চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের সময় পেছানো হয়েছে। পরিবর্তিত তারিখ অনুযায়ী, আগামী ১৫ অক্টোবর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তবে হঠাৎ নির্বাচনের তারিখ পেছোনোর নেপথ্যে ভিন্ন কারণ আছে কি-না সে প্রশ্নও রাখছেন কেউ কেউ। আবার বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে দেখছেন অনেকে।

আরো পড়ুন:

জবি সংলগ্ন অবৈধ দোকান উচ্ছেদ

২ দফা দাবিতে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের  রেজিস্টারের কক্ষে তালা

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী নোমান ইবনে মোসলেহ উদ্দিন ফেসবুকে লেখেন, “যেই যুক্তিতে ১২ তারিখের চাকসু নির্বাচন ১৫ তারিখ হলো, সেই যুক্তি তো নির্বাচন কমিশনসহ প্রার্থীরা আগেই জানতেন। তাহলে কেনো এটা একেবারে তফসিলের আগে অথবা পাশ হওয়ার পরপর পেছানো হলো না?”

শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহীম এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “চাকসু নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে।” ঐ পোস্টের কমেন্টে তিনি যুক্ত করে লেখেন “১৫ তারিখ চাকসু এবং ১৬ তারিখ রাকসু।”

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, “প্রথমত, পূজার বন্ধ এবং বিসিএস পরীক্ষার শিডিউল আগে থেকেই ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কেন আগেই ১৫ তারিখ না দিয়ে ১২ তারিখ দিয়েছে?”

তিনি বলেন, “পাশাপাশি রাকসু পেছানোর পরপরই চাকসু পেছানো কি একই সূত্রে গাঁথা কিনা? সেই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এছাড়াও অনেকগুলো বিভাগ ইতোমধ্যেই পরীক্ষার পুনঃনির্ধারণ করেছে, সেগুলো আবার পেছাতে হবে।”

শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, “তিনদিন নির্বাচন পেছানোর বিষয়টিকে আমরা স্বাভাবিকভাবেই দেখছি এবং এটি শিক্ষার্থীবান্ধব মনে করছি। পূজোর বন্ধ থাকায় অনেকে বাড়িতে চলে যাবেন। আবার হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রার্থীরা এ সময়টাতে পূজোতে থাকবেন। সার্বিক বিবেচনায় এটি যথার্থ সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

তবে পূজোর বন্ধের বিষয়টি পূর্বে অবগত থাকার পরও কেন তখন নির্বাচন পেছানোর দাবি তুলেননি- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা তফসিল ঘোষণার সময় বা পরে নির্বাচন পেছানোর বিষয়ে কিছু জানাইনি। তবে এখন নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই।”

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক ও চাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, “আমরা বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি। তবে এজন্য এক সপ্তাহ পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তকে আমরা মেনে নিচ্ছি না। এতে অনেকগুলো বিভাগ সেজনজটে পড়তে পারে।”

শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ও চাকসুর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী জশদ জাকির বলেন, “বিষয়টিকে আমরা খুব ইতিবাচকভাবেই দেখেছি। এ ক্যাম্পাসে প্রায় ২ হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী আছেন। এখন তিনদিন পেছানোয় তারা স্বাচ্ছন্দে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।”

তিনি আরো বলেন, “তফসিল ঘোষণার সময় নির্বাচন পেছানোর কথা মৌখিকভাবে বললেও আমাদের সেভাবে বলা হয়নি। কারণ, অনেকে ব্যাশিং করে বলতে পারে যে আমরা চাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র করছি। তবে এ সময়ে এসে নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্তকে আমরা খুব ভালোভাবে নিচ্ছি।”

এ বিষয়ে চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড.

মনির উদ্দিন বলেন, “বন্ধের বিষয়টি নিয়ে আমরা পূর্বে অবগত ছিলাম। সবকিছু বিবেচনা করেই ১২ অক্টোবর নির্বাচনের তারিখ দেওয়া হয়েছিল এবং আমরা এ সময়েই নির্বাচন করতে করতে পারতাম। আমাদের কোনোকিছুই গ্যাপ নেই, সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।”

তিনি বলেন, “তবে গতকাল (সোমবার) মতবিনিময় সভায় অধিকাংশ প্রার্থী ও শিক্ষার্থীর দাবি ছিল নির্বাচন কয়েকদিন পেছানোর। শুধু এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচন তিনদিন পেছানো হয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি নেতা এ্যানির বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ইসলামী আন্দোলন, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি

লক্ষ্মীপুরে চরমোনাই পীরের সমালোচনা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির দেওয়া বক্তব্যে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এ্যানির বক্তব্যের জন্য তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে গতকাল সোমবার রাতে বিবৃতি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখা।

ইসলামী আন্দোলন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দেলোয়ার হোসাইন ও সেক্রেটারি জহির উদ্দিনের যৌথ বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন প্রচার ও দাওয়াহবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান। বিবৃতিতে বলা হয়, একটি জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সম্পর্কে বিএনপির নেতা এ্যানি যে অশ্লীল, অশালীন ও মিথ্যা-বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছেন, তা রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত।

ইসলামী আন্দোলনের নেতারা বলেন, মূলত ৫ আগস্টের পর ইসলামপন্থীদের ঐক্য ও এক বাক্সে ভোটের প্রক্রিয়াকে বিএনপি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। নির্বাচনে বিএনপির জন্য একমাত্র বাধা ‘ইসলামী জোট’। এতে তাদের ভরাডুবি জেনে বিএনপি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল ও জাতীয় ব্যক্তিদের নিয়ে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বেইমান তো তারা, যারা শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে।

বিবৃতিতে বিএনপিকে স্বৈরাচারের সঙ্গী বলে দাবি করে বলা হয়, তারা ২০১৮ সালের অবৈধ নির্বাচনকে স্বীকৃতি দিয়ে সংসদে তাদের ছয়জন এমপি পাঠিয়েছে। ২০১৮-এর ডামি নির্বাচনের স্বীকৃতিদানকারী দল হলো বিএনপি। এখন তারা পাগলের মতো আবোলতাবোল বলে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে চাচ্ছে। নিজেদের দোষ আড়াল করার হীন চেষ্টা করছে। পাবলিক সেন্টিমেন্টকে ভিন্ন দিকে ডাইভার্ট করার পাঁয়তারা করছে বিএনপি।

আরও পড়ুনইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতের কড়া সমালোচনায় বিএনপির এ্যানি১৪ ঘণ্টা আগে

বিবৃতিতে এ ছাড়া বিএনপির উদ্দেশে বলা হয়, ‘জাতীয় চাঁদাবাজেরা মিথ্যা ছাড়া কিছু বলতে পারে না। মিথ্যা কথা বলাই এ্যানি চৌধুরীরদের পুঁজি, যা বাংলাদেশের মানুষ এখন বুঝে গেছে। আমরা তার মিথ্যা কথা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাই।’

বিবৃতি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসলামী আন্দোলন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ‘এ্যানির মতো একজন নেতার এ রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য রাজনৈতিক ও সচেতন মহলকে ব্যথিত করেছে। আমরা তাঁকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এর আগে গত সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা আউটডোর স্টেডিয়াম মাঠে সদর পূর্ব বিএনপির প্রতিনিধি সম্মেলনে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামীর কড়া সমালোচনা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। এ সময় তিনি বলেন, চরমোনাই পীর জাতীয় বেইমান ও ভণ্ড। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনে কোনো ভূমিকা ছিল না ইসলামী আন্দোলনের।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যানি বলেন, বিগত ১৭ বছরের ফ্যাসিস্টবিরোধী কোনো আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হাতপাখা বা চরমোনাই পীরের কোনো ভূমিকা ছিল না; বরং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে তাদের সখ্য ছিল। বর্তমানে নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে দলটি। নির্বাচন বিঘ্নিত করতে নানা চক্রান্ত করা হচ্ছে। ইসলামের নামে তারা চক্রান্ত করছে। ষড়যন্ত্র করছে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এসব জাতীয় বেইমানদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।

ওই সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীরও সমালোচনা করে এ্যানি বলেন, ‘তারা ’৮৬ ও ’৯৬ সালে বিভিন্নভাবে শুধু আমাদের অসহযোগিতা করে নাই, পুরো জাতিকে অসহযোগিতা করেছে। হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তাদের সঙ্গে থেকে জাতীয় বেইমান হিসেবে, আত্মস্বীকৃত বেইমান হিসেবে তারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশকে বিপর্যয়ে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে: ইসমাইল জবিউল্লাহ
  • বিএনপি নেতা এ্যানির বক্তব্যে ক্ষুব্ধ ইসলামী আন্দোলন, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি
  • বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়
  • শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় কর্মবিরতি, নেপথ্যে রাকসু বানচালের চেষ্টা
  • ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতের কড়া সমালোচনায় বিএনপির এ্যানি
  • বিসিবির নির্বাচন ৬ অক্টোবর: ষড়যন্ত্র হলে ঘেরাওয়ের হুমকি
  • রাবি শিক্ষকদের ওপর হামলায় চবি শিক্ষক সমাজের নিন্দা