাহান। আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহাব উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, চৌদ্দগ্রাম পৌর আমির মাওলানা মু. ইব্রাহীম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মাদ্রাসাবিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন, কুমিল্লা জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।